ট্রাম্প-কিমের বৈঠকের ফলাফলে সন্তুষ্ট ভারত, জানেন এর থেকে কী আশা করছে বিদেশ মন্ত্রক
ভারত সিঙ্গাপুরে ট্রাম-কিম মিটিংয়ের ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয় প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের ঐতিহাসিক শীর্ষ সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক থেকে এক বিবৃতি দিয়ে কোরিয় উপদ্বীপে শান্তি ফেরার আশা প্রকাশ করা হয়। ভারত মনে করছে আমেরিকার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সরাসরি যোগাযোগে একদিকে যেমন উত্তর কোরিয়ার ওপর চিনের প্রভাব কিছুটা হলেও কমবে, অপরদিকে পরমাণু ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়া, চিন ও পাকিস্তানের মধ্যেকার পারস্পরিক সংহতির যে অভিযোগ ভারত করেছে, তাও প্রকাশ পাবে।
ভারত উত্তর কোরিয়ার মধ্যে কিন্তু সম্পর্ক মোটের ওপর ভালই। বন্ধু না বলা গেলেও শত্রু বলা যাবে না। গত মাসেই বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি কে সিং উত্তর কোরিয়া সফর করে এসে সেই দেশ কে 'বন্ধুত্বপূর্ণ' বলেছিলেন। অতীতে বিভিন্ন সময় সামরিক থেকে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়াকে সাহায্য করেছে ভারত। বিপদে আপদে একে অপরের পাশেও ছিল। উত্তর কোরিয়ায় খাদ্যসঙ্কটের সময় ভারত যেমন তাদের খাদ্য দিয়ে সহায়তা করেছে, তেমনই ২০০৪-এর ভারত মহাসাগরের ভয়াবহ সুনামির পর উত্তর কোরিয়াও ভারতের ত্রাণ তহবিলে ৩০ হাজার মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে।
তবে সবসময় যে সম্পর্ক ভালই থেকেছে তা নয়, বিরোধও ছিল। ভারতের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, চিনের মাধ্যমে পাকিস্তানকে পরমাণু প্রযুক্তি বিক্রি করে উত্তর কোরিয়া। সে কারণেই কিমের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা নিরীক্ষা চলাকালীন রাষ্ট্র সংঘের তরফে নিষেধাজ্ঞা জারি করা নিয়ে যে ভোটাভুটি হয়েছিল, সেখানে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধেই ভোট দিয়েছিল ভারত। এখন উত্তর কোরিয়া, কোরিয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করতে রাজি হওয়ায় ভারত মনে করছে, যে প্রযুক্তির জোরে পাকিস্তান এতদিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিযোগিতায় ভারতকে টক্কর দিত, তা আর সম্ভব হবে না।
চিনের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক বরাবর ভাল। সিঙ্গাপুর বৈঠকেও চিনের বিমানেই গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট কিম। এই বৈঠকের পরও সে সম্পর্কে ছেদ পড়বে না, তা ভারত ভাল করেই জানে। তবে তারা মনে করছে আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ায় চিনা প্রভাব কিছুটা হলেও কমবে। এই মুহুর্তে দক্ষিণ এশিয়ায় মার্কিনিদের সবচেয়ে বড় মিত্র ভারতই। কাজেই এই বৈঠকের পর ভারত মনে করছে, উত্তর কোরিয়া যদি আস্তে আস্তে মূল স্রোতে ফিরে আসে, সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে বিভিন্ন ইস্যুতে উত্তর কোরিয়াকে পাশে পাওয়া যাবে।