For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

মুদ্রাস্ফীতি কী? অর্থনীতিতে এর কেমন প্রভাব পড়ে?

  • By Bbc Bengali

মুদ্রাস্ফীতি
Getty Images
মুদ্রাস্ফীতি

কোভিড মহামারী থেকে বিশ্ব এখন বেরিয়ে এলেও অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব এখনও বিরাজমান। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ যেন আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করেছে। এসব কারণে তীব্র জ্বালানি সংকট, খাদ্য সরবরাহ কমে যাওয়া, উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির মতো সমস্যা এবং এর ফলে মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় । যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও।

মুদ্রাস্ফীতি কী?

মূল্যস্ফীতি অর্থনীতির একটি স্বাভাবিক চিত্র হলেও বড় ধরণের মুদ্রাস্ফীতিকে অর্থনীতির জন্য অভিঘাত হিসেবে দেখা হয়। মুদ্রাস্ফীতি বলতে বোঝায় পণ্য ও সেবার দাম বেড়ে যাওয়াকে। যা সাধারণত ঘটে অতিরিক্ত মুদ্রা সরবরাহের কারণে।

সহজ ভাষায় বললে, একটি দেশের বাজারে পণ্যের মজুদ এবং মুদ্রার পরিমাণের মধ্যে ভারসাম্য থাকতে হয়। যদি পণ্যের তুলনায় মুদ্রার সরবরাহ অনেক বেড়ে যায় অর্থাৎ দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক অতিরিক্ত মাত্রায় টাকা ছাপায় তখনই মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।

এর ফলে একই পরিমাণ পণ্য কিনতে আপনাকে আগের চাইতে বেশি মুদ্রা খরচ করতে হবে। এর মানে জিনিষপত্রের দাম বেড়ে যাবে। সব মিলিয়ে ওই মুদ্রার মান বা ক্রয়ক্ষমতা কমে যাবে।

ধরুন, গত বছর ২০ কেজি চাল কিনতে আপনার খরচ হতো ১০০০ টাকা। কিন্তু চলতি বছর সেই একই পরিমাণ চাল কিনতে আপনার খরচ পড়ছে ১০৫০ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে ৫০ টাকা বা ৫% বেশি টাকা লাগছে। এই ৫% হল মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ। এর মানে টাকার মানও ৫% কমে গিয়েছে।

এভাবে একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন পণ্য ও সেবার দামের পরিবর্তন হিসাব করে মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপ করা হয়।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মুদ্রাস্ফীতি যদি ওই দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম থাকে তাহলে সেটার তেমন নেতিবাচক প্রভাব থাকে না।

সাধারণত ২ থেকে ৫ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি থাকলে সেটাকে সহনীয় বলা যায়। ৭ থেকে ১০ শতাংশ হলে মধ্য ও নিম্নবিত্ত আয়ের মানুষের কষ্ট বেড়ে যাবে। এবং এর চাইতে বেশি মুদ্রাস্ফীতি পুরো দেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তবে এটা নির্ভর করছে সেই দেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার ওপর।

তবে হাতে গোনা কয়েকটি পণ্য ও সেবার মূল্য বাড়লেই সেটাকে মুদ্রাস্ফীতি বলা যাবে না। যদি সামগ্রিকভাবে পণ্য ও সেবার মূল্য বাড়ে তাহলেই বুঝতে হবে মুদ্রাস্ফীতির কারণে এমন হয়েছে।

দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়।
Getty Images
দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়।

মুদ্রাস্ফীতি কেন ঘটে

মুদ্রাস্ফীতির প্রধান কারণ হল মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে যাওয়া। এছাড়া আরও কিছু কারণ রয়েছে।

  • প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধ

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যুদ্ধের কারণে পণ্যের উৎপাদন ও সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয় ফলে সংকট দেখা দেয়, যার প্রভাব দামে গিয়ে পড়ে। এছাড়া যুদ্ধে লিপ্ত রাষ্ট্রগুলো যুদ্ধে বিনিয়োগের জন্য প্রচুর অর্থ ছাপিয়ে থাকে, সেটাও মুদ্রার সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়।

  • পণ্য ও সেবা সরবরাহ

বাজারে যদি কোন পণ্য ও সেবার চাহিদা বেড়ে যায় এবং সে অনুযায়ী সরবরাহ না থাকে, তখন দাম বেড়ে যায়। আবার কোনও জিনিস তৈরি করতে যে সামগ্রী লাগে তার দাম বাড়লেও মূল পণ্যের দাম বেড়ে যায়। আবার যদি একটি দেশের জনসংখ্যা অনুপাতে পণ্য ও সেবা সরবরাহ পর্যাপ্ত না থাকলেও দামে এর প্রভাব পড়ে। দেশের অর্থনীতি প্রবলভাবে নির্ভরশীল জ্বালানি তেলের ওপর। কারণ যেকোনো পণ্য গ্রাহকের কাছে পৌঁছায় পেট্রোল বা ডিজেলে চালিত যানবাহনের মাধ্যমে। ফলে এই তেলের দামের প্রভাব সব পণ্যের ওপরেই কমবেশি পড়ে। সম্প্রতি ইউক্রেনে যুদ্ধ পরিস্থিতির একটা বড় প্রভাব পড়েছে জ্বালানি তেলের ওপর।

