
দেউলিয়া পাকিস্তান হাফিজ সইদকে গ্রেফতার করে কোন 'ফায়দা' লুঠতে চাইছে ! দিল্লির ইঙ্গিত কোনদিকে
২০০৮ সালের ২৬/১১ এর ভয়াবহ যন্ত্রণার স্মৃতি গোটা দেশের মানুষের মনে এখনও দগদগে ঘায়ের মতো। মুম্বইয়ের সেই হামলায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে একযোগে। আর এই রক্তপাতের নেপথ্যে ছিল পাকিস্তানের দাগী জঙ্গি হাফিজ সইদ। যার বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতার প্রমাণ দেওয়া সত্ত্বেও ভারতের বার্তায় আমল দেয়নি পাাকিস্তান। বারবার 'বন্দি' আর 'মুক্তি'র মধ্যে হাফিজকে রেখে কূটনৈতিক চাল চেলেছে ইমরানের দেশ। এবার সামনেই FATF এর বৈঠক। আর তার আগে ইমরানের দেশের আদালত হাফিজকে ১১ বছরের জন্য জেলবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছে। কেন এমন নির্দেশ আচমকা? দিল্লি স্পষ্ট করে দিয়েছে ইঙ্গিত।

ভারতের তরফে বার্তা
দিল্লি সূত্রের দাবি, বহুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোণঠাসা পাকিস্তানের উপর হাফিজকে নিয়ে চাপ ছিল। এই বিশ্বসন্ত্রাসবাদীকে নিয়ে পাকিস্তান কড়া পদক্ষেপ নিলেই যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাদের ফায়দা , তা বোঝাতে ভোলেনি ভারত। সন্ত্রাসে হাফিজের সংগঠন যে আর্থিক মদত দিচ্ছে , তা নিয়েই আন্তর্জাতিক চাপ পাকিস্তানের উপর পড়ছিল। ভারতের দাবি, বহুদিন ধরেই পাকিস্তানের ফর এই চাপ ছিল। যাতে তারা সন্ত্রাস খতম করে দেশ থেকে।

পাকিস্তান কোন ফায়দা তুলতে চায়?
মূলত FATF এর বৈঠকের ঠিক আগেই জঙ্গি হাফিজকে জেলে পোরার মতো ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে FATF এর ধূসর তালিকা থেকে বেরিয়ে আসতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। মূলত, আন্তর্জাতিক আর্থিক বিষয়ে নজরদারি সংস্থা FATF। আর তাদেরই রিপোর্ট বলছে , পাকিস্তান সরাসরিভাবে সন্ত্রাসে আর্থিক মদত দিচ্ছে। আর তার জেরেই পাকিস্তানকে FATF এর ধূসর তালিকায় রাখা হয়েছিল।

কেন এত তাড়াতাড়ি হাফিজকে নিয়ে সিদ্ধান্ত?
মূলত, দেউলিয়া পাকিস্তানের কাছে এই মুহূর্তে অর্থ নেই। একটা সময়ে সরকারি বিভিন্ন অব্যবহৃত সম্পত্তি নিলামে তুলেও সেদেশের সরকার সরকারি সিন্দুক ভরার চেষ্টা করেছে। এমন অবস্থায় FATF এর ধূসর তালিকায় পাকিস্তান থাকবে কি না, তা নিয়ে FATF এর একটি বৈঠক ফেব্রুয়ারিতেই হতে চলেছে। আর তার জেরেই ইমরান সরকার চরম দ্রুততার সঙ্গে হাফিজকে জেলবন্দি করেছে।

ভারতের তরফে চাপ আরও বাড়ানো হল পাকিস্তানের উপর!
হাফিজকে নিয়ে ইসলামাবাদের পদক্ষেপ ঘিরে কড়া নজর রয়েছে দিল্লির। দিল্লির দাবি,FATF এর বৈঠকের আগে শুধু হাফিজকে ১১ বছরের জন্য কারাবন্দি করেই পাকিস্তান ক্ষান্ত থাকে, নাকি আরও সন্ত্রাসবাদীদের কারাবন্দি করে তার দিকে নজর থাকবে দিল্লির। পাশাপাশি, সন্ত্রাস নিয়ে শুধুমাত্র লোক দেখানো পদক্ষেপই কি ইমরানের দেশের মূল উদ্দেশ্য , নাকি সন্ত্রাসকে সমূলে বিনাশ করতে চায় পাকিস্তানের তেহরিক-এ-ইনসাফ এর সরকার সেদিকে নজর রাখছে ভারত।

কোণঠাসা পাকিস্তান
এদিকে, হাফিজকে নিয়ে যখন ইমরান সরকার বিশ্বের কাছে নিজের স্বচ্ছ্ব ভাবমূর্তি প্রকাশে ব্যস্ত, তখন ঘরে বিরোধীদের তোপের মুখে ইমরান খান। পাকিস্তানের সেনার ঘেরাটোপ থেকে সদ্য পালিয়েছে কুখ্যাত জঙ্গি এহসানউল্লাহ। আর FATF এর বৈঠকের আগে এমন ঘটনা যে ইসলামাবাদের নাক কাটাতে পারে, তা নিয়ে ইমরান সরকারকে খোঁচা দিতে ছাড়ছেনা সেদেশের বিরোধীরা।