
২০০ কিমিরও বেশি গতিতে আছড়ে পড়বে হারিকেন ইদা! চার নম্বর ক্যাটাগরির ঝড় আখ্যা
হারিকেন ইদা চার নম্বর ক্যাটাগরির ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলে গতি বাড়িয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১৩০ মাইল বেগে ধেয়ে আসছে চলেছে আমেরিকার গালফ উপকূলের দিকে। উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় তার গতিবেগ আরও বেড়ে হতে পারে ১৪০ মাইল বা ২২৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। সেই কারণেই আমেরিকার উপকূলবর্তী অঞ্চলে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
Recommended Video


২২৫ কিলোমিটারের ঊর্ধ্বে পৌঁছে যাবে হারিকেন ইদার গতি
গালউ উপকূলের আইডার উত্তর দিকে লুসিয়ানা হয়ে উপসাগরীয় উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে হারিকেন ইদা। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আছড়ে পড়ার আগে ঝড়ের গতি বৃদ্ধি পাবে আরও। তখনই তার গতিবেগে ২২৫ কিলোমিটারের ঊর্ধ্বে পৌঁছে যাবে। ঝড়ের গতিবেগ এতটাই তীব্রতর হবে যে, ঝড় আছড়ে পড়ার পর আরও বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চলবে।

কোথায় আছড়ে পড়তে পারে শক্তিশালী হারিকেন ইদা
কোথায় সাম্প্রতিক উপগ্রহ চিত্রের উপর ভিত্তি করে দেখা গিয়েছে, হারিকেন ইদা আরও শক্তিশালী হবে। ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) শনিবার সন্ধ্যায় জানিয়েছিল, ইদা একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক হারিকেন হতে পারে। সেই পূর্বাভাসই সত্যি হতে চলেছে। রবিবার বিকেল বা সন্ধ্যায় ঝড়টি আছড়ে পড়তে পারে। এর ফলে প্রবল ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।

লুসিয়ানার তৃতীয় হারিকেন হিসেবে ল্যান্ডফল করবে ইদা
লুসিয়ানার ইন্ট্রাকোস্টাল সিটি থেকে পার্ল নদীর মুখ পর্যন্ত একটি হারিকেন সতর্কতা কার্যকর রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইদা আরও শক্তি বাড়িয়ে ধেয়ে আসছে। এনএইচসি জানিয়েছে, যদি ইডা পূর্বাভাস অনুযায়ী লুসিয়ানাতে আছড়ে পড়ে, তবে এটি গত আগস্ট থেকে চতুর্থ হারিকেন হবে এবং লুসিয়ানার তৃতীয় হারিকেন ল্যান্ডফল করবে।

১৬ বছর আগে হারিকেন ক্যাটরিনার পর হারিকেন ইদা
১৬ বছর আগে হারিকেন ক্যাটরিনার প্রভাবে ওই অঞ্চলে ১৮০০-রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। নিউ অরলিয়ানের অফিস অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড ইমার্জেন্সি প্রিপার্ডনেসের পরিচালক কলিন আর্নল্ড শনিবার বলেন, "২৯ অগাস্ট ফের ইতিহাস ফিরে আসছে। ১৬ বছর আগে যা ঘটেছিল, তা অনেকেরই মনে আছে। আবার একই ঘটনার পুনাবৃত্তি হতে চলেছে।

লুসিয়ানায় ২০২০ সালে দুটি বড় হারিকেনের ক্ষত এখনও সারেনি
লুসিয়ানা ২০২০ সালে দুটি বড় হারিকেন হয়ে গিয়েছে। এবার আরও একটি হারিকেন ধেয়ে আসছে। লুসিয়ানায় ২০২০ সালে দুটি বড় হারিকেনের ক্ষত এখনও সেরে ওঠেনি। এখন আরেকটি হারিকেন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। রাজ্যজুড়ে প্রশাসন জনগণকে সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। আর্নল্ড মানুষকে কমপক্ষে তিনদিনের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য এবং জলের মজুত করার আহ্বান জানান।

ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারের বেশি গতি, লুসিয়ানায় ক্ষতির আশঙ্কা
নিউ অরলিয়ানের ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের বিবৃতি অনুসারে, ঝড়ের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারের বেশি গতি থাকায় দক্ষিণ-পূর্ব লুসিয়ানার কিছু অংশকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলতে পারে। ভবনগুলির কাঠামোগত ক্ষতি হতে পারে, বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে, সে বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এমনকী বৃষ্টি ও বন্যার কারণে রাস্তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে, সেতু ভেঙে যেতে পারে।

১৫ ফুট উঁচু ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে উপকূলে
ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, ভয়ঙ্কর হারিকেন ইদার হানায় আটলান্টিক মহাসাগর ও তৎসংলগ্ন উপসাগর উত্তাল হয়ে উঠতে পারে। এই মর্মে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে মার্কিন প্রশাসনকে। সতর্কতায় বলা হয়েছে, সমুদ্রের জলস্তর ১৫ ফুট পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। ফলে উপকূলবর্তী এলাকায় প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সেই কারণে লুসিয়ানায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।

১৮৫০ সালের পর সব থেকে বড় হারিকেন ইদা
লুসিয়ানার গভর্নর জন বেল এডওয়ার্ডস আরও জানিয়েছেন, ১৮৫০ সালের পর থেকে যত বিধ্বংসী ঝড় হয়েছে, তার মধ্যে হারিকেন ইদা সবথেকে শক্তিশালী হতে পারে। হারিকেন ইদা এমনই শক্তি সঞ্চয় করছে যে, সম্ভবত এমন ঝড় আগে আছড়ে পড়েনি। তাই হারিকেন ইদা নিয়ে বাড়তি সতর্কতা জারি করতে হয়েছে।

হারিকেন-মোকাবিলায় কড়া বার্তা জো বাইডেনের
হারিকেন ইদার মোকাবিলায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, উপকূলবর্তী যে অঞ্চলে হারিকেন আছড়ে পড়তে পারে, সেখানে শতাধিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিপর্যস্ত এলাকায় ত্রাণ পাঠানোর জন্য খাবার, জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রস্তুতিও নিয়েছে আমেরিকা। এলাকার মানুষকে আশ্রয় দিতে ত্রাণ শিবির তৈরি করা হয়েছে। কোভিড বিধি মেনেই ত্রাণ শিবিরে স্থান দেওয়া হচ্ছে মানুষকে।