বালাকোট এয়ারস্ট্রাইক সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল, ভারতের প্রশংসায় প্রাক্তন মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা বল্টন
আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মতে বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে ভারতের পদক্ষেপ একদম সঠিক ছিল। জন বল্টনের মতে, যে সময় ঘটনা ঘটেছিল, সেই সময় ভারতের এই পদক্ষেপ আদতে আগ্রাসনের মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য সঠিক পদক্ষেপ ছিল বলে মত।
কী বলেন জন বল্টন?
এই বিষয়ে বল্টন বলেন, 'এই অভিযান হঠাৎ করে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে সক্ষম ছিল। বিশেষ করে পাকিস্তানের দিকে যুদ্ধের সম্ভাবনা প্রহল ছিল। সেই সময় আমেরিকা ভারতের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনার মধ্যে ছিল। ভারত-মার্কিন সম্পর্কেও বেশ কয়েকটি দিক রয়েছে যা আমাদের সুধরাতে হবে।'
অজিত ডোভালের সঙ্গে বল্টনের কথা হয়
এই সময় ভারতীয় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বল্টনের কথা হয়েছিল বলে জানান তিনি। মার্কিন ইন্টেলিজেন্সের রিপোর্টের তথ্যের বিষয়ে খোলসা না করেই বল্টন জানান যে সেই সময় ডোভালের সঙ্গে খুব ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছিল তাঁর। এবং এই পরিস্থিতি পরবর্তী অবস্থা যেভাবে ভারত সামলেছিল তাতে আমরা খুব খুশি ছিলাম। সেই সময় পাকিস্তানের সঙ্গেও আমাদের আলোচনা হয়েছিল।
বালাকোট অভিযান নিয়ে যা বুঝতে পারে পাকিস্তান
আদতে দু'পক্ষই এই হামলা থেকে বুঝতে পেরেছে যে নিজেদের হিসাবে ভুল হতে পারে৷ ভারতীয় সেনাবাহিনী মনে করছে যে, পারমাণবিক অস্ত্র প্রয়োগের চৌকাঠ না ডিঙিয়েই শুধুমাত্র প্রচলিত সেনাশক্তি ও সমরাস্ত্রের সর্বোচ্চ ব্যবহারেই পাকিস্তানের মদতপুষ্ট সন্ত্রাস রুখতে সক্ষম হবে তারা। আর অন্যদিকে, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ভাবছে, পরমাণু অস্ত্রের জুজু দেখিয়েই ভারতকে কোণঠাসা করে রাখতে পারবে তারা, যার ফলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে প্রচলিত সমরাস্ত্র তথা রণকৌশলের ব্যবহারও।
পুলওয়ামা হামলা
২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, বিস্ফোরক-বোঝাই গাড়ি চালিয়ে আসা এক আত্মঘাতী জঙ্গি কাশ্মীরের কাছে পুলওয়ামায় সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের একটি কনভয়ের উপর আক্রমণ চালায়, এই ঘটনায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়। এই হামলার পাল্টা জবাবে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বায়ু সেনা বালাকোটের জইশ-ই-মহম্মদের জঙ্গি শিবিরে আঘাত হানে। বালাকোট পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে অবস্থিত এবং ১৯৭১ সালের পর এই প্রথম পাকিস্তানের মাটিতে বিমান হানা চালায় ভারত।
ভারতীয় সেনার শক্তি প্রদর্শন
সংকটের মুহূর্তে, কোনও দেশের বিশ্বাসযোগ্যতা শুধুমাত্র তার সেনাবাহিনীর আকার দেখে বিচার করা যায় না, বরং তার সঙ্গে এটাও দেখা হয় যে, সেই ক্ষমতার সর্বোচ্চ ব্যবহারের সদিচ্ছা সেই দেশের কতখানি রয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে ভারতের অবস্থান ছিল রক্ষণাত্মক, তার ফলে পাকিস্তান কাশ্মীরে নিত্য ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে গেলেও শাস্তি পাওয়ার হাত থেকে বরাবর অব্যাহতি পেয়ে এসেছে। সেই চিত্র এখন অনেকটাই বদলে গিয়েছে ভারতীয় রাজনীতিতে বর্তমান শাসক দলের সেনাবাহিনীর কার্যক্ষমতাকে সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারের সদিচ্ছা এবং সংকল্প, দুই-ই দেখানোর মাধ্যমে। তাই ভারতে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদত দিয়ে যাওয়ার ধারা আগামী দিনেও বজায় রাখলে পাকিস্তানকে তার ফল ভুগতে হবে।
ভয় পেয়েছিল পাকিস্তান
তাহলে কি আগের তুলনায় অনেকটাই জেদি এবং আগ্রাসী ভারত, যা কোনও সন্ত্রাসী হামলা হলে আগের মতো সহিষ্ণুতা দেখায় না, পাকিস্তানের ব্যবহারে কোনও পরিবর্তন আনতে পারবে? নিঃসন্দেহে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মধ্যে এবার অন্তত এ নিয়ে আত্মবিশ্লেষণ হবেই যে শুধুমাত্র একটি কাশ্মীর ইশুর জন্য গোটা দেশকে বিপদের মুখে ফেলা কতটা যুক্তিযুক্ত হবে? কার্গিল যুদ্ধের পরও একই রকম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তানে।
চিনের 'কাশ্মীর প্ল্যান'-এর জেরে হুরিয়তে চিড়! আইএসআই-বেজিং জোটের 'ড্রিম প্রোজেক্টে' ধাক্কা?