ভেঙেছিল পাক সেনা, পাঁচ দশক পরে রমনা কালী মন্দিরের উদ্বোধন ভারতের রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের
ভেঙেছিল পাক সেনা, পাঁচ দশক পরে রমনা কালী মন্দিরের উদ্বোধন ভারতের রাষ্ট্রপতি কোবিন্দের
বিজয় দিবসের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশ সফরে গিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। শুক্রবার সকালে পুনর্নিমিত রমনা কালী মন্দির উদ্বোধন করলেন রাষ্ট্রপতি। ১৯৭১ সালে এই মন্দিরটি পাক সেনাবাহিনী ধ্বংস করে দিয়েছিল।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে প্রতিবেশী বাংলাদেশ৷ এই উপলক্ষেই সেদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে। প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র প্রধানের আবেদন ফেলেননি রামনাথ কোবিন্দ৷ সপরিবারে বুধবার রাতেই পৌঁছে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। এই সফরে গিয়েই ৫০ বছর আগে ধ্বংস হওয়া কালীমন্দিরের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করলেন কোবিন্দ৷
জানা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে 'অপারেশন সার্চলাইট' চলাকালীন এই মন্দির ধ্বংস করে দিয়েছিল পাকিস্তানি সেনা। মন্দিরে অবস্থিত বহু ভক্তকে মেরে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল তারা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই কালী মন্দিরটিই নবরূপে নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় ভারতও। সেই মন্দিরটিতেই এবার পৌঁছে গেলেন সস্ত্রীক রামনাথ কোবিন্দ। স্ত্রী সবিতা কোবিন্দকে নিয়ে মন্দিরে পুজো দেন রামনাথ।
উদ্বোধন করার পর রামনাথ বলেন, ' আজ সকালে আমি ঐতিহাসিক রমনা নবরূপে নির্মিত কালী মন্দিরের উদ্বোধন করলাম। এটা আদতে মা কালীরই আশীর্বাদ। আমি জানতে পেরেছি, দুই দেশের সরকার এবং সাধারণ মানুষ এই মন্দিরের পুনর্নির্মাণে সাহায্য করেছেন। যা কিনা মুক্তি সংগ্রামের সময় পাকিস্তানি ফৌজ একেবারে ধ্বংস করে দিয়েছিল। দখলকারী সেনার হাতে অগণিত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এই মন্দির ভারত এবং বাংলাদেশের মানুষের সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক বন্ধনের প্রতীক। এই মন্দির উদ্বোধনের মাধ্যমেই আমার বাংলাদেশ সফরের শুভ সমাপ্তি হল।'
এমনিতে বাংলাদেশ ভারতের বন্ধুরাষ্ট্র হলেও সেদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের পরিমাণ মোটেই কম নয়। মাঝেমধ্যেই কাঁটাতারের ওপার থেকে মূর্তিভাঙা, মন্দির ধ্বংসের খবর ভেসে আসে। সম্প্রতি দুর্গাপুজো চলাকালীন কুমিল্লা, নোয়াখালি, রংপুরে নারকীয় হিংসার স্মৃতি এখনও তাজা৷ বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে এই প্রসঙ্গে রিপোর্টও চেয়েছিল ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে ভারতের রাষ্ট্রপতির কালী মন্দির উদ্বোধনকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।