বাবা কলকাতার, 'মিস জাপান' হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রিয়াঙ্কা!
টোকিও, ৬ সেপ্টেম্বর : বর্ণবিদ্বেষকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে 'মিস জাপান' খেতাব জিতে নিলেন ভারতীয় বংশোদভূত ২২ বছর বয়সী প্রিয়াঙ্কা ইয়োশিকাওয়া। তাঁর বাবা কলকাতার বাসিন্দা ছিলেন। মা একজন জাপানি।
জাপানে প্রতিবছর সুন্দরী প্রতিযোগিতা জিতে আসত শ্বেতাঙ্গ জাপানি সুন্দীরাই। অন্য বর্ণের বা সংকর বর্ণের কেউ তা কোনওদিনই পায়নি। তবে গতবছর কৃষ্ণাঙ্গ আরিয়ানা মিয়ামোতো মিস ইউনিভার্স জাপান খেতাব জেতার পর থেকেই সারা দেশে হইচই শুরু হয়।
একদলের ব্যাখ্যা ছিল, শ্বেতাঙ্গ ছাড়া অন্য কোনও বর্ণের বা মিশ্র বর্ণের কারও এই খেতাব পাওয়ার অধিকার নেই। শুধুমাত্র খাঁটি জাপানিরাই এই খেতাব পাওয়ার যোগ্য। কোনও 'হাফু' (জাপানি ভাষায় এর অর্থ মিশ্র বা সংকর বর্ণের কেউ) এই খেতাব পেতে পারে না।
তবে আরিয়ানার খেতাব পাওয়া প্রিয়াঙ্কার সাহস অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছিল। কারণ বর্ণবিদ্বেষের কারণে জাপানে প্রতি পদে অসহনীয় অপমান সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। প্রিয়াঙ্কা জানিয়েছেন, আমি জাপানি। কিন্তু তবুও আমার বিশুদ্ধতা নিয়ে আমাকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। আমার বাবা ভারতীয়। এবং তার জন্য আমি গর্বিত। তবে তার মানে এই নয় যে আমি জাপানি নই।
প্রিয়াঙ্কা মাত্র ১০ বছর বয়সে জাপানে আসেন। তার আগে একবছর ভারতেও কাটিয়ে গিয়েছেন। তবে তখন থেকেই প্রতি পদে বর্ণবিদ্বেষের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। কোনও শ্বেতাঙ্গ তাঁকে ছুঁলেও মনে করত কোনও নোংরা ছুঁয়েছে। এমন ঘটনাই তাঁকে মানসিকভাবে আরও শক্ত করেছে বলে খেতাব জিতে জানিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার দাদু স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ে মহাত্মা গান্ধীকে ২ সপ্তাহের জন্য নিজের বাড়িতে ঠাঁই দিয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। পরে প্রিয়াঙ্কার বাবা জাপানি মহিলাকে বিয়ে করে সেদেশেরই বাসিন্দা হয়ে গিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, ৫ ফুট ৮ ইঞ্চির প্রিয়াঙ্কা আগামী ডিসেম্বরে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হতে চলা 'মিস ওয়ার্ল্ড' প্রতিযোগিতাতেও জাপানের প্রতিনিধিত্ব করবেন। ২০২০ সালের টোকিও অলিম্পিকের কথা মাথায় রেখে জাপান সরকার বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য নানাবিধ চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রিয়াঙ্কার কেতাব পাওয়া সেই গতিকেই তরান্বিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে।