ইমরান খানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে পুলিশ, বিরোধীদের আন্দোলনে চরমে রাজনৈতিক অস্থিরতা
চরমে উঠেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। এরই মাঝে পাকিস্তানে তৈরি হয়েছে গৃহযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। এই অবস্থায় গত দুই বছরে সব থেকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেনার সমর্থন এখনও বজায় থাকলেও জনগণ এবং বিরোধীদের চাপের ফাঁস যে ক্রমেই ঘিরে ধরছে ইমরান খানকে, তা বুঝতে বাকি নেই কারোর।

পুলিশ প্রধানকে অপহরণ পাক সেনার
পাকিস্তানি প্যারামিলিটারি ফোর্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা নাকি সিন্ধ প্রদেশের পুলিশ প্রধান আইজি মুশতাক আহমেদ মাহারকে অপহরণ করে। এতেই আরও ঘনীভূত হয় সেদেশের গৃহযুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। তবে এই সংঘাতের নেপথ্যে রয়েছে ইমরান খানকে সমর্থন করা এবং তাঁর বিরোধিতা করা।

সেনার সমর্থনেই ইমরান খান পাকিস্তানের গদিতে বসেন
মূলত পাকিস্তানের সেনার সমর্থনেই ইমরান খান পাকিস্তানের গদিতে বসেন। এদিকে পাক গণতন্ত্রে সেনার হস্তক্ষেপের বিরোধিতায় সরব বিরোধী দলগুলি। এই মর্মে ইতিমধ্যেই সেদেশের বিরোধী দলগুলি এক বিশাল জোট গড়ে ইমরান খানের বিরোধিতায় সরব হয়েছে। তবে এই বিরোধী সুরকে দমাতে চাইছে সেনা।

করাচিতে সেনা-পুলিশ দ্বন্দ্ব
এই পরিস্থিতিতেই সিন্ধ প্রদেশের করাচিতে কয়েকদিন আগে একটি ইমরান খান বিরোধী মিছিল বের করা হয়েছিল বিরোধীদের তরফে। সেই মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়াম নাওয়াজের স্বামী সফদর। এই কারণে সফদরকে গ্রেফতার করার জন্য সিন্ধ পুলিশের আইজিকে নির্দেশ দেয় সেনা। তবে পুলিশ বিরোধী এই নেতাকে গ্রেফতার না করতে চাওয়াতে সেনা-পুলিশ দ্বন্দ্ব সামনে এসে পড়ে। এমনকি সেনা-পুলিশ সংঘর্ষে ১০ পুলিশ কর্মী মারা যান বলে দাবি করা হয়। এদিকে পাক সেনার প্রতি নিজেদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে টুইট করে সিন্ধ পুলিশ।

ইমরান পুলিশের উপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারিয়েছেন
বিষয়টি হল, পাকিস্তানে বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে ইমরান খান দেশের পুলিশের উপর নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছেন। এদিকে সেনা এখনও ইমরান খানকে সমর্থন জানালেও বিরোধীদের সঙ্গে কোনও সমাধান সূত্রে পৌঁছাতে পারছে না তারা। এর জেরে বিরোধীদের আন্দোলন আরও জোরদার হয়ে পড়ছে। এই অবস্থায় পুলিশ আধিকারিকরা বিরোধী নেতাদের প্রতি নিজেদের সমর্থন জানাচ্ছেন।

ইমরানের বিরুদ্ধে ১১টি বিরোধী দল একটি জোট গঠন করে
ইমরানকে হঠাতে পাকিস্তানের সেদেশের ১১টি বিরোধী দল একটি জোট গঠন করে। পাকিস্তানি ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট বা পিডিএম নামক ওই জোটে সামিল হয়েছেন সেদেশের প্রায় সমস্ত বিরোধী দলগুলি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে আগামী কয়েক মাসের জন্য তিন পর্যায়ে আন্দোলনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন তাঁরা।

সেনাপ্রধানের হস্তক্ষেপেও বরফ গলেনি
এহেন পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া এবং আইএসআই প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফৈজ হামেদ সম্প্রতি সেদেশের বিরোধী দলগুলির প্রধান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন বলে খবর পাওয়া যায় কয়েকদিন আগে। আর এরপরই জল্পনা শুরু হয়ে যায়। তবে এরপরও কোনও সমাধান সূত্র তো বের হয়নি, বরং দ্বন্দ্ব বেড়েছে আরও কয়েক গুণ।

'অল আউট' আক্রমণে বিরোধীরা
এদিকে মঙ্গলবার এক জনসভায় নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম জানান, তাঁরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নন। বাহিনীর মাথায় বসে যে সব আধিকারিক ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সরব তাঁরা। আদতে মরিয়ম নাম না করে ইমরান খানকে সমর্থন করা সেনাপ্রধান বাজওয়াকে নিশানা করেন। এরপরই মরিয়মের স্বামীকে গ্রেফতার করে পাক রেঞ্জার্স। পরে অবশ্য জামিনে মুক্তি পান তিনি।
লাদাখে চিনা আগ্রাসন প্রতিহত করতে তাইওয়ানে ঘুঁটি সাজাচ্ছে ভারত