২০২০ সালে একাধিক সন্ত্রাসী হানায় কেঁপে উঠল ফ্রান্স! বছরভর মুসলিম বিশ্বের রোষানলে ফরাসি রাষ্ট্রপতি
চলতি বছরেই একাধিকবার ইসলামী সন্ত্রাসের কবলে পড়ছে ফ্রান্স। এমনকী ধর্মীয় স্বাধীনত ও মতপ্রকাশের অধিকার নিয়েও বিতর্কে জড়িয়েছেন খোদ ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো। এমনকী চলতি বছরেই ফের উুঁকি দিয়েছে ফ্রান্সের বিখ্যাত ব্যাঙ্গ পত্রিকা শার্লি এবদোর হজরত মহম্মদের কার্টুন বিতর্ক। যে কারণে গোটা মুসলিম বিশ্বের রোষানলে পড়ে সমগ্র ফ্রান্স।

শঙ্কিত রাষ্ট্রপুঞ্জ
এদিকে চলতি বছরে ফ্রান্সের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক সন্ত্রাসী হামলা প্রসঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জকেও। এমনকী লোন উলফ হামলার ছকে উগ্রপন্থীরা হামলার বাড়বাড়ন্তে শঙ্কিত গোটা বিশ্বই। এদিকে কয়েক মাস আগে পড়ুয়াদের বাক স্বাধীনতার পাঠ দিতে গিয়ে হজরত মহম্মদের একটি ব্যঙ্গচিত্র দেখিয়েছিলেন ফ্রান্সের এক শিক্ষক। এরপর গত ১৬ অক্টোবর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসেই এক শিক্ষকের মাথা কেটে খুন করে এক চেচেন মুসলিম জঙ্গি।

ইসলামিক মৌলবাদ প্রসঙ্গে মুখ খুলে মুসলিম বিশ্বের রোষানলে ফরাসি প্রেসিডেন্ট
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ইসলামিক সন্ত্রাসবাদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সরব হয় প্রায় প্রতিটি দেশের মানুষই। ‘ইসলামিক মৌলবাদ' প্রসঙ্গে প্রকাশ্যে মুখ খোলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। আর ঠিক তখনই ‘ইসলামিক বিচ্ছিন্নতাবাদ' ও ‘ইসলামিক সন্ত্রাসবাদী হামলা'র মতো শব্দবন্ধ প্রয়োগ করে গোটা মুলিম সমাজের রোষানলে পড়েন ম্যাঁক্রো। ডাক ওঠে ফরাসি পণ্য বয়কটেরও। যদিও এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েও সন্ত্রাসবাদ দমনে ফরাসি প্রশাসনের অনমনীয় সিদ্ধান্তের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায় ভারতকে।

২০২০ সালে ও ফিরে আসে ২০১৫ সালের জঙ্গি হামলার স্মৃতি
এদিকে এই সমগ্র ঘটনার হাত ধরেই ফের ফিরে আসে ফ্রান্সের বিখ্যাত ব্যাঙ্গ পত্রিকা শার্লি এবদো বিতর্ক। কারণ ইসলাম ধর্ম প্রচারক হজরত মহম্মগের ওই ব্যাঙ্গচিত্র ২০১৫ সালে প্রথম তাদের তরফেই ছাপা হয়েছিল। এদিকে ওই ঘটনার পরেই ২০১৫ জানুয়ারি মাসে শার্লি অবদোর দফতরে হানা দেয় ইমলামী সন্ত্রাসীদের দল। মারা যান ফ্রান্সের এক বিশিষ্ট কার্টুনিস্ট-সহ ১২ জন প্রাণ হারান। এমতাবস্থায় এবার ২০২০ সালেও ফিরে আসে সেই ঘটনার স্মৃতি।

চলতি বছরেই শার্লি এবদোর পুরনো দফতরের সামনে হামলা জঙ্গিদের
এই বছরের নভেম্বর মাসে শার্লি এবদোর পুরনো দফতরের সামনে হামলা চালায় ইসলামী জঙ্গিরা। এই ঘটনায় দুজন সন্দেভাজবনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উঠে আসে পাকিস্তান যোগও। এমনকী কয়েকমাস আগেই ফ্রান্সের নিস শহরে ঐতিহাসিক নোতরদাম গির্জাতেও হামলা চালায় এক আততায়ী। যা নিয়েও শোরগোল পড়ে যায় আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলে। বিচ্ছিন্ন ভাবে হামলা চলে দেশর আরও একাধিক প্রান্তে।

বন্ধ হতে পারে ৭৬ টি মসজিদের দরজা
এদিকে করোনাকালে ফ্রান্সের সন্ত্রাসবাদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে আগেই জরুরি বৈঠক ডাকে রাষ্ট্রপুঞ্জ। ইতিমধ্যেই বিচ্ছিন্নতাবাদ ও মৌলবাদী কাজকর্মে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে ফ্রান্সের বিভিন্ন প্রান্তে ৭৬টি মসজিদের উপর নজর রাখা হচ্ছে বলে খবর। সরকারি নির্দেশ মিললেই যে কোনও মুহূর্তেই সেগুলির দরজা বন্ধ হতে পারে বলে খবর। এমনকী একাধিক সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত থাকা ও ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে ইতিমধ্যেই ৬৬ জন বিদেশি নাগরিককে দেশ থেকে বহিষ্কার ম্যাক্রোঁর সরকার।
ফিরে দেখা ২০২০: মদ্যপান থেকে লিভ ইন নিয়ে ইউএই সরকারের ঐতিহাসিক পদক্ষেপ