এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে পূর্ণ সদস্য দেশ হিসেবে যোগ দিচ্ছে ভারত, কী হবে স্ট্র্যাটেজি
প্রথমবারের মতো ভারত পূর্ণাঙ্গ সদস্য হিসাবে যোগ দিচ্ছে এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে। নিজেকে প্রাসঙ্গিক করাটাই মূল চ্যালেঞ্জ।
প্রথমবার পূর্ণ সদস্য দেশ হিসেবে কুইংদাও-এ এসসিও-এর সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে ভারত। এই সংগঠনের বাকি সদস্যদের মধ্যে নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে তোলাটাই ভারতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এসসিও-তে নিংসন্দেহে চিনা প্রভাবই বেশি। তাদের সমর্থনে থাকে রাশিয়াও। কাজেই এখানে দাঁত ফোটানোটা ভারতের পক্ষে যথেষ্ট কঠিন।
চিনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত গৌতম বাম্বাওয়ালে জানিয়েছেন, 'এসসিও সদস্যদের ফোকাস রয়েছে নিরাপত্তাগত সহযোগিতা, সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান। আমরা এসব ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেব। ভারত বাকি সদস্য দেশগুলির সঙ্গে এসব ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করবে।'
কিন্তু এসসিও-তে চিন-রাশিয়ায় প্রাধান্য প্রশ্নাতীত। কিন্তু তাদের স্বার্থে এগোলে ভারতের সমস্যা আছে। কারণ সেক্ষেত্রে অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে বিপদে পড়তে পারে ভারত। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় সিরিয়া ইস্যুর কথা। সিরিয়ার বাশার আল আসাদ সরকারকে আমেরিকা ও ইউরোপিয় শক্তিগুলি সরাতে চাইলেও তাঁকে সমর্থন দেয় রাশিয়া ও চিন। একাধিকবার রাষ্ট্রসংঘে ভেটো প্রয়োগ করে আসাদ সরকারকে রক্ষা করেছে এই দুই রাষ্ট্র। গত এপ্রিলে এসসিও দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের এক বৈঠকে আসাদ সরকারকে অনুমোদন দেওয়ার পথে এগোচ্ছিল এসসিও। বৈঠকের নথিতে এ নিয়ে একটি সম্পূর্ণ প্যারাগ্রাফ ছিল। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সে যাত্রা তা বাদ দেওয়াতে সফল হয়েছিল ভারত।
এধরণের বিতর্কিত বিষয়গুলিতে ভারসাম্য রেখে চলাই ভারতের স্ট্র্যাটেজি। কারণ অন্যদিকে আমেরিকা জাপান অস্ট্রেলিয়ার মতো চিন-রাশিয়ার বিরোধী লবির সঙ্গেও অন্য আন্তর্জাতিক জোটেও আছে ভারত। সেই সঙ্গে চিনের অর্থনৈতিক করিডোর গড়ার ক্ষেত্রে ভারত ছাড়া বাকি সব মধ্য এশিয় দেশগুলিই সম্মতি দিয়েছে। কাজেই এই ইস্যুতেও একাই লড়তে হবে ভারতকে। কাজেই এসসিও সামিট ভারতের সামনে যথেষ্ট কঠিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে হাজির হচ্ছে। যে সংগঠনে বিভিন্ন দিক থেকেই ভারত একা।
তাই সংগঠনে পায়ের তলার মাটি পেতে মূল সম্মেলনের পাশাপাশি পুতিন ও জিনপিং দুই রাষ্ট্রনেতার সঙ্গেই দিপাক্ষিক বৈঠক করবেন মোদী। সোচি ও ইউহানে মোদী ঘরোয়া সম্পর্কের যে উষ্ণতা দেখা গিয়েছিল, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াটাই লক্ষ্য। পাশাপাশি বাকি সদস্য দেশগুলির সঙ্গেও দিপাক্ষিক বৈঠকে বসার কথা ভারতের। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও বৈঠক হবে কিনা, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।