চুল কেটে ট্রাকের সঙ্গে বেঁধে কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ
২০১৬ সালে প্রায় বছরজুড়েই শিশুদের ওপর নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনা ছিল আলোচনায়। কয়েকটিতে কর্তৃপক্ষ তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়েছে। এবার রাজশাহীতে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশের ঢাকায় কয়েকটি দৈনিকে প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মাটিতে বসা এক কিশোরের চুল কেটে দিচ্ছে একজন।
মুখ নামিয়ে রাখা ছেলেটির ডান হাতটি সাদা রঙ এর মোটা দড়ি দিয়ে বেধে টেনে ধরে রেখেছে কেউ একজন।
দড়িটির গোড়াতে আরেকটি শার্ট বা জ্যাকেট জাতীয় কিছু পাকিয়ে বাধা হয়েছে, যা দিয়ে ভিন্ন দিকে ঐ হাতটিতে টেনে ধরে মোবাইল ফোনে দৃশ্যটি ধারণ করছেন একজন।
পরনে সাদা রঙের জাম্পার, ছাইরঙের ফুলশার্ট আর খয়েরী ফুলপ্যান্ট। পায়ে একজোড়া চপ্পল।
ঘটনামঞ্চ ঘিরে কয়েক জোড়া পা দেখা যাচ্ছে।
কারো পরনে প্রিন্টেড ক্যাজুয়াল ট্রাউজার, কারো লুঙ্গি।
ছেলেটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজশাহী-বগুড়া গামী বিপি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে সে সিডি প্লেয়ার চুরি করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঐ অভিযোগে নাজমুল হক নামে কিশোরটিকে একুশে ফেব্রুয়ারির ভোররাতের দিকে বিপি পরিবহনের চালক, সুপারভাইজার ও অন্যান্য কর্মীরা মিলে একটি ট্রাকের সামনের বাম্পারের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেধে কয়েক ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করে।
শেষে তার মাথার চুল কেটে নিয়ে, মুখে পোড়া মবিল মাখিয়ে দেয়া হয়।
ভোরে এলাকার মানুষজন ঘটনা দেখে পুলিশে খবর দেয়। এরপর ছেলেটিকে উদ্ধার করে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।
এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান।
তিনি বলছিলেন, মঙ্গলবার দুপুরের পর নাজমুলের বাবা পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
রাতেই বাসের চালক আক্কেল হোসেন এবং পাম্পের কর্মী নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নাজমুলের বাবা হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, তার ছেলে নির্দোষ। ঐ এলাকার মোটর গ্যারেজ, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সবাই জানে নাজমুল ভদ্র ও বিনয়ী ছেলে।
তাকে মিথ্যা অভিযোগে টার্গেট করা হয়েছে।
মি. রহমান জানিয়েছেন, বছরখানেক হলো শহরের পুঠিয়ার এক প্রান্তে ফিলিং স্টেশনের লাগোয়া একটি ছোট দোকান দিয়েছেন তারা।
সেখানকার মোটর সাইকেলের ছোটখাটো কাজ, টুকিটাকি যন্ত্রপাতি পরিষ্কার ও মেরামতের কাজ করত তার ছেলে।
চার ভাইবোনের মধ্যে তৃতীয় নাজমুল চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়োশোনা করে আর এগুতে পারেনি।
বছর খানেক রাজশাহী-বগুড়া গামী বাসে হেল্পারের কাজ করেছে নাজমুল পারিবারকে সাহায্য করতে।