  • মুদ্রানীতি

সরকার যদি বিভিন্ন কারণে বেশি করে মুদ্রা ছাপাতে শুরু করে, এতে বাজারে মুদ্রার আধিক্য দেখা যায় অথচ জিনিসপত্রের যোগান না বাড়ায় পণ্য ও সেবার দাম বেড়ে যায়।

মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়।
Getty Images
মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়।

  • রাজস্ব নীতি

একটি দেশের সরকার সাধারণত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে খরচ করার জন্য বৈদেশিক ঋণ নিয়ে থাকে এবং সেই মুদ্রা যখন দেশের বাজারে আসে অথচ অন্যদিকে পণ্যের সরবরাহ আগের মতোই থাকে। তখন সেটার প্রভাবেও মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।

  • উন্নয়নমূলক কাজ

সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে যদি প্রচুর অর্থ ব্যয় করে এবং সে অনুপাতে যদি পণ্যের যোগান না বাড়ে তাহলে মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়।

  • সুদ

ব্যাংকগুলো সুদের হার কমিয়ে দিলে, মানুষ প্রচুর ঋণ নিতে শুরু করে। এতে বাজারে মুদ্রার সরবরাহ বেড়ে যায়। এতে মুদ্রাস্ফীতি ঘটে।

  • ভর্তুকি

সরকার বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভর্তুকি দিলে কিংবা সরকার খরচ বাড়ালে সেই টাকা জনগণের পকেটে আসে। এর প্রভাবে জিনিষপত্রের দাম বেড়ে যায়।

  • মজুরি

মজুরি বা বেতন বৃদ্ধিও মুদ্রাস্ফীতির বড় কারণ। সাধারণত মানুষের হাতে অতিরিক্ত অর্থ চলে আসলে তাদের পণ্য ও সেবার চাহিদা বাড়ে।

খরচে লাগাম টেনে ধরেন অনেকেই।
Getty Images
খরচে লাগাম টেনে ধরেন অনেকেই।

মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উপায় কী

মুদ্রাস্ফীতির প্রধান কারণই হল অর্থের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া। সুতরাং অর্থের পরিমাণ কমালে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ফাহমিদা খাতুন। এক্ষেত্রে তিনি দেশের মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতিতে পরিবর্তন আনার কথা বলেছেন।

  • মুদ্রানীতি

বাজারে অতিরিক্ত মুদ্রার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে হারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দেয় সেই ব্যাংক হার বাড়াতে পারে। এতে অন্য ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়িয়ে দেবে। ফলে নাগরিকরা ঋণ নেয়ার হার কমবে। এতে বাজারে যে অতিরিক্ত টাকা এসেছিল তা ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজারে সরকারি ঋণপত্র বিক্রি করে কিংবা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য নগদ জমার অনুপাত বা সংরক্ষণ বাড়িয়ে দিয়ে ব্যাংক সৃষ্ট অর্থের পরিমাণ কমাতে চেষ্টা করে। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ দেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ আসে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এভাবে আরও নানা উপায় ব্যাংক সৃষ্ট ঋণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।

  • রাজস্ব নীতি

সরকার কর বাড়িয়ে দিলে কিংবা নতুন নতুন কর আরোপ করলে মানুষের ব্যয়যোগ্য আয়ের পরিমাণ কমে যাবে। ফলে বাজারে আসা অতিরিক্ত মুদ্রা বেরিয়ে যাবে। এছাড়া সরকার বিভিন্ন অনুৎপাদনশীল খাতে খরচ কমিয়ে অন্যদিকে বাজারে চাহিদা মতো পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে উৎপাদনশীল খাতে ভর্তুকি বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

মুদ্রাস্ফীতির সময় বাজারে দ্রব্যের যোগান বাড়াতে আমদানির পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে। এতে মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমতে পারে। এ জন্য মুদ্রাস্ফীতির সময় সরকার আমদানি শুল্ক কমাতে পারে।

দ্রব্যমূল্য
Getty Images
দ্রব্যমূল্য

মুদ্রাস্ফীতি প্রভাব

মুদ্রাস্ফীতির প্রভাবে সমাজের এক শ্রেণীর মানুষ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হন তেমনি আরেক শ্রেণী লাভের মুখ দেখেন।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন মুদ্রাস্ফীতির সবচেয়ে বিরূপ প্রভাব পড়ে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর। তবে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরিস্থিতি লাঘবে তৎপর হলে পরিস্থিতি খুব দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব বলে তারা মনে করছেন। সাধারণত কয়েকটি খাত এই মুদ্রাস্ফীতির কারণে ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হয়।

