ফের স্তব্ধ লন্ডন থেকে প্যারিস, করোনার দ্বিতীয় প্রবাহের আঘাতে জর্জরিত গোটা ইউরোপ
ধীরে ধীরে ফের ইউরোপ জুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অগাস্ট মাস থেকেই করোনা সংক্রমণের গ্রাফ উর্ধ্বমুখী হতে দেখা যায় ইউরোপে। সেপ্টম্বের এই সংক্রমণ আরও বেড়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে গোটা মহাদেশে। আর এর জেরেই ফের কারফিউর পথে হেঁটেছে প্যারিস। কারণ গত ২৪ ঘণ্টায় ফ্রান্স জুড়ে নতুন করে ৩০ হাজার সংক্রমণের কেস সামনে এসেছে।
করোনা রুখতে লন্ডনে বিধিনিষেধের কড়াকড়ি
এদিকে শুধু প্যারিস নয়, লন্ডনেও বিধিনিষেধ আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে সংক্রমণ রোখার লক্ষ্যে। করোনা সংক্রমণ ছড়ানো আটকাতে লন্ডনে জনসাধারণের জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যদিও এখনই বন্ধ করা হচ্ছে না রেস্তোরাঁ এবং বার। নির্দেশিকা মেনে সেগুলি খোলা থাকবে এখনও। তবে কোনও উৎসব উপলক্ষে কোনও বাড়িতে জমায়েত করা যাবে না বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তাছাড়া রাত ১০টার পর থেকে নাইট কারফিউও জারি থাকবে।
ইউরোপ জুড়ে করোনার দ্বিতীয় প্রবাহ
ফ্রান্স, পর্তুগাল, ইতালি, জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশে গত কিছুদিন ধরে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় কোয়ারেন্টাইন, সামাজিক দূরত্ব মানার মত বিষয়গুলোতে আবারও কড়াকড়ি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মত, যদি এখনই বিধিনিষেধ আরোপ করা যায় এবং অন্তত ৯৫ শতাংশ মানুষ যদি মাস্ক পড়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলে তাহলে আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে ২ লক্ষ ৮১ হাজার মানুষের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হবে।
ইউরোপে সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার চেক প্রজাতন্ত্রে
ফ্রান্সের মত ইতালিতেও বৃহস্পতিবার নুতন সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। দেশটির দক্ষিণ কামপানিয়া অঞ্চলে এবং নেপলস শহরে সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে দুই সপ্তাহের জন্য। এদিকে ইউরোপে সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার এই মুহূর্তে চেক প্রজাতন্ত্রে, সেখানে অক্টোবরে করোনা ভাইরাসের নতুন সংক্রমণের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্রে স্কুল ও বার বন্ধ করে দেয়া হলেও সংক্রমণ বাড়ছে।
জার্মানি-পর্তুগালেও কড়াকড়ি
এদিকে জার্মানিতে বৃহস্পতিবার নতুন ৬,৬৩৮ জন করোনা ভাইরাসের কেস শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের দিক দিয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বার এবং ক্লাব নির্ধারিত সময়ের আগেই বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে নির্দেশ দেয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে। জমায়েতের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি দেখা গিয়েছে পর্তুগালেও। সেদেশে একসাথে পাঁচজনের বেশি জড়ো হতে পারবে না বলে নির্দেশিকা জারি হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্বেগ
ইউরোপের নতুন করোনা সংক্রমণ নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। গত কয়েকদিনের ব্যবধানেই ইউরোপ জুড়ে দৈনিক সংক্রমণের পাশাপাশি হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যাও আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। পরিস্থিতি যাতে ফের এপ্রিলের মতো না হয়ে যায় তা নিয়েই চিন্তিত হু। হু-এর মত, ইউরোপে যদি বিধিনিষেধ শিথিলের নীতি আর বেশিদিন চলে তা হলে ২০২১ সালের জানুয়ারির মধ্যে দৈনিক মৃত্যু গত এপ্রিলের তুলনায় চার থেকে পাঁচগুণ বেশি হয়ে যেতে পারে।
কেরলের সোনা পাচার মামলায় দাউদ যোগ, আরও অস্বস্তিতে বিজয়নের বাম সরকার