নোভেল করোনা ভাইরাস থেকে কীভাবে বাঁচবেন জেনে নিন
নোভেল করোনা। মারাত্মক এই চিনা ভাইরাসের আতঙ্কে এখন তটস্থ গোটা বিশ্ব। কলকাতাসহ বিশ্বজুুড়ে বিভিন্ন বিমানবন্দরে ইতিমধ্যে জারি হয়েছে নোভেল করোনা ভাইরাসের সতর্কতা। চিনে প্রথম দেখা গেলেও, ধীরে ধীরে সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। এই ভাইরাস চীনের হুওয়ান সহ বেশ কিছু শহরে মারাত্মক আকার নিয়েছে। চীনের স্বাস্থ্য অধিকর্তারা জানিয়েছেন যে এই ভাইরাসের লক্ষণ হল নিউমোনিয়ার মতো অসুস্থ হয়ে পড়া। এই সময়ই চীনে পর্যটকদের ভিড় হয় সবচেয়ে বেশি, এখন এ ধরনের ভাইরাস বাতাসে ঘুরলে তা বিপদজ্জনক।
সম্প্রতি চীনের হোবে প্রদেশের হুওয়ান শহরে শ্বাস–প্রশ্বাসজনিত (নিউমোনিয়া) এ রোগটি প্রথম চিহ্নিত হয়। ইতিমধ্যেই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ন’জনের মৃত্যু ও কমপক্ষে ৪৪০ জন মানুষ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। প্রথমবারের মতো ভয়াবহ নোবেল করোনা ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষের দেহে সংক্রমণের কথা স্বীকার করেছেন চীন সরকারের একটি বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান। ফলে এই ভাইরাস দ্রুততার সঙ্গে এবং ব্যাপকভাবে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে এটা চীনের মাছ বাজার থেকে ছড়িয়েছে।

সফরের সময় এই ভাইরাস থেকে সাবধান থাকুন
হুওয়ানের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, যাঁদের শরীরে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস (২০১৯-এনসিওভি) ঢুকেছে তাঁদের লক্ষণগুলি হল গলা ব্যাথা, জ্বর, মাথাব্যাথা, শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে সমস্যা হওয়া ইত্যাদি। তাই পর্যটকদের সতর্ক করা হয়েছে যে অসুস্থ মানুষদের কাছ থেকে দূরে থাকুন, বিশেষ করে যাঁদের মধ্যে এ ধরনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যদি আপনি সফর করেন তবে নিউমোনিয়া বা সর্দি, নাক থেকে জল পড়ছে, কাশি হচ্ছে, এমন মানুষের থেকে দূরে থাকুন।

মাস্কের ব্যবহার
চীনের অনেকেই এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, মাস্ক ব্যবহার করলেই এই ভাইরাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। তবুও, সংক্রমক রোগের আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত ২০০৮ সালের একটি গবেষণা বলেছে যে মাস্কগুলি সঠিকভাবে ব্যবহার করলে ভাইরাল সংক্রমণের বিস্তার রোধ করতে সহায়তা করতে পারে। তাই আপনি মাস্ক ব্যবহার করবেন কি করবেন না তা আপনার ওপর নির্ভর করছে। শুধু মনে রাখবেন মাস্ক পরার সঠিক নিয়মটা পালন করবেন।

সিডিসি ও হ–য়ের পরামর্শ
সিডিসি ও হু-এর মতো স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি পরামর্শ দিয়েছে যে পর্যটকরা হাত না ধুয়ে তাঁদের নাক, চোখ, মুখে যেন হাত না দেন। সিডিসির মতে, সাবান ও জল দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেণ্ড হাত রগড়ে পরিস্কার করা উচিত। যদি আপনি চীন সফরে যান তবে অবশ্যই খামার ও জীবিত পশুদের থেকে দূরে থাকুন।

নোভেল করোনা ভাইরাসের আগমন
করোনা ভাইরাসের সূত্রপাত চীনের বাজারগুলি থেকে। এখানে বিপুল পরিমাণে মাছ ও জীবিত প্রাণী বিক্রি হয়। যদিও বিজ্ঞানীরা এখনও ধরতে পারেনি যে এই ভাইরাসের আসল সূত্রপাত কোথা থেকে। তবে মনে করা হচ্ছে ঘোড়া বাদুড় থেকেই এই রোগ মানুষের শরীরে বাসা বেঁধেছে। তাই কোনওভাবে যদি কোনও পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়েন তবে যেন অবশ্যই খবর দেওয়া হয় চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে। এই রোগের কোনও ভ্যাকসিন বা জীবাণু-প্রতিরোধ ওষুধ বের হয়নি, তাই এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে একটু সচেতন থাকতে হবে পর্যটকদের।
এদিকে, বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক সাতটি ভারতীয় বিমানবন্দরকে হংকং সহ চীন থেকে আগত সমস্ত যাত্রীর তাপমাত্রা পরীক্ষা করার মতো পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে।
প্রথমবার প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশে হতে চলেছে কৃষক আন্দোলন