  • জীবনযাত্রার মান

মুদ্রাস্ফীতির সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়ে মানুষের জীবনযাত্রার মানে। বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষের ব্যাপক টানাপড়েনে পড়তে হয়। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় অনেকেই তাদের খরচের লাগাম টেনে ধরতে বাধ্য হন। তবে ব্যবসায়ী ও উৎপাদকগোষ্ঠী এর প্রভাবে লাভবান হয়ে থাবেন।

  • স্থির ও পরিবর্তনশীল আয়

কেউ যদি এমন কোন চাকরি করেন যেখানে বছর শেষে ইনক্রিমেন্ট বা বেতন বাড়ে না কিংবা বেতন বাড়লেও মুদ্রাস্ফীতির হারের তুলনায় কম তারা সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন। কারণ এতে তাদের প্রকৃত আয়ে পণ্য ও সেবা কেনার ক্ষমতা কমে যায়। এছাড়া পেনশন, ব্যাংক হিসাব বা সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর নির্ভরশীল স্থির আয়ের মানুষরাও ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে পরিবর্তনশীল আয়ের ওপর নির্ভরশীল যারা যেমন ব্যবসায়ী, শেয়ারে বিনিয়োগকারী তারা লাভবান হয়ে থাকেন। কারণ মুদ্রাস্ফীতির কারণে অনেক কোম্পানির মুনাফার পরিমাণ বাড়ে ফলে তারা বেশি হারে মুনাফা বা লভ্যাংশ পান।

  • ঋণ

মুদ্রাস্ফীতি চলাকালীন ঋণগ্রহীতারা লাভবান হলেও ঋণদাতার ক্ষতিগ্রস্ত হন। যেমন: গত বছর 'ক' তার বন্ধু 'খ'-কে ১০০টাকা ঋণ দেয়। পরের বছর মুদ্রাস্ফীতি হল ৫% তাহলে সেই ১০০ টাকার মূল্য দাঁড়াবে ৯৫ টাকায়। তাই 'ক’ পরের বছর 'খ'-কে অর্থ ফেরত দিলেও সেটার ক্রয়ক্ষমতা ৫ টাকা কমে যায়।

হিসাব
Getty Images
হিসাব

  • আমদানি রপ্তানি

মুদ্রাস্ফীতির ফলে মুদ্রার মূল্য কমে যায়। সেই কারণে ওই দেশে উৎপন্ন পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি পায়। কিন্তু রপ্তানির মূল্যের কোন বদল হয় না। যেমন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে গত বছর ১০০ ডলারে ৫টি পণ্য নিতে পারতো। কিন্তু টাকার মান পড়ে যাওয়ায় তারা ওই ১০০ ডলার দিয়ে ৬টি বা ৭টি পণ্য কিনতে পারবে। ফলে তারা বেশি বেশি পণ্য কিনবে।

অন্যদিকে মুদ্রার মান পড়ে যাওয়ায় অন্য দেশ থেকে আমদানি কমে যায়। কারণ ওই একই জিনিষ কিনতে আগের চাইতে বেশি খরচ করতে হয়। এতে আমদানি নির্ভর দেশগুলোর ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা থাকে।

  • উৎপাদন ও কর্মসংস্থান

মুদ্রাস্ফীতির ফলে কাঁচামালের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় সামগ্রিক উৎপাদন খরচের ওপর এর প্রভাব পড়ে। ফলে জিনিষপত্রের দাম বেড়ে যায়। এমন অবস্থায় উৎপাদন কমার আশঙ্কা দেখা দেয়। উৎপাদন কমে গেলে অনেকের কর্মসংস্থান হারানোর আশঙ্কা থাকে।

  • গোপন মজুদ

বাজারে মুদ্রাস্ফীতি অব্যাহত থাকে অসাধু ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎপাদন না বাড়িয়ে গোপনে পণ্য মজুদের প্রবণতা দেখা যায়। অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের জন্যই তারা বাজারে এমন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে রাখে। যার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষদের ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়।

বাজারে পণ্য ও সেবার দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ, চাহিদামত রাখার ওপর জোর দিয়েছেন মিস খাতুন।

এজন্য তিনি অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট যেন বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারে সে ব্যাপারে সরকারকে সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।

এক্ষেত্রে সরকার পণ্যসামগ্রী ও সেবার সর্বোচ্চ দামের সীমা বেঁধে দিতে পারে।

মুদ্রাস্ফীতি অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখলেও কোন দেশের জন্যই অতিরিক্ত ও দীর্ঘমেয়াদে মুদ্রাস্ফীতি ভালো ফল বয়ে আনেনি। তাই মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংককে তৎপর থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।

English summary
How inflation affects Economy
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X