হু প্রধানকে সমর্থন করোনার প্রকৃত উৎস নিয়ে আরও তদন্তের উদ্যোগে সামিল ভারতও
করোনার প্রকৃত উৎস নিয়ে আরও তদন্তের উদ্যোগে সামিল ভারতও
ভারত ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সম্পর্ক যে মধুর তা নিয়ে অবগত সকলে। এমনকী ভারতের টিকাকরণ ও অন্যান্য দেশে ভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে হু প্রধান বারংবারই এই দেশের প্রশংসা করে এসেছেন। এবার ভারতের পালা। চিন থেকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে এই উৎস সম্পর্কে ব্যাপক তদন্তের দাবিতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে বৃহস্পতিবার যোগ দিল ভারতও। ভারত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অতিরিক্ত মিশনের এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, চিনের ল্যাব থেকে ভাইরস আদৌও ছড়িয়েছে কিনা তা নিয়ে আরও তদন্তের দরকার বলে মনে করছে হু। আর এই উদ্যোগে পাশে পেয়েছে ভারতকে।
হু–কে সমর্থন ভারতের
চিনের নাম না নিয়ে ভারত এটা উল্লেখ করেছে যে হু-এর ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রস আধানম ঘেব্রেয়েসাস করোনা ভাইরাসের প্রকৃত উৎস নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বাস্থ্য এজেন্সির রিপোর্টের জন্য যা যা তথ্যের প্রয়োজন, তা দিতে চিন দেরি করছে এবং তা পেতে সমস্যা হওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। হু আরও বলে যে ভবিষ্যতে তদন্তের জন্য এটি আরও সময়োপযোগী এবং ব্যাপক তথ্য ভাগ করে নেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
রিপোর্ট প্রকাশ
হু এবং চিন কোভিড-১৯-এর প্রকৃত উৎস নিয়ে মঙ্গলবারই বহু-প্রতীক্ষিত রিপোর্ট প্রকাশ করে। এই রিপোর্টে চারটে সম্ভাবনার অনুমানের তালিকা দেওযা হয়। রিপোর্টে বলা হয়, সার্স-কোভ-২ ভাইরাস, যার কারণে কোভিড-১৯ হয়, তা সম্ভবত বাদুড় থেকে মানুষের মধ্যে কোনও স্তন্যপায়ী প্রাণীর মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারে। এটার সম্ভাবনা খুবই কম যে এই ভাইরাস ল্যাব থেকে ছড়িয়ে পড়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, 'আমরা একটি যৌথ ও বিশেষজ্ঞের নেতৃত্বাধীন একটি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা ভাগ করেছি যা সমস্ত অংশীদারদের সহযোগিতায় কোভিড-১৯ এর উৎস তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করতে পারে।' তিনি এও বলেন, 'এটি লক্ষণীয় যে হু-এর ডিরেক্টর-জেনারেল পৃথকভাবে গবেষণাটি পরিচালনাকারী দলের জন্য কাঁচা তথ্য সংগ্রহ করতে বিলম্ব এবং অসুবিধার বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। আমরা সম্পূর্ণভাবে ডিরেক্টর-জেনারেলের প্রত্যাশাকে সমর্থন করছি, যিনি এই গবেষণা সময়োপযোগী ও ব্যাপক তথ্য ভাগ করে নেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন।' অতিরিক্ত মিশন নিয়োগের জন্য হু-প্রধানের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত।
গবেষণাগার থেকে ভাইরাস ছড়ায়নি
করোনা ভাইরাসের উৎস নিয়ে তদন্ত করতে গত জানুয়ারিতে চিনের উহানে যায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি বিশেষ দল। মঙ্গলবার তারা একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, কোনও গবেষণাগার থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়নি। পাশাপাশি, এই অভিযোগ উঠেছে যে, তদন্তের গভীরে যেতে যা যা তথ্য এবং সহযোগিতা দরকার চিনের তরফে তেমনটা করা হয়নি। আর তা নিয়েই একটা টানাপোড়েনের আবহ তৈরি হয়েছে। চিনের প্রতি সুর নরম রাখার অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে হু প্রধান বয়ে বেড়াচ্ছিলেন। তিনি নিজেই জানিয়েছেন যে চিনের ল্যাব থেকে কোভিড-১৯ ছড়িয়েছে এই তত্ত্ব প্রমাণের জন্য আরও তদন্তের প্রয়োজন এবং বেজিংকে সে কারণে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে হবে। ল্যাব থেকে ভাইরাস ছড়ানোর তত্ত্ব যদিও চিন ক্রমাগত নাকচ করেছে।
১৪টি দেশ কাঠগড়ায় তুলেছে হু–কে
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের উৎস নিয়ে সব তথ্য দিচ্ছে না চিন, ফলে তদন্তের গভীরে যেতে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। এই অভিযোগ তুলেছে আমেরিকা সহ ১৩টি দেশ। শুধু তাই নয়, হু-কে কাঠগড়ায় তুলে দেশগুলি এও জানিয়েছে যে হু-এর গবেষকদের দল উল্লেখযোগ্যভাবে দেরি করছে এবং সম্পূর্ণ ও প্রকৃত তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করতে গাফিলতি দেখাচ্ছে।
নন্দীগ্রাম নিয়ে মোদী-শাহদের দাবিকে ফুৎকারে ওড়ালেন মমতা, আত্মবিশ্বাসের সুর দিদির কণ্ঠে