কীভাবে করোনা সংক্রমণ আটকাবে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন! জীবাণুরোধী অস্ত্রের বিষয়ে জানুন বিশদে
মারণ সংক্রমণ করোনায় জর্জরিত গোটা বিশ্ব। এই পরিস্থিতি থেকে ততদিন নিস্তার পাওয়া যাবে না, যতদিন না এই ভাইরাসের কোনও ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে। আর এর ফলে একাধিক দেশএ ইতিমধ্যেই সেই কাজে লেগে পরেছে। এদেরর মধ্যে অন্যতম হল ইংল্যান্ড। সেখানের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে জানুয়ারি থেকেই করোনা রোধী ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। অক্সফোর্ডের সঙ্গে এই ভ্যাকসিন তৈরির কাজ করছে অ্যাস্ট্রা জেনকা।
অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ্যে
এরই মাঝে অক্সফোর্ডের বহু প্রতিক্ষিত করোনা ভ্যাকসিন সম্পর্কে প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ্যে চলে এসেছে। এই ভ্যাকসিন রোগ প্রতিরোধে উপযুক্ত ওষুধ। করোনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এই ভ্যাকসিনে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে ChAdOx1 nCoV-19 বা AZD1222 নামক ভ্যাকসিন সাফল্যের ক্ষেত্রে শুধু প্রথম ধাপ পেরিয়েছে। এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগে মানবদেহে একটি টি-সেল গঠিত হবে যা করোনা ভাইরাসকে 'মনে' রেখে পরবর্তীতে সংক্রমণের ক্ষেত্রে সেই জীবাণুকে আক্রমণ করে তা ছড়িয়ে পড়া থেকে প্রতিহত করবে।
কীভাবে কাজ করবে অক্সফোর্ডের এই ভ্যাকসিন
যে ওষুধ তৈরি করা হচ্ছে, তা সরাসরি গিয়ে এই ভাইরাস বা এনজাইমের ওপর কাজ করবে। শুধু করোনা ভাইরাসই নয়, এই ধরনের ড্রাগ বা ওষুধ হৃদরোগ, আর্থারাইটিস, স্ট্রোক, ক্যান্সারের মতো রোগেরও উত্তর হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। করোনার উত্তর রয়েছে ওই ৬টি ড্রাগ কম্পাউন্ডের মধ্যে। এটি চিনের ক্যানসিনো বায়োলজিকসের তৈরি প্রতিষেধকের খুব কাছাকাছি। এছাড়া আমেরিকার জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি প্রিষেধকটিরও এই অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনের সঙ্গে অনেকটা মিল রয়েছে।
সিম্পাঞ্জির দেহের অ্যাডিনোভাইরাসের থেকে তৈরি
জানা গিয়েছে, করোনা ভাইরাসের জেনেটিক তথ্যধারী আরএনএ-কে একটি কমন ভাইরাসে ইঞ্জেক্ট করে করোনা ভাইরাসের একটি নকল তৈরি করা হয়। সিম্পাঞ্জির দেহের অ্যাডিনোভাইরাসের থেকে তা তৈরি হয়। এটা এরপর মোডিফাই করে শরীরে ইঞ্জেক্ট করা হয়। কমন ভাইরাস ভেক্টর বা বাহক হিসাবে কাজ করে। সেটাই শরীরে এই মডিফাইড ভাইরাসটিকে অ্যান্টিবডিতে পরিণত করে। অ্যাডেনোভাইরাল ভ্যাকসিন ভেক্টর ও সার্স-কভ-২ ভাইরাল স্ট্রেনের স্পাইক প্রোটিনকে কাজে লাগিয়ে এই ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ শুরু হতেই কাজে লাগে অক্সফোর্ড
সারা বিশ্বের অন্য গবেষকদের মতো অক্সফোর্ডের গবেষকেরাও কোভিড ১৯ -এর অ্যান্টিবায়োটিক তৈরিতে কাজে লেগে পড়েছিলেন বহু আগে। ১০ জানুয়ারি থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিনের কাজ শুরু করেছে অক্সফোর্ডও জেন্না। মার্চেই প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়েরই কাজ চলছে বর্তমানে।
করোনা রোধী হিরো কারা?
করোনারোধী এই ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও গবেষনার নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক-বিজ্ঞানী সারা গিলবার্ট। যিনি ইবোলা মহামারী প্রতিরোধকারী ভ্যাকসিন তৈরির দিশা দেখিয়েছিলেন। এছাড়া রয়েছেন অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড, টেরেসা লাম্বে, অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান হিল ও ড স্যান্ডি ডগলাস।