স্বাধীনতা সংগ্রাম আবার শুরু, আস্থা ভোটে হারার পর ইমরান খানের প্রথম প্রতিক্রিয়া
স্বাধীনতা সংগ্রাম আবার শুরু, আস্থা ভোটে হারার পর ইমরান খানের প্রথম প্রতিক্রিয়া
অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোটাভুটির সময় পাকিস্তান জাতীয় সংসদের ১৭৪ জন সদস্য তার বিপক্ষে মত দিয়েছিলেন। আস্থা অর্জনে পর্যুদস্ত হয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ক্ষমতা হারান। তারপর থেকেই বিপর্যস্ত ইমরান খানকে দেখা যায়নি প্রকাশ্যে, তিনি কোনও প্রতিক্রিয়াও দেননি। স্বভাবতই শুরু হয়েছিল অন্তর্ধানের জল্পনা। তবে সেই জল্পনার অবসান ঘটল অবশেষে।
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী আস্থায় হারার পর প্রথম প্রতিক্রিয়া জানালেন টুইটারে। ইমরান খান টুইটারে লেখেন, "পাকিস্তান ১৯৪৭ সালে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে ওঠে। কিন্তু শাসন পরিবর্তনের বিদেশী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আজ আবার শুরু হল স্বাধীনতা সংগ্রাম। দেশের জনগণই সর্বদা তাদের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষা করে, আবারও তা প্রমাণিত হবে।"
ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা ইমরান খান পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি অনাস্থা ভোটে হেরে পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট সর্বসম্মতিক্রমে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে। ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরি সেই রায়কে তা প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট অনাস্থা ভোট বাধ্যতামূলক করে। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় শনিবার রাত ১২টার মধ্যে ভোটাভুটি না হলে কড়া অবস্থান নেবে। এমনকী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারকে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হতে পারে বলে জানানো হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ইমরান খানের বিদায়ের সঙ্গে স্পষ্ট হয়ে গেল বিরোধী দলের নেতা এবং পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন (পিএমএল-এন)-এর সভাপতি শেহবাজ শরিফের দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য জাতীয় সংসদে দফায় দফায় বৈঠক হয়। এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
Pakistan became an independent state in 1947; but the freedom struggle begins again today against a foreign conspiracy of regime change. It is always the people of the country who defend their sovereignty & democracy.
— Imran Khan (@ImranKhanPTI) April 10, 2022
অনাস্থা ভোট স্থগিত রেখে পাকিস্তানে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে পিটিশন দায়ের করেছিল ইমরান খানের দল। এরপর ইমরান খানকে গ্রেফতারের দাবি জানান বিরোধী দলনেত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ। সুপ্রিম কোর্টের অবমাননার অভিযোগ এনে এই দাবি করেন বিরোধী দলনেত্রী। আর সুপ্রিম কোর্টও চটজলদি ব্যবস্থা নেয়। সাফ জানিয়ে দেয়, রাত ১২টার মধ্যে অনাস্থা ভোট না করালে গ্রেফতার হতে পারেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
সুপ্রিমকোর্টের অবমাননার দায়ে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গ্রেফতার হতে পারেন- এই সম্ভাবনার কথা জানিয়ে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি ১২টায় সুপ্রিম কোর্টের দরজা খোলার সিদ্ধান্ত নেন। কারণ জাতীয় সংসদের স্পিকার আসাদ কায়সার এখনও প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট দেওয়ার অনুমতি দেননি। শেষে ভোটাভুটি হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ সংখ্যা ইমরানের বিরুদ্ধে ছিল। ফলে গদি খোয়াতে হয় ইমরানকে। তারপর প্রথম বার্তায় ফের স্বাধীনতার লড়াই জিতে ফিরে আসার অঙ্গীকার তাঁর দৃপ্ত কণ্ঠে।