পাঁচ দশক ধরে অথর্ব শরীর ও সতেজ মন নিয়ে লড়াই চালিয়েছেন হকিং
অক্সফোর্ডে ভর্তি হতে গিয়ে গণিত বিষয় হিসাবে না থাকায় পদার্থবিদ্যা নিয়ে ভর্তি হন হকিং। আর সেটাই বদলে দেয় তাঁর জীবন এবং আধুনিক পদার্থবিদ্যার ভবিষ্যৎ। তবে সারাজীবন শরীর নিয়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন হকিং।
ছোটবেলায় ক্লাসের সবচেয়ে ভালো ছাত্র ছিলেন তেমন নয়। পড়াশোনা করতেন নিজের মতো করে। স্কুলের শিক্ষকরা তাও ধরে নিয়েছিলেন স্টিফেন উইলিয়াম হকিংয়ের মধ্যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এই ছেলে বড় হয়ে জগতে নাম করবে। বাবা ফ্রাঙ্ক হকিং চেয়েছিলেন ছেলে ডাক্তার হোক। গণিত নিয়ে ভর্তি হবেন জেনে ভেবেছিলেন ভবিষ্যতে ছেলে কিছু করতে পারবে না। অক্সফোর্ডে ভর্তি হতে গিয়ে গণিত বিষয় হিসাবে না থাকায় পদার্থবিদ্যা নিয়ে ভর্তি হন হকিং। আর সেটাই বদলে দেয় তাঁর জীবন এবং আধুনিক পদার্থবিদ্যার ভবিষ্যৎ। তবে সারাজীবন শরীর নিয়ে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন হকিং। [আরও পড়ুন : বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের জীবনী একনজরে]
রোগের শুরু
শরীর সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেয় যৌবনেই। বয়স কুড়ি পেরতে না পেরতেই জটিল রোগে আক্রান্ত হন হকিং। তিনি তখন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যায় গবেষণা করছেন। মাঝেমধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়তেন সেইসময়ে। বহু পরীক্ষার পর জানা গেল তিনি মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। স্নায়ুর এই রোগ হকিংয়ে ধীরে ধীরে অবশ করে চলেছে।
ডাক্তারদের ভবিষ্যদ্বাণী
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, হকিং বেশিদিন বাঁচবেন না। এই রোগ হলে রোগী খুব বেশি হলে ২-৩ বছর বা সর্বাধিক পাঁচ বছর বাঁচে। যদিও চিকিৎসকদের বাণী মিথ্যা করে তারপরের সাড়ে পাঁচ দশক হকিং জীবনযুদ্ধ চালিয়ে গিয়েছেন।
এই অবস্থাতেই সাফল্য
বলা ভালো জীবনের সব বড় কাজ, গবেষণা ও সাফল্য হকিং শেষ করেছেন রোগগ্রস্ত অবস্থাতেই। কৃষ্ণগহ্বরের তত্ত্বের দিক নির্দেশ থেকে দু'বার বিয়ে, সবই হকিং সেরেছেন অসুস্থ শরীর নিয়েই।
দ্বিতীয়বার মৃত্যুকে জয়
১৯৬২ সালের দুই দশক পরে ১৯৮৫ সালে হকিং ফের এক মারণ রোগে আক্রান্ত হন। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হকিংয়ের কষ্ট দেখে চিকিৎসকেরা লাইফ সাপোর্ট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কোমায় চলে গিয়েছিলেন হকিং। সেখান থেকে ফের লড়াই করে ফেরেন। এযেন দ্বিতীয়বার সরাসরি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা।