কাশ্মীর ইস্যুতে ইমরানের মুখ খোলার আগেই বন্ধ করে দিলেন মোদী, মস্ত চালে 'ক্লিন বোল্ড' পাকিস্তান
কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। এই বছরের অগাস্ট মাসে জম্মু-কাশ্মীরে সাত দশক ধরে চলে আসা ৩৭০ ধারা তুলে দিয়েছে ভারত সরকার।
কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে। এই বছরের অগাস্ট মাসে জম্মু-কাশ্মীরে স্বাধীনতার পর সাত দশক ধরে চলে আসা সংবিধানের ৩৭০ ধারা তুলে দিয়েছে ভারত সরকার। যে ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। পাকিস্তান বহুদিন ধরেই কাশ্মীরকে অশান্ত করে ভারতের গোল বাঁধানোর চেষ্টা করছে। এই ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পরে পাকিস্তান যেন আরও বেশি করে পিছনে পড়ে গিয়েছে। এবং এই ঘটনাকে সামনে রেখে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরব হচ্ছে।
পাকিস্তানের কাশ্মীর নিয়ে দাবি
পাকিস্তানের দাবি কাশ্মীরে বসবাসকারী মুসলমানদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে মোদী সরকার। তাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। যে ঘটনা পাকিস্তান একটি ইসলামিক দেশ হিসেবে মানতে পারে না। এজন্য বিশ্বের বিভিন্ন সংগঠনের কাছে সাহায্য চেয়েছে পাকিস্তান। তবে ঘটনা হল, কাশ্মীর প্রশ্নে পাকিস্তান কোনও দেশকে বা সংগঠনকে পাশে পায়নি।
সমর্থন নেই কোনও দেশের
এই অবস্থায় রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিলে পাকিস্তান কাশ্মীর ইস্যুতে সরব হয়েছে। তবে সেখানেও সমর্থনের বদলে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে ভারতকে সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই অবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে হতে চলা রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ফের একবার কাশ্মীর ইস্যুকে সামনে রেখে ভারতকে আক্রমণের রাস্তা বেছে নিয়েছিলেন।
ইমরানের দাবি
ইমরান খান বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বারবার দাবি করেছেন, তিনি পাকিস্তানে গত বছর প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসার পর থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে উদ্যত হন। বিভিন্ন বিরোধকে সরিয়ে রেখে ভারত-পাকিস্তান যাতে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ককে স্বাভাবিক করে নেয়, ইমরান খান নাকি তার চেষ্টা করেছেন। তবে তাঁর এই উদ্যোগকে দুর্বলতা ভেবে মোদী সরকার পাকিস্তানের ঘাড়ে চেপে বসতে চেয়েছে।
ভারতের সঙ্গে আলোচনা চায় না পাকিস্তান
ইমরানের দাবি, পাকিস্তানের প্রস্তাব সত্ত্বেও ভারত কোনওরকম আলোচনার রাস্তায় না হেঁটে দু'দেশের সম্পর্ককে আরও জটিল করে দিচ্ছে। এবং এই অবস্থায় কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর পাকিস্তান মনে করছে এখন আর ভারতের সঙ্গে আলোচনা করার মতো পরিবেশ নেই।
ইমরানের চাল ফ্লপ
ইমরান খান রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় কাশ্মীর নিয়ে সরব হবেন, তার আগেই হিউস্টনে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পাশে নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিলেন। নাম না করে ট্রাম্পের সমর্থন আদায় করে মোদী ফের একবার বিশ্বের সামনে জানিয়ে দিলেন কীভাবে পাকিস্তান বারবার সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন দিয়ে চলেছে।
মোদীর পাল্টা চাল
এই প্রসঙ্গে তিনি আমেরিকায় বিমান হামলা ও মুম্বইয়ের জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ টেনে দুটিকে মিলিয়ে দেন। এবং স্পষ্ট জানান, দুই হামলার অপরাধীরাই পাকিস্তানের মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে বসে ছিল। যার ফলে ফের একবার সারা বিশ্বের সামনে বার্তা গেল, এই পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষক।
বিপাকে ইমরান
ইমরান ভেবেছিলেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ভারতকে কাশ্মীর ইস্যুতে আক্রমণ করবেন। তবে তারও আগে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে সেখানে ফের একবার কাশ্মীর ইস্যুকে খুঁচিয়ে তুলবেন। এর আগে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে ইমরান কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। যা শুনে ট্রাম্প বলে বসেন, চাইলে মধ্যস্থতা করতে পারেন। এবং ইমরান ভারতকে চাপে ফেলতে সে প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।
কী করবেন এবার ইমরান
এবারও সেরকম মতলব নিয়েই ইমরান ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতেন। তবে তার আগে মাস্টারস্ট্রোক দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ইমরানের সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের আগেই সারা বিশ্বের সামনে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দিলেন। এর ফলে ইমরান খান বৈঠক করে যে বক্তব্যই রাখবেন, তার আর ততোধিক গুরুত্ব থাকবে না।
ভারতকে জব্দ করতে গিয়ে কোণঠাসা পাকিস্তান
বরং এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, কাশ্মীর ইস্যুতে ইমরান যা বলছেন তার আগে তার সরকার নিজের দেশের মাটিতে লুকিয়ে থাকা বা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ানো সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিয়েছে। দাউদ ইব্রাহিম থেকে শুরু করে হাফিজ সঈদ - এরা সকলেই ভারতের বিরুদ্ধে নাশকতা ছড়ানোর কাজে লিপ্ত ছিল। এদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান কি ব্যবস্থা নিয়েছে, এই প্রশ্ন উঠবে। যার ফলে যে ভাবনা নিয়ে ভারতকে কোণঠাসা করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গিয়েছিলেন ইমরান, সেই আশা অন্তত এই দফায় পূরণ হবে বলে মনে হচ্ছে না। কারণ নরেন্দ্র মোদীর একটি মাস্টারস্ট্রোক ইমরানের সমস্ত আশায় জল ঢেলে দিয়েছে।