মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব মিলেছিল ৪৩ বছর আগে! নাসার প্রাক্তন বিজ্ঞানীর চাঞ্চল্যকর দাবি
মঙ্গলে কি প্রাণ আছে! এই প্রশ্নের সমাধান নাকি চার দশক আগেই হয়ে গিয়েছিল! সম্প্রতি মঙ্গে লবণ হ্রদের সন্ধান মিলেছে। মঙ্গলে এই লবণ হ্রদ মেলার পরই প্রাণ থাকার সম্ভাবনা নিয়ে চর্চা শুরু হয়। সেই চর্চার পরিপ্রেক্ষিতেই নাসার এক প্রাক্তন বিজ্ঞানী দাবি করে বসলেন, ৪৩ বছর আগেই মঙ্গলে প্রাণের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল।

দুবারই প্রাণের প্রমাণ মিলেছিল
মঙ্গলে প্রাণ থাকার মতো অনেক প্রমাণই মিলেছিল। প্রাণ ছিল বলেই প্রাণীদের বর্জ্যের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল মঙ্গলে। ল্যান্ডারের রেডিও অ্যাকটিভ মনিটরে ধরা পড়েছিল সেইসব। ওই মাটি নিয়ে নাসা পরীক্ষাও করেছিল পরবর্তী সময়ে। তাতে দুবারই প্রাণের প্রমাণ মিলেছিল। তবে নাসা ওই পরীক্ষার ফলের প্রতিলিপি ল্যবরেটরি থেকে বের করতে পারেনি।

মার্কিন জার্নালে প্রতিবেদনে দাবি
১৯৭৬ সালে নাসা মঙ্গলে পাঠিয়েছিল একটি বাইকিং ল্যান্ডার। সেই সময় নাসার প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ছিলেন গিলবার্ট ভি লেভিন। তিনি সম্প্রতি মার্কিন জার্নালে একটি প্রতিবেদন লেখেন। সেখানেই তিনি মঙ্গলে প্রাণের প্রমাণ মিলেছিল বলে উল্লেখ করেন। সেখানে লেখা হয় প্রাণের সম্ভাবনা অনেক প্রমাণ মিলেছিল। কিন্তু নাসা পরবর্তী সময়ে কোনও মঙ্গলযান পাঠায়নি।

মঙ্গলের ‘গেল ক্রেটার’ নিয়ে গবেষণা
সম্প্রতি একটি গবেষণা থেকে মঙ্গলে ফের প্রাণের উৎস পেয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। সাত বছর ধরে মঙ্গলের ‘গেল ক্রেটার' নিয়ে গবেষণা চালিয়ে নাসার ‘কিওরিসিটি রোভার' এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে- মঙ্গলে প্রাণ থাকলেও থাকতে পারে। কারণ মঙ্গলে পাওয়া গিয়েছে লবণ হ্রদের অস্তিত্ব।

পড়শি গ্রহ মঙ্গলেও প্রাণ!
পৃথিবীতে যেমন প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে, পড়শি গ্রহ মঙ্গলেও তেমন প্রাণ ছিল। তার কারণ মঙ্গলে ছিল লবণজলের হ্রদ। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে জল শুকিয়ে যায় সেই হ্রদের। সেই হ্রদগুলি ক্রমেই ক্রেটার বা গহ্বরে পরিণত হয়। লবণের আস্তরণ আবিষ্কারের ফলেই এই আশ্চর্যজনক দাবি ফের উঠল এতদিন পর।

হ্রদের গায়ে লবণের পুরু আস্তরণ
বর্তমানে গবেষণা চালিয়ে নাসার বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন, জল শুকিয়ে গেলেও হ্রদের গায়ে লবণের পুরু আস্তরণ রয়ে গিয়েছে। মঙ্গলের ‘গেল ক্রেটার' থেকে লবণের সেই আস্তরণই আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারপরই নাসা নিশ্চিত হয়েছে লালগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব নিয়ে।

গবেষণায় আশাব্যাঞ্জক ফলাফল
কিওরিসিটি রোভার জানিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন বছর আগে ক্রেটারটি তৈরি হয়েছিল। এই সপ্তাহেই নেচার জিও সায়েন্স জার্নালে এই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়। গবেষণার নেতৃত্বে ছিল কালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির একটি দল। এই দলই গেল ক্রেটার থেকে ১৫০ মিটার উচ্চতার পলল পাথর উদ্ধার করেছে।

মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ
এই পলল পাথরেই সালফেট জাতীয় লবনের আধিক্য ছিল বলে জানতে পারেন গবেষকরা। প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেটও ছিল ওই পাথরে। গহ্বরের গায়ে লবণের পুরু ওই আস্তরণ দেখেই গবেষকরা মনে করছেন মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্বের প্রমাণ দিচ্ছে ওই লবণের আস্তরণ।