প্রথমবার লকডাউনের পথে দক্ষিণ কোরিয়া! গোটা দেশ জুড়েই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা
প্রথম লকডাউনের পথে দক্ষিণ কোরিয়া, উদ্বেগ বাড়াচ্ছে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা
মহামারীর শুরু থেকেই কড়া হাতে করোনা মোকাবিলায় নেমেছে দক্ষিণ কোরিয়া। করোনার কবলে পড়ে যখন নিদারুণ দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে বিশ্বের অন্যান্য দেশ তখন ট্রেসিং, ট্র্যাকিং ও টেস্টিং, এই তিন মন্ত্রের সঠিক প্রয়োগেই বাজিমাত করে দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু তারপরেও শেষ রক্ষা হয়নি। বর্তমানে গোটা দেশেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ফলস্বরূপ প্রথমবারের জন্য লকডাউনের পথে হাঁটতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়া।
শীত পড়তেই শুরু তৃতীয় পর্বের সংক্রমণ
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার করোনা মোকাবিলাকে এর আগে একাধিকবার দৃষ্টান্ত হিসাবে তুলে ধরেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। করেছে ভূয়সী প্রশংসাও। এমতাবস্থায় এবার সেদেশে করোনার বাড়বাড়ন্তের জেরে ক্রমেই বাড়ছে উদ্বেগ। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই গোটা দক্ষিণ কোরিয়া জুড়েই শুরু হয়েছে করোনা তৃতীয় পর্বের সংক্রমণ। তা শীত পড়তেই গোটা দেশেই লকডাউন কার্যকর করার পথে হাঁটছে কোরিয় প্রশাসন। এমতাবস্থায় গোটা দেশবাসীকে করোনা বিধি সঠিক ভাবে মেনে চলার অনুরোধ করত দেখা দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সিনিয়র আধিকারিক ইয়ুন-তাই-হো-কে।
কী বলছে দেশের করোনা মানচিত্র ?
দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে খবর, মঙ্গলবার নতুন করে ১,০৭৮ জন আক্রান্ত হওয়ায় বর্তমানে মোট সংক্রামিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫,৪৪২। মঙ্গলবার মারা গেছেন ১২ জন। দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১২ জন। অন্যদিকে সিওলের ৭৮টি আইসিইউ শয্যার ৭৭টিতেই করোনা রোগীর ভর্তি হওয়া নিয়ে বুধবার আশঙ্কাপ্রকাশ করেছেন মেয়র সিও-জাং-হিউ। অনেকের মতেই, ইউরোপ-আমেরিকার রোগীর ঢলের তুলনায় দক্ষিণ কোরিয়ার অবস্থা এমন কিছু গুরুতর নয়। কিন্তু প্রথমবারের জন্য লকডাউনের চিন্তায় স্বাভাবিকভাবেই চিন্তিত দেশবাসী।
বাড়ছে অস্থিরতা
জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে খবর, মধ্য-নভেম্বর থেকে ধীরে ধীরে করোনা আগ্রাসী হলেও সঙ্গে সঙ্গে বিধিনিষেধও কড়া করেছে দক্ষিণ কোরিয়া প্রশাসন। অন্যদিকে, শীতের চাদরে বাড়ছে করোনার আক্রমণ, ফলে গত সপ্তাহেই 'ট্রেসিং'-এর উদ্দেশ্যে দেশের পুলিশবাহিনীকে আসরে নামিয়েছে সরকার। এ বছরের শুরুতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার নিয়মের বিরোধিতা করে পথে নেমেছিল ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনগুলি। তা নিয়েও বাড়ছে উদ্বেগ। স্বাস্থ্যআধিকারিক পার্ক ইয়াওমির মতে, "একটি চার্চে গত ৭ সপ্তাহে ২৮ বার ধর্মীয় জমায়েত হয়েছে, আমার ধারণা ওখান থেকেও করোনা ছড়িয়েছে!"
অতিঠান্ডায় বাড়বাড়ন্ত কোভিডের
কোরিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের মতে, সিওল সহ আশপাশের অঞ্চলগুলিতে দিনের বেলার গড় তাপমাত্রা নেমে যায় -৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, তাছাড়া এত ঠান্ডায় ঘরের বায়ুচলাচলের ব্যবস্থাও অবরুদ্ধ হয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই করোনার চোখরাঙানি বাড়ছে। মঙ্গলবার দক্ষিণ কোরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রক ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের অধিকর্তা জাং-ইয়ুন-কেয়ং জানান যে, জাপানের মত আমাদের দেশেও শীতকালীন তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভয়ংকর আকার ধারণ করবে অতিমারী। তাই করোনার একমাত্র দাওয়াই হিসাবে এখন তিনি কড়া লকডাউনের পক্ষেই সওয়াল করছেন।
জাপানে ১.৮৪ লক্ষ ছাড়াল আক্রান্তের সংখ্যা
বর্তমানে জাপানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,৮৪,৭৫৪ জন ও মারা গেছেন ২,৭০১ জন। জাপানের স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মতে, করোনা আক্রমণের প্রথম থেকেই কড়া বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি বজায়ের দরুণ আটকে ছিল আক্রান্তের সংখ্যা, সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে লাগাম ছিল সংক্রমণে। তাঁদের মতে, করোনায় সর্বপ্রথম ধাক্কা খায় এশিয়ার পূর্বভাগের দেশগুলি। ফলে শুরু থেকেই কড়া ব্যবস্থার মধ্যে থাকতে থাকতে অবশেষে মানসিক অবসাদে ভুগছে জাপানের অধিকাংশ মানুষ।
করোনাকালে কেন্দ্রীয় কোষাগারে বড়সড় ঘাটতি, আয় বাড়াতে মার্চেই ৪জি স্পেকট্রাম নিলামে সায় কেন্দ্রের