কাশ্মীরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রসংঘে রিপোর্ট, কড়া জবাব দিলেও অসহায় দিল্লি
কাশ্মীরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ওএইচসিএইচআর-এর রিপোর্টে ভারত প্রচন্ড ক্ষিপ্ত কিন্তু অসহায়।
প্রথমবারের জন্য কাশ্মীরের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘের হিউম্যান রাইটসস কাউন্সিল। রিপোর্টে নানাভাবে কাশ্মীরে ভারতের বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এর কড়া জবাব দিল ভারত। বিদেশ দপ্তরের মুখপাত্র ওই রিপোর্টকে, প্রতারণামূলক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়ে দিলেও কোনভাবেই রিপোর্টটিকে আটকাতে পারেনি ভারত।
কাশ্মীরে অবস্থিত রাষ্ট্রসংঘের অফিস অব দ্য হাইকমিশনার অব হিউম্যান রাইটস-এর প্রধান জায়েদ রাদ আল হুসেইন এই রিপোর্টে বলেছেন, ভারতের সেনাবাহিনী কাশ্মীরিদের উপর মাত্রাতিরিক্ত জোর জুলুম চালায়। তারা আন্তর্জাতির আইনের বাইরে গিয়ে কাজ করে। তিনি আরও বলেন, 'ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। দেখতে হবে, যেসব অতিরিক্ত জুলুম চালানোর ঘটনা ঘটেছে, তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়।'
এই রিপোর্ট নিয়ে ব্যাপক চটেছে ভারতের কূটনীতিক মহল। বিদেশ দপ্তর একে 'যাচাইহীন তথ্যের সংকলন, ' জন্য কোনও দেশ আবেদন জানায়নি। তবে অফিস অব দ্য হাইকমিশনার অব হিউম্যান রাইটস বা ওএইচসিএইচআর একটি স্বশাসিত সংস্থা, তাই নিজে থেকেই রিপোর্ট পেশ করার ক্ষমতা তাদের আছে। তবে এই রিপোর্ট যে রিপোর্টটি মূলতঃ জায়েদের একার দৃষ্টিভঙ্গীতেই তৈরি, তাতে সন্দেহ নেই। তিনি নিজেই জানিয়েছেন রিপোর্টটি 'দূর পর্যবেক্ষণ'-এর ভিত্তিতে তৈরি। তার ওপর রিপোর্টে পাকিস্তানের সীমান্তের ওপাড় থেকে হামলা চালানোর কথা নেই। লস্করই ই তৈবা বা জইশ ই মহম্মদ-এর মতো আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলিকে বলা হয়েছে 'যোদ্ধা', আর কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদীরা পেয়েছেন নেতার তকমা।
ভারত এই রিপোর্টের বিরুদ্ধে কড়া জবাব দিলেও, কূটনৈতিক দিক থেকে তাদের কিছুই করার নেই। এতদিন ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের কথা বলে এসেছে। এই রিপোর্ট ভারতের সেই অবস্থানকে জোর ধাক্কা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের যে ছবিটা রয়েছে তাতে লেগেছে কালির ছিটে। এমুহূর্তে রাষ্ট্রসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলেও নেই ভারত। তাই কোনও দিক থেকেই রিপোর্টটিকে আটকানো যায়নি। জানা গেছে, রাষ্ট্রসংঘের জেনারেল অ্যাসেম্বলি ও সিকিওরিটি কাউন্সিলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে সেটি। এখন ভারতকে কোনও দেশ প্যাচে ফেলতে চাইলে এই প্রতিবেদন তাদের কাছে অত্যন্ত বড় অস্ত্র হয়ে দাঁড়াবে। কাজেই আগামী দিনে বিভিন্ন দেশে ও আন্ত্রজাতিক সংগঠনে ভারতীয় কূটনীতিকদের কাজ বাড়ল, তা বলাই বাহুল্য।