সীমান্তে শান্তি ফেরাতে ফের কূটনৈতিক পর্যায়ের বৈঠকে ভারত-চিন, আদৌও কি মিলল রফাসূত্র?
জুনে গালওয়ান সেনা সংঘর্ষের পর থেকেই ভারত-চিন দুই দেশের মধ্যে আরও চওড়া হয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ফাটল। প্রশাসনিক ও সামরিক পর্যায়ের একাধিক বৈঠকের পরেও মেলেনি রফাসূত্র। উল্টে পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর আরও আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গেছে চিনকে। যদিও পাল্টা জবাবের জন্যও সদা প্রস্তুত ছিল ভারত। এমতাবস্থায় লাদাখ সমস্যা মেটাতে ফের এদিন বৈঠকে বসলেন দুই দেশের উচ্চপদস্থ কূটনীতিবিদেরা।
সীমান্ত সমস্যা নিয়ে এই ভার্চুয়াল বৈঠকে ভারত-চিন
সূত্রের খবর, এদিন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমেই মূলত চলে এই বৈঠক। ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসাল্টেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশনের আওতাতেই বর্তমানে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে এই ভার্চুয়াল বৈঠক চলে দুই দেশের কূটনীতিবিদদের মধ্যে। এদিকে গত ১০ই সেপ্টেম্বর রাশিয়া সাংহাই কো-অপারেশন সামিটেও ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র মধ্যে লাদাখ সমস্যা সমাধানের বিষয়ে জোরদার আলোচনা হয় বলে জানা যায়। পাঁচ দফা প্রস্তাবের কথাও উঠে আসে।
পাঁচ দফা প্রস্তাব নিয়ে চলে আলোচনা
সূত্রের খবর, এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকেও সেই পাঁচ দফা প্রস্তাব নিয়েও জোরদার আলোচনা চলে ভারত ও চিনের মধ্যে। লাদাখে শান্তি ফিরেয়ে আনতে এই পাঁচটি বিষয়ের বাস্তবায়নের পক্ষে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন দুইদেশের কূটনীতিবিদেরা।এই ক্ষেত্রে আগের অনডড মনোভাব থেকে সরে এসে খানিক সুর নরম করতে দেখা গেছে বেজিংকেও।
কী দাবি জানাচ্ছেন ভারতীয় কূটনীতিকেরা?
এদিকে লাদাখের উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঢাণ্ডা করতে দীর্ঘদিন থেকেই লাদাখ থেকে সেনা সরানোর জন্য চিনকে চাপ দিয়ে আসছে ভারত। শেষে অনেক অনুরোধ উপরোধও করতে দেখা যায়। পরবর্তীতে একাধিক সামরিক পর্যায়ের বৈঠকেও মেলেনি সমাধান সূত্র। ভারতের দাবি ১৯৯৩-৯৬ সালে হওয়া চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে চিনের তরফে। ভারত চায় ওই চুক্তি মেনে লাদাখ থেকে সরে যাক লালফৌজ। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না বলেই দেখা যাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু মস্কোর বিদেশ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের রেশ ধরেই এদিনের বৈঠকে উভয় দেশই ভারত ও চিনের সীমান্ত চুক্তি অনুসরণ করার ক্ষেত্রে ঐক্যমতে পৌঁছেছে বলে জানা যাচ্ছে।
আদৌও কি মিলল রফাসূত্র?
এদিকে এই বৈঠকের পরেই এই একটি বিবৃতি প্রকাশ করতে দেখা যায় চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিনকে। এদিন ভারত-চিন ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসাল্টেশন অ্যান্ড কো-অর্ডিনেশন বা ডাব্লুএমসিসির সীমান্ত বিষয়ক ১৯তম বৈঠক বসল বলেও জানান তিনি। একইসাথে সীমান্ত সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি আগামীতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে বিশ্বের উন্নয়নের অংশীদার হওয়ার ক্ষেত্রেও দুই দেশের কূটনীতিকরা একমত হয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে। যদিও বেজিংয়ের তরফে এই প্রতিশ্রুতি আগে মিললেও বাস্তবক্ষেত্রে তার উল্টোচিত্রই দেখা গেছে। সেকথা ভেবে বর্তমানে সমস্ত সতর্কতা অবলম্বন করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে চাইছে ভারত।