For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

বাংলাদেশে মধু চাষে লাখ লাখ টাকা আয়ের হাতছানি

বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে মধুর চাষ অনেক বেড়েছে। মধু সংগ্রহের পেশায় চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ কাজ করে। বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু জেলা থেকে বেশি মধু আহরণ করা যায়। তবে কম-বেশি সব জেলাতেই সে সুযোগ আছে।

  • By Bbc Bengali

মধু
Getty Images
মধু

শরিয়তপুরের মধু ব্যবসায়ী আনোয়ার সর্দারের পরিবার গত ৮০ বছর ধরে বংশ পরম্পরায় এই ব্যবসা করে যাচ্ছেন। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছর যাবত তারা বাণিজ্যিক-ভিত্তিতে মধু চাষ করছেন।

বাক্সে করে মৌমাছি নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়ে মধু সংগ্রহ করে আনোয়ার সর্দারের দল। প্রতি বছর আনোয়ার সর্দার গড়ে ১৫০ মন মধু সংগ্রহ করেন।

একশো চল্লিশটি বাক্স নিয়ে আনোয়ার সর্দারের দল বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়ায়।

"একেকটা বাক্সে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার পোকা থাকে। যেগুলো ডাবল বক্স সেখানে এক লাখ পোকা থাকে," জানালেন আনোয়ার সর্দার।

এর প্রতি কেজি কমপক্ষে ৪০০ টাকা হলে বাজারমূল্য দাঁড়ায় চব্বিশ লাখ টাকা।

আনোয়ার সর্দারের মতোই বাণিজ্যিক-ভিত্তিতে মধু চাষ করেন চুয়াডাঙ্গার বাসিন্দা সোহেল আবদুল্লাহ।

তিনি জানালেন, মধু সংগ্রহের জন্য এখন তার ২৮০টি বাক্স আছে।

"এটা অবশ্যই প্রফিটেবল বিজনেস," বলেন মি. আবদুল্লাহ।

তিনি জানান, চলতি বছর তিনি সব মিলিয়ে ৭০ মনের মতো মধু সংগ্রহ করতে পেরেছেন।

প্রতি মন মধু ৮,০০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন জেলায় গিয়ে থাকা, পরিবহন এবং খাবার খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আরো পড়তে পারেন:

লাভজনক ব্যবসা

বাংলাদেশে মধু চাষ নিয়ে গবেষণা করেছেন চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাবীব উল্লাহ।

তিনি বলেন, মুরগী যেমন চাষ করা হয়, তেমনি এটা মৌমাছির ফার্ম। তাদের জন্য ঘর বানিয়ে দেয়া হয়। মৌমাছিরা সেখানে থাকে।

"মৌমাছির খাবার যেখানে পাওয়া যায়। এ বাক্সগুলো সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে সরিষার মাঠ হতে পারে, লিচুর বাগান হতে পারে," বলেন মি. হাবীব উল্লাহ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে মধুর চাষ অনেক বেড়েছে। মধু সংগ্রহের পেশায় চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ কাজ করে। বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষ করলে এটা পেশা হিসেবে নেয়া সম্ভব।

"আমার একজন মৌ চাষি বাৎসরিক ২০০ মন মধু সংগ্রহ করতে পারে," বলেন মি. হাবীব উল্লাহ।

মধুর কেজি গড়ে ৪০০ টাকা ধরলে এর বিক্রয়মূল্য দাঁড়ায় প্রায় ৩২ লাখ টাকা।

মধু
Getty Images
মধু

কীভাবে মধু সংগ্রহ হয়?

মধু চাষিরা সাধারণত ছয়মাস দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে মধু সংগ্রহ করেন। বাকি ছয় মাস মৌমাছিদের খাবার দিয়ে লালন-পালন করে।

সোহেল আবদুল্লাহ জানান, বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কিছু জেলা থেকে বেশি মধু আহরণ করা যায়। তবে কম-বেশি সব জেলাতেই সে সুযোগ আছে।

তিনি ফরিদপুর, মাগুরা, কুষ্টিয়া, ঈশ্বরদী এলাকায় মধু সংগ্রহ করেন।

প্রথম মধু আহরণ করা হয় সরিষা ফুল থেকে শীতের শুরুতে। পৌষ মাস থেকে মাঘ মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত এসময় মধু চাষিরা অবস্থান করে সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, টাঙ্গাইল এবং মানিকগঞ্জে।

মাঘ মাসের ১৫ তারিখের পরে মধু চাষিরা চলে যায় মাদারীপুর, শরিয়তপুর, ফরিদপুর জেলায়। সেখানে ধনিয়া এবং কালো জিরার ফুল আসে। দেড় মাস তারা এসব এলাকায় অবস্থান করে।

এরপর চাষিরা তাদের বাক্স নিয়ে চলে ঈশ্বরদী, নাটোর, রাজশাহী, দিনাজপুর এবং উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। সেখানে তখন লিচুর ফুল আসে। সেখান থেকে মধু আহরণ করে মৌমাছি। লিচু ফুলের মধু সংগ্রহ করা হয় চৈত্র মাসে।

লিচু ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করা শেষ হলে চাষিরা চলে যায় সুন্দরবনে। সেখান থেকে খলিসা ফুলসহ বিভিন্ন ধরণের মধু সংগ্রহ করা হয়।

"এখন আমাদের সব বাক্স সুন্দরবনে," বলেন মধু ব্যবসায়ী আনোয়ার সর্দার।

বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর:

এক স্থান থেকে যাতায়াত করা বেশ কষ্টসাধ্য।

"যখন সন্ধ্যা হয় তখন আমরা ট্রাকে করে রওনা দিই। বাক্সে ছোট একটা ছিদ্র আছে। সে ছিদ্র আমরা বন্ধ করে দিই। এজন্য রাতারাতি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যেতে হয়।"

সকালে গন্তব্যে পৌঁছানোর পর মৌমাছি ছেড়ে দেয়া হয়।

সবচেয়ে বেশি মধু আসে সরিষা ফুল থেকে। এককটি বক্সে প্রায় ৩০ কেজির মতো মধু হয়। এরপর বেশি মধু আসে লিচু ফুল থেকে।

তবে সবচেয়ে দামি মধু হচ্ছে কালোজিরা এবং সুন্দরবনের মধু।

মধু
Getty Images
মধু

আবহাওয়া একটি বড় বিষয়

ব্যবসায়ী ও কৃষিবিদরা বলছেন, মধু সংগ্রহের সাথে আবহাওয়াগত ব্যাপার আছে। যখন ফুল আসে তখন বৃষ্টি হলে মধু সংগ্রহ করা যায় না।

কৃষিবিদ হাবীব উল্লাহ বলেন, যখন ফুল আসে তখন বৃষ্টি হলে মধু সংগ্রহ করা যায় না।

একই কথা জানালেন মধু চাষী সোহেল আবদুল্লাহ।

তিনি বলেন, চলতি বছর সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য তিনি বাক্স নিয়ে ফরিদপুর- মাগুরা অঞ্চলে গিয়েছিলেন। আশা করেছিলেন সেখান থেকে ৬০ থেকে ১২০ মন মধু সংগ্রহ করা যাবে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।

"আমরা মাত্র ১০ মনের মতো মধু পেয়েছি," বলেন মি. আবদুল্লাহ।

আরো পড়ুন:

English summary
Honey farming is a source of income of lakhs of rupees in Bangladesh
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X