ভারত মহাসাগরের বুকে ভেসে বেড়াচ্ছে ভূতুড়ে জাহাজ, তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পাওয়া গেল না মানুষের সন্ধান
সমুদ্র পথে কত যে গা ছমছমে কাহিনি ছড়িয়ে রয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। এই সব কাহিনি অনেক নাবিক বিশ্বাস করেন আবার কেউ করেন না। তবে, গল্পকথায় বারবার স্থান পেয়েছে সমুদ্রপথের এমন সব ভুতুড়ে কাহিনি।
সমুদ্র পথে কত যে গা ছমছমে কাহিনি ছড়িয়ে রয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। এই সব কাহিনি অনেক নাবিক বিশ্বাস করেন আবার কেউ করেন না। তবে, গল্পকথায় বারবার স্থান পেয়েছে সমুদ্রপথের এমন সব ভুতুড়ে কাহিনি। জনপ্রিয়তাও শিখরে চড়েছে এই সব গল্প।
এমনই সব ভুতুড়ে কাহিনিতে খানিকটা রসদ জোগাল দ্য স্য়াম রাতুলাঙ্গি নামে একটি জাহাজ। যাকে ভারত মহাসাগরের বুক থেকে উদ্ধার করেছে মায়ানমার উপকূলরক্ষী বাহিনী। অগাস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুড়ে বেড়াচ্ছিল দ্য স্যাম রাতুলাঙ্গি।
জাহাজটার শরীর জুড়ে খয়াটে চেহারার প্রলেপ। বলতে গেলে মরচে দগদগে ঘা জাহাজের লোহার বর্ম জুড়ে। মায়ানমারের উপকূলরক্ষী বাহিনী যখন জাহাজের উপরে পৌঁছয় তখন সেখানে কোনও মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়নি। জাহাজের ডেক থেকে শুরু করে কেবিন, ক্যাপ্টেনের ঘর, হাল চালানোর ঘর- সবই ছিল একদম ফাঁকা। মায়ানমার নৌবাহিনী জানিয়েছে, বোঝাই যাচ্ছিল এই জাহাজে বহু দিন কারোর পা পড়েনি।
তাহলে ভারত মহাসাগেরর এই জায়গায় জাহাজটি এল কী করে? তার কোনও সদুত্তর পায়নি মায়ানমারের উপকূলরক্ষী বাহিনী। রহস্যময় এই জাহাজটিকে আপাতত উপকূলে আনা হয়েছে। জানা গিয়েছে, জাহাজের জাহাজটির ভগ্নদশা হলেও তা চলাচলের মতো অবস্থাতেই আছে। জাহাজের সামনে দুটো লম্বা কেবল সমুদ্রের ডুবে ছিল। মনে করা হচ্ছে ওই দড়ির সঙ্গে ছোট নৌকা বাঁধা ছিল। সেগুলি কোনওভাবে সেখান থেকে খুলে গিয়েছে।
রহস্যময় এই জাহাজকে ঘিরে এখন কৌতুহলের শেষ নেই। অনেকে একে ভুতুড়ে জাহাজ বলতেও শুরু করেছেন। ২৯ অগাস্ট প্রথম মৎসজীবীরা মায়ানমার উপকূলের কাছে জাহাজটিকে দেখতে পান। তারা নৌসেনাকে জানায়। এরপর নৌসেনা উপকূলরক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে তদন্ত শুরু করে।
তদন্তে খবর ১৭৭ মিটার লম্বা জাহাজটি ২০০১ সালে প্রথম কমিশনড হয়। ২০০৯ সালে তাইওয়ানে শেষবার রেকর্ডেড হয়েছে এর গতিবিধি। এরপর আর কোনও খোঁজ ছিল না জাহাজটির। প্রায় ১ দশক থেকে নিখোঁজ থাকার পর রহস্যময়ভাবে যেন মায়ানমার উপকূলে হাজির হয়েছে দ্য স্যাম রাতুলাঙ্গি।
তদন্তে মনা করা হচ্ছে জাহাজটি হয়তো পাকিস্তান, ভারত বা বাংলাদেশের জাহাজ ভাঙার কারখানায় ছিল। সেখান থেকে কোনওভাবে তা নোঙর খুলে বেরিয়ে আসে। তবে, মায়ানমার নৌসেনা মনে করছে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের জাহাজ ভাঙার কারখানা থেকে দ্য স্যাম রাতুলাঙ্গি-র ভেসে আসার সম্ভাবনা প্রবল। গোটা বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে দ্য স্যাম রাতুলাঙ্গি রহস্যময় আবির্ভাব ঘিরে ভুতুড়ে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।