নরেন্দ্র মোদীর শাসনকালে চিন-ভারতের মধ্যে ব্যবধান বেড়েছে, জানাল চিনা সংবাদমাধ্যম
নরেন্দ্র মোদীর সময়ে বিদেশনীতিতে ভারতের বুক আরও চওড়া হয়েছে বলে প্রায়ই দাবি করেন শাসকদল বিজেপি।
নরেন্দ্র মোদীর সময়ে বিদেশনীতিতে ভারতের বুক আরও চওড়া হয়েছে বলে প্রায়ই দাবি করেন শাসকদল বিজেপি। এমনকী, সম্প্রতি যে সন্ত্রাসবাদী মৌলানা মাসুদ আজহারের পিছন থেকে সমর্থন তুলে নেয় চিন যাতে আন্তর্জাতিক দরবারে তাঁকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়া যায়, তাতেও জয় হয়েছে মোদীর বিদেশনীতিরই বলে ধারণা অনেকের।
কিন্তু এবারে পাল্টা দিল চিন। সে-দেশের 'গ্লোবাল টাইমস' নামক ইংরেজি সংবাদপত্রের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, অর্থনৈতিক উন্নতির নিরিখে গত পাঁচ বছরে চিনের সঙ্গে ভারতের ব্যবধান আগের চেয়ে বেড়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে ভারতের পক্ষে এই ধারাকে বদলানোর কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও তাতে জানানো হয়েছে।
'ভারতের পক্ষে এই ব্যবধান ঘোচানো কার্যত অসম্ভব'
লিউ জংউই নামে চিনের একজন বিশেষজ্ঞের দেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে লেখা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে যে চিনের অর্থনীতির বহর গত বছর, অর্থাৎ ২০১৮ সালে ছিল ১৩.৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান। ওই একই সময়ে, ভারতের অর্থনীতির আয়তন ছিল মাত্র ২.৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমান। "এই ব্যবধান ঘোচাতে ভারতের বার্ষিক অর্থনৈতিক উন্নতির হার চিনের তুলনায় অনেক বেশি হতে হবে কিন্তু তা হওয়ার সম্ভাবনা বিশেষ নেই কারণ চিনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের হার এখনও বেশ দ্রুত," বলেছে প্রতিবেদনটি।
মোদী সরকারের আমলে জিডিপি হিসেবে করার নতুন প্রক্রিয়া নিয়েও খোঁটা দিল চিন
পাশাপাশি, ২০১৪ থেকে ২০১৮-র মধ্যে ভারতের জিডিপি-র বৃদ্ধি ৬.৭ শতাংশ হারে বাড়লেও চিনের সংবাদমাধ্যমটি মোদী সরকারকে খোঁটা দিতেও ছাড়েনি। সম্প্রতি ভারতের এনএসএসও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনে বলেছে মোদী সরকারের আমলে জিডিপি হিসেবে করার পরিসংখ্যানগত প্রক্রিয়াতে পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং তা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্কে��� সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ, আগের সরকারের কৃতিত্বকে ছোট করে দেখানোর তাগিদেই বর্তমান সরকার প্রক্রিয়াতে বদল এনেছে। চিনের প্রতিবেদনটি জানিয়েছে ভারতের উন্নয়নের হারের প্রকৃত কাহিনী নিয়ে অনেকেই সন্দিহান। বলা হয়েছে, আগের প্রক্রিয়াতে হিসেবে করলে দেখা যাবে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সঙ্গে তাঁর পূর্বসূরি মনমোহন সিং-এর সরকারের বিশেষ কিছু তফাৎ নেই এই ব্যাপারে।
'গ্লোবাল টাইমস' আরও জানিয়েছে যে মোদীর সময়ে যে কয়েকটি অর্থনৈতিক সংস্কার আচমকা লাগু করা হয়, যেমন নোটবন্দি এবং কর সংস্কার, তাতে স্বল্পমেয়াদে ভারতের অর্থনীতির উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
'মোদীর চাকরির প্রতিশ্রুতি মুখ থুবড়ে পড়েছে'
প্রতিবেদনটি জানিয়েছে ভারতের কর্মসংস্থানের করুণ চিত্রটির কথাও। বলেছে, একদিকে যেমন তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাকরি খুইয়েছে অনেক মানুষ পশ্চিমের অর্থনৈতিক মন্দার কারণে, নতুন চাকরির খোঁজ মোদী সরকার দিতে পারেনি; এমনকী, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বার্ষিক এক কোটি চাকরি তৈরী করার প্রতিশ্রুতিও পড়েছে মুখ থুবড়ে।