শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নজর ভারত ও চিনের, জেনে নিন বিস্তারিত
শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আজ শনিবার ভোট দিচ্ছেন দেশটির ভোটাররা। ১ কোটি ৬০ লাখ ভোটার ৩৫ প্রার্থীর মধ্যে থেকে একজনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবেন। প্রেসিডেন্ট হতে হলে একজন প্রার্থীকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে। আজকের এ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে পাঁচ বছর পর প্রেসিডেন্ট পদে রাজাপক্ষে বংশের প্রত্যাবর্তন ঘটতে পারে। জনমত জরিপ নিষিদ্ধ হলেও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের সূত্রে প্রার্থীদের মধ্যে এগিয়ে রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও বর্তমান সরকারের আবাসন বিষয়ক মন্ত্রী সাজিথ প্রেমাদাসা। এদিকে এই নির্বাচনের উপর নজর রয়েছে চিন ও ভারত দুই দেশেরই।

গোতাবায়া প্রেমদাসা
প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ মাহিন্দা রাজাপক্ষে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর ছোট ভাই গোতাবায়া রাজাপক্ষে তাঁদের দল ফ্রিডম পার্টির শীর্ষ পদে রয়েছেন। তামিল টাইগারদের প্রতিহত করে সমর্থকদের ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তবে যুদ্ধাপরাধ, দুর্নীতি ও চিনকে সমর্থন দিয়ে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এপ্রিল মাসে ইসলামি চরমপন্থীদের হামলায় ২৬৯ জন নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে তিনি দেশের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।

সাজিথ প্রেমাদাসা
এদিকে তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ নিহত প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রানাসিংহে প্রেমাদাসার ছেলে ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) প্রধান সাজিথ প্রেমাদাসা। তিনি দেশবাসীর নিরাপত্তা ও উন্নয়নের পাশাপাশি বিনা মূল্যে আবাসন, শিক্ষার্থীদের পোশাক, গরিব মহিলাদের মধ্যে বিনা মূল্যে স্যানিটারি প্যাড বিতরণের উপরও জোর দিয়েছেন। তাঁর নির্বাচনী সমাবেশে নারীদের উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে।

গোতাবায়া রাজাপক্ষের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধরা
গোতাবায়া রাজাপক্ষের প্রধান টার্গেট সিংহলি বৌদ্ধদের সমর্থন। দেশটির ২ কোটি ২০ লাখ মানুষের ৭০ শতাংশই বৌদ্ধ। সাজিথ প্রেমাদাসার সমর্থন সিংহলিদের মধ্যে কম। তামিল ও মুসলমানদের তরফে তাঁর জন্য সমর্থন বেশি। তাঁরা দুজনই শ্রীলঙ্কার রাজনীতিকে ভারসাম্য রাখতে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও চিন দুই দেশের সঙ্গেই অর্থনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

দিল্লির কপালে চিন্তার ভাঁজ
রাজাপক্ষে ও তাঁর পরিবারকে চিনের ঘনিষ্ঠ হিসেবে ভাবা হয়। তামিলদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযানে চিনের নিরঙ্কুশ সমর্থন পেয়েছিল তৎকালীন রাজাপক্ষে সরকার। গোতাবায়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নিপীড়ন বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি তাঁর নির্বাচনের প্রচারে চিনের প্রভাব ভাবাচ্ছে দিল্লিকে।