ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘে বিশেষ প্রস্তাব জার্মানির, কূটনৈতিক চাপে ভারত
ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘন ইস্যুতে রাষ্ট্রসংঘে বিশেষ প্রস্তাব জার্মানির, কূটনৈতিক চাপে ভারত
ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিক কাউন্সিলে আনালেনা বেয়ারবক একটি আলোচনার প্রস্তাব রেখেছেন। মানবাধিকার কাউন্সিলে ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে আলোচনার এই প্রস্তাবে ১৭টি দেশের সমর্থনের প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ভারতের ওপর নতুন করে কূটনৈতিক চাপের সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত ইরানের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে এখনই কোনও আলোচনা করতে চাইছে না বলেই সূত্রের খবর।
ইরানে ক্রমাগত মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে
জর্মানির বিদেশমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেন, ইরানে সাধারণ নাগরিকের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন করতে নিষ্ঠুর অভিযান চালাচ্ছে প্রশাসন। ইরানের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচারের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে একটি বৈঠকের প্রয়োজন বলে তিনি জানান। ২৬ অক্টোবর সোশ্যাল মিডিয়ায় আনালেনা বেয়ারবক বলেন, ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘনে বিশ্ব মানবাধিকার কাউন্সিলে বৈঠকের জন্য তিনি প্রস্তাব রাখবেন।
ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘনে ভারতের অবস্থান
ইরানে মানবাধিকার লঙ্ঘনে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে ভারত নিজেদের অবস্থান নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে বলে সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের তরফে মনে করা হচ্ছে। জার্মানির বিদেশ মন্ত্রী যে সময় বিশেষ বৈঠকের ডাক দিয়েছেন, তখন মানবাধিকার কাউন্সিলে ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিইউয়ের অধিবেশন চলবে। এই অধিবেশনটি ৭ নভেম্বর থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এই অধিবেশনে বাহরাইন, ইকুয়েডর, তিউনিসিয়া, মরক্কো, ইন্দোনেশিয়া, ফিনল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, আলজেরিয়া, ফিলিপাইন, ব্রাজিল, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং দক্ষিণ আফ্রিকা অংশগ্রহণ করবে বলে জানা গিয়েছে। মোট ১৪টি দেশ এই অধিবেশনে অংশগ্রহণ করবেন। ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, সেই সময় জার্মানির বিদেশ মন্ত্রীর প্রস্তাবিত বৈঠক সঞ্চালন করা কঠিন হয়ে যাবে।
পশ্চিমি দেশগুলোর সমর্থন
জার্মানির বিদেশ মন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের প্রস্তাবিত বৈঠক বাস্তবায়িত করতে ১৭টি দেশের সমর্থন প্রয়োজন। তবে পশ্চিমি দেশগুলো জার্মানিকে সমর্থন করবে বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে ভারত জার্মান বিদেশমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বৈঠকে সমর্থন করবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে চিনের উইঘুর সম্প্রদায়ের ওপর মানবাধিকার সঙ্ঘন ইস্যুতে আলোচনার একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে। সেই সময় প্রস্তাবের পক্ষে পশ্চিমি দেশগুলো প্রায় সবাই ভোট দিয়েছিল। ১৯টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। বিপক্ষে দিয়েছিল ১১টি দেশ। তারমধ্যে ভারত অন্যতম।
কৌশলগত দিক থেকে চাপে ভারত
মানবাধিকার কাউন্সিলে উইঘুর নিয়ে বৈঠকের সময় ভারত বিপক্ষে ভোট দেয়। ভারতের তরফে জানানো হয়, নয়াদিল্লি মানবাধিকার ইস্যুতে কোনও নির্দিষ্ট একটি দেশকে নিয়ে আলোচনা করতে চায় না। জার্মান বিদেশমন্ত্রীর আবেদনে একই ধরনের কোনও কারণ ভারতের তরফে দেখানো হতে পারে। ইরানের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালো। ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি সরবরাহকারী দেশ ইরান। এই পরিস্থিতিতে ভারত ইরানের বিপক্ষে যাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। ইউক্রেনে রুশ অভিযানের সময়ও অনেকটা একই কারণে ভারত সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যায়নি।
ইরানে বিক্ষোভ
১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের পুলিশি হেফাজতে তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু হয়। সঠিকভাবে হিজাব না পরার করার ইরানের নৈতিক পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। আমিনির মৃত্যুর সারা দেশ ক্ষোভে ফেটে পড়তে থাকে। ইরানের বিভিন্ন কোনে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিস্থিতি ক্রমেই উত্তপ্ত হয়। ইরান প্রশাসন কঠোর হাতে বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করে। ইরানের বহু বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয় পুলিশি নির্যাতনের জেরে
কাজের চাপে অফিসের মেঝেতেই ঘুমাচ্ছেন টুইটার কর্মী, ভাইরাল ছবি