আমেরিকায় হামলাকারী আল কায়েদা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেয় পাক সেনা ও আইএসআই, স্বীকারোক্তি ইমরানের
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পদে বসার পর এটাই বোধহয় ইমরান খানের সর্ববৃহৎ স্বীকারোক্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভা সম্মেলনে উপলক্ষে গিয়ে পাকিস্তান যে সন্ত্রাসবাদীদের পীঠস্থান তা নিজের মুখে স্বীকার করে বসলেন ইমরান। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দেশে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিমান হামলার আগে আল কায়েদা জঙ্গিদের পাকিস্তানি আইএসআই ও সেদেশের সেনা প্রশিক্ষণ দিয়েছিল।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস'-এর একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে ইমরান বলেন, আল কায়েদা জঙ্গিদের পাকিস্তানি সেনা ও আইএসআই হামলার আগে ট্রেনিং দিয়েছিল। তাঁর কথায়, এখন সরকার নীতি বদলে ফেলেছে। তবে সেনা সেই নীতি মানতে বারবার অস্বীকার করে। অর্থাৎ ঘুরিয়ে তিনি সেনার ঘাড়ে দোষ চাপিয়েছেন।
আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ সেনা পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে একটি নির্জন জায়গায় খুঁজে বের করে তাকে নিকেশ করে। এর আগে গত জুলাইয়ে ইমরান জানিয়েছিলেন, লাদেনের পাকিস্তানে থাকার কথা সেদেশের সরকার জানত। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ইমরান বলেছেন, সেই সময় একটি তদন্ত হয়েছিল। তবে পাকিস্তানি সেনা ও আইএসআই এতে জড়িত ছিল সেটা স্পষ্ট ছিল। তাই সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিমান হামলার পরে নীতির বদল ঘটালেও সেনা তা মানতে চায়নি।
আল কায়েদা জঙ্গি ওসামা বিন লাদেন যে পাকিস্তানে ছিল সেটা এর আগে ইমরান খান একটি বক্তৃতায় স্বীকার করেছেন। এদিন ফের স্বীকার করলেন। তাঁর যুক্তি ছিল, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-কে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই লাদেনের পাকিস্তানে উপস্থিত থাকার কথা জানায়। সেই সূত্র ধরেই আমেরিকার লাদেনকে নিকেশ করতে পেরেছিল।
প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প মোদীর সঙ্গে হিউস্টনের অনুষ্ঠানে ইসলামিক সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করার ডাক দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে দেশের জঙ্গিদের মাথায় ছাতা ধরে ইমরান বলেছেন, বিশ্ব নেতারা বুঝতে পারবেন না কেন পাকিস্তানে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে। আশির দশকে মার্কিন য়ুক্তরাষ্ট্র সোভিয়েতের বিরুদ্ধে জেহাদ করার জন্য পাকিস্তানিদের কাজে লাগিয়েছিল। সেই সময় মার্কিন রাষ্ট্রপতি রোনাল্ড রেগনও জেহাদকে প্রশংসা করেছিলেন। এছাড়া ইমরান ট্রাম্পকে পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, তালিবানদের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে না বসে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ভুল করেছেন। এব্যাপারে দেখা হলেই তিনি ট্রাম্পকে বোঝানোর চেষ্টা করবেন বলেও পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন।