ইমরানের প্রতি রুষ্ট ম্যাক্রোঁ! 'বয়কট ফ্রান্স' রব তোলা পাকিস্তান নিজে একঘরে হওয়ার পথে
পাকিস্তানের প্রতি রুষ্ট ফ্রান্স? হঠাৎ বিশ্ব কূটনৈতিক মঞ্চে এহেন প্রশ্ন উপনীত হওয়ার কারণ, ইসলামাবাদকে ন্যুনতম সামরিক সাহায্যটুকু করতে অস্বীকার করল এম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকার। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ উঠেছিল ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে। সেই সময় মুসলিম বিশ্বে বয়কট ফ্রান্স রব উঠেছিল। ইমরান খান ম্যাক্রোঁকে আক্রমণ করে অনেক কথাও বলেছিলেন তখন।
ফ্রান্সের সাহায্য পাচ্ছে না ইমরান খানের সরকার
ইতিমধ্যেই ফ্রান্সের কাছে পাকিস্তান আবেদন জানিয়েছিল মিরাজ এবং অ্যাগোস্টা ৯০বি ক্লাস সাবমেরিন আপগ্রেড করে দেওয়ার। পাশাপাশি ফঅরান্সের থেকে কেনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের প্রযুক্তিও আপগ্রেড করার আবেদন রেখেছিল ইসলামাবাদ। কিন্তু এই সব ক্ষেত্রে পাকিস্তানের আবেদন পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে এম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর সরকার। স্বভাবত, কোনও দেশ থেকে সামরিক সরঞ্জাম কিনলে, পরবর্তীতে তা আপগ্রেড করে দেয় উৎপাদনকারী দেশ। তবে এই স্বাভাবিক বিষয়টির ক্ষেত্রেও এবার ফ্রান্সের সাহায্য পাচ্ছে না ইমরান খানের সরকার।
রাফালের তথ্য চুরি করতে পারে পাকিস্তান
শুধু তাই নয়, ফ্রান্স কাতারের কাছে একটি দাবি পেশ করে জানিয়েছে যে যাতে পাকিস্তানি কোনও কর্মচারীকে যেন রাফালের রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে নিয়োগ না করা হয়। উল্লেখ্য, ফ্রান্সের থেকে রাফাল কিনেছে কাতার। ফ্রান্সের বক্তব্য, তারা ভয় পাচ্ছে পাকিস্তান চরবৃত্তি করে রাফালের প্রযুক্তি হাতিয়ে নিতে চাইবে কাতার থেকে। এবং পাকিস্তান সেই তথ্য চিনকে পাচার করে দিতে পারে।
পাকিস্তানকে অবিশ্বাস ফ্রান্সের
পাকিস্তান-চিন সখ্যতা সবার জানা। ফ্রান্সের ভয়, রাফাল সংক্রান্ত তথ্য যদি পাকিস্তান কাতার থেকে চুরি করে বেজিংকে জানিয়ে দেয় সেই ক্ষেত্রে ভারতীয় বিমান বাহিনী বিপাকে পড়বে। কারণ, সম্প্রতি ভারতীয় বায়ুসেনা মধ্যমণি হয়ে উঠেছে ফ্রান্স থেকে কেনা রাফালগুলি। এদিকে রাফালের প্রযুক্তিগত তথ্য যদি চিনের কাছে চলে যায়, সেই ক্ষেত্রে ভবিষ্যতেও ফঅরান্স থেকে আর বিমান কিনতে চাইবে না ভারত।
পাকিস্তানিরা আশ্রয় পাচ্ছে না ফ্রান্সে
এদিকে শুধু সামরিক ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে বয়কট করাই নয়, ফ্রান্স সম্প্রতি পাকিস্তানি ব্যক্তিদের তাদের দেশে অভিবাসন অনুমতি দিতে অস্বীকার করছে। ফ্রান্স সাধারণত ইউরোপে যাওয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য অন্যতম সেরা গন্তব্য স্থল। বিগত কয়েক দশক ধরেই উত্তর আফ্রিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলিমরা ফ্রান্সে গিয়ে আশ্রয় পেয়েছেন। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিস্থিতির নিরিখে পাকিস্তানি বংশদ্ভূতদের উপর ভরসা রাখতে পারছে না ফ্রান্স।
মৌলবাদ নিয়ে চিন্তিত ফ্রান্স
এদিকে ফ্রান্সে বেড়ে চলা কট্টরপন্থার নেপথ্যে পাকিস্তানি যুবকদের একচি বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মত সেদেশের সরকারের। উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বরে প্যারিসে শার্লি হেবদোর অফিসের সামনে দুই জন ব্যক্তিকে মাংশ কাটার ছুরি দিয়ে কুপিয়েছিল আলি হাসান নামক এক ১৮ বছর বয়সী পাকিস্তানি। পাকিস্তানে বসবাসরত আলি হাসানের বাবা সেই ঘটনা প্রসঙ্গে নিজের খুশি ব্যক্ত করেছিলেন মিডিয়ার কাছে।
ম্যাক্রোঁকে সরাসরি আক্রমণ ইমরানের
এদিকে গত কয়েক মাস ধরে ফ্রান্সে ঘটে যায়া একাধিক হিংসাত্মক ঘটনার নেপথ্যে মৌলবাদ থাকার দরুণ এম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁ এর কড়া নিন্দা করেন। পাশাপাশি ধর্ম নিরপেক্ষতার বার্তা দিতে শার্লি হেবদো ও হজরত মহম্মদের ছবি দেখানোর জেরে খুন হওয়া ইতিহাসের শিক্ষকের সমর্থনে মুখ খোলেন। এরপরই তুরস্কের সঙ্গে জোট বেঁধে পাকিস্তানের তরফে ইমরান খান ম্যাক্রোঁকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছিলেন। যা ভালো চোখে নেয়নি ফ্রান্স ছাড়াও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশগুলি।
পাকিস্তানের থেকে মুখ ফিরিয়েছে জার্মানিও
জানা গিয়েছে শুধু ফ্রান্স নয়, পাকিস্তানকে সামরিক প্রযুক্তি দিয়ে সাহাজ্য করতে অস্বীকার করেছে জার্মানিও। ফ্রান্স পাকিস্তানের আবেদন নাকচ করার পর অ্যাগোস্টা ৯০বি গোত্রের তিনটি সাবমেরিন এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম আপগ্রেড করার জন্যে জার্মানির দ্বারস্থ হয়েছিল ইমরান খানের সরকার। তবে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল পাকিস্তানের সেই আবেদনে সারা দেননি।
বয়কট ফ্রান্স-এর রব তোলা পাকিস্তান নিজেই একঘরে হওয়ার পথে
যা পরিস্থিতি তাতে বয়কট ফ্রান্স-এর রব তোলা পাকিস্তান এখন একঘরে হওয়ার পথে। ইসলামোফোবিয়ার অভিযোগ তোলা পাকিস্তান ফ্রান্সকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সেদেশ থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতকে ফেরত আনার জন্যে রেজোলিউশন পাশ করিয়েছিল ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে। পরে অবশ্য ইসলামাবাদের ঘুম ভাঙে। কারণ সেই রেজোলিউশন পাশের তিন মাস আগের থেকেই ফ্রান্সে পাকিস্তানের কোনও প্রিতিনিধি ছিলেন না। তবে এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে ফ্রান্সের রোষের মুখে পড়েছে পাকিস্তান।
এখনও বাংলার একশো শতাংশ বুথে পৌঁছতে পারেনি বিজেপি, ২১-এর ভোটের আগে স্বীকার দিলীপ ঘোষের