মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরিকল্পনায় হু! সমালোচনা বিশেষজ্ঞ মহলের
মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরিকল্পনায় হু! সমালোচনা বিশেষজ্ঞ মহলের
বিশ্বে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব ক্রমেই বাড়ছে। মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের জন্য বিশ্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হবে কি না, তা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, মাঙ্কিপক্স বিশ্বের মাত্র ৪০টি দেশে ছড়িয়েছে। যদি মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের জন্য বিশ্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়া, সেক্ষেত্রে করোনা মহামারী ও মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে করোনা মহামারীর জেরে সাধারণ মানুষ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই তুলনায় মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব নগন্য।
বৃহস্পতিবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা হু-এর জরুরি কমিটি একটি বৈঠকের আহ্বান করে। মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের জন্য জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়। হু-এর এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা দাবি করেছেন, মাঙ্কিপক্স পশ্চিমি দেশগুলোতে নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সে কোনও মৃত্যুর খবর নেই।
তারপরেও মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণার এত তাড়া কেন। মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব আর করোনা মহামারী এক নয়। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ করোনা মহামারীর জেরে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করোনা মহামারীর জেরে ধনী দেশ বা গরিব দেশে আলাদা কোনও প্রভাব পড়েনি। দেশ, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অন্যদিকে, মাঙ্কিপক্স এখনও মূলত ধনীদেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। সেভাবে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশে মাঙ্কি প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়নি।
গত সপ্তাহেই হু প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেন, ৪০টির বেশি দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে। মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাবের জন্য বিশ্বে উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। মাঙ্কিপক্স নতুন কোনও রোগ নয়। গত কয়েক দশক ধরে পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার বাসিন্দারা মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হচ্ছেন। আফ্রিকার একাধিক দেশে মাঙ্কিপক্সের জেরে মৃ্ত্যুর হার করোনার থেকে বেশি।
অনেক সময় আফ্রিকার দেশগুলোতে মাঙ্কিপক্সে মৃত্যুর হার ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। কিন্তু আফ্রিকার বাইরে মাঙ্কিপক্সে কোনও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। নাইজেরিয়ান ভাইরোলজিস্ট ওয়েওয়ালে টোমোরি বলেন, হু যদি মাঙ্কিপক্স নিয়ে সত্যি উদ্বিগ্ন হত, তারা জরুরি কমিটির বৈঠক কয়েক দশক আগে ডাকতে পারত। মাঙ্কিপক্স নিয়ে যে বিভাজন হু করছে, তাতে বিশ্বে সাধারণ মানুষের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে।
আমেরিকার সেন্ট্রাল ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানিয়েছে, বিশ্বের মোট ৪২টি দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে। এই মাঙ্কিপক্সে ৩,৩০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মাঙ্কিপক্সে মোট আক্রান্তের ৮০ শতাংশ ইউরোপের বাসিন্দা। অন্যদিকে, চলতি বছর আফ্রিকায় ১,৪০০ জন মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে।