‘অসহ্য এই গরমে মনে হচ্ছে নরকে বাস করছি,’ তাপপ্রবাহের জেরে ১০০০ ব্রিটিশের মৃত্যুর আশঙ্কা
‘অসহ্য এই গরমে মনে হচ্ছে নরকে বাস করছি,’ তাপপ্রবাহের জেরে ১০০০ ব্রিটিশের মৃত্যুর আশঙ্কা
ব্রিটেন এখন তাপপ্রবাহ চলছে। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির আশেপাশে। তাপপ্রবাহের জেরে প্রায় ১,০০০ ব্রিটিশের মৃত্যু হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে স্থানীয় প্রশাসন আশঙ্কা করছে। ব্রিটেনে যেখানে গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি থেকে ২৫ ডিগ্রির আশেপাশে ঘোরাফেরা করে, সেখানে পারদ পৌঁছ গিয়েছে ৪০ ডিগ্রির আশেপাসে। এই তাপমাত্রা সহ্য করা ভারতের মতো গ্রীষ্মকালীন দেশগুলোর নাগরিকদের কাছে কষ্টকর হয়ে ওঠে। অনেক প্রবাসী ভারতীয় গরম এড়াতে এই সময়ে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
তাপপ্রভাবের জেরে বদলে গেল ব্রিটেনের জীবন যাত্রা
তাপপ্রবাহের জেরে ব্রিটেনের মানুষের জীবনযাত্রার ধরন একপ্রকার পাল্টে গিয়েছে। অন্তত দিনের বেলায় নিজেদের ঘরবন্দি রাখাই শ্রেয় মনে করছেন ব্রিটেনের সাধারণ নাগরিক। এই সময় ব্রিটিশরা ছুটির দিনে পিকনিকে মেতে ওঠেন। ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ভিড় জমান বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে। তার বদলে মানুষ ঘরে থাকতেই বেশি পছন্দ করছেন। স্কুল, কলেজ প্রবল তাপপ্রবাহের জেরে বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্রিটেনের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালের ভারতীয় এক পড়ুয়া এই তাপপ্রবাহের সঙ্গে রাজস্থানের উদয়পুরের গরমের তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, 'গত তিন বছর ব্রিটেনে রয়েছি। এই ধরনের গরম কখনও অনুভব করিনি। চলতি বছরে যা গরম পড়েছে, তাতে উদয়পুরের কথা মনে পড়ছে।'
বাড়িতে নেই পাখা, নাজেহাল ব্রিটিশরা
ব্রিটেন শীতপ্রধান দেশ। এখানে প্রায় ১০ মাস শীতকাল। বাকি দুই মাস গ্রীষ্মকাল। নামেই গ্রীষ্মকাল, তাপমাত্রার পারদ বিশেষ ওপরে ওঠে না। বরং ১০ মাস ঠান্ডার পর ব্রিটেনের সাধারণ মানুষ মনোরম আবহাওয়া উপভোগ করেন। ব্রিটেনে এতদিন যে তাপমাত্রা ছিল, সেখানে পাখার কোনও প্রয়োজন পড়েনি। বাতানুকল যন্ত্র বা এসির কথা কেউ চিন্তাও করতে পারে না। সেখানে চলতি বছর ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা। এই তাপমাত্রায় নাজেহাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ব্রিস্টনের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, 'গরমের জন্য ছেলে-মেয়েদের স্কুল ছুটি দিয়েছে। এত গরমে ছোট ছোট শিশুরা বাড়িতেও টিকতে পারছে না। বাড়িতে অসুস্থ শাশুড়ি রয়েছেন। গরমের জন্য তিনি ঘুমাতে পারছেন না। শারীরিক ও মানসিক প্রভাব পড়ছে।'
অফিস ছুটছেন সাধারন নাগরিকরা
ব্রিটেনের বেশিরভাগ নাগরিকের বাড়িতে এসি বা পাখার হদিশ পাওয়া যায় না। কিন্তু কর্পোরেট অফিসগুলোতে এসি রয়েছে। গরম থেকে রেহাই পেতেই ব্রিটিশদের মধ্যে অফিসে গিয়ে কাজ করার বিষয়ে আগ্রহ দেখতে পাওয়া গিয়েছে। লুক্সেনবার্গে অ্যামাজনের সিনিয়র ব্র্যান্ড ম্যানেজার সুপর্ণা মুখোপাধ্যায় জানান, এত বছর গ্রীষ্মকাল কখন আসে, কখন চলে যায়, তা বুঝতেই পারিনি। ব্রিটেনে বছরের বেশিরভাগ সময় ঠান্ডা থাকে। আমি গরম থেকে রেহাই পেতে প্রতিদিন অফিস যাচ্ছি।
মনে হচ্ছে নরকে বাস করছি
ব্রিটেনে ১৯ জুলাই তাপমাত্রা ছিল ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটাই ব্রিটেনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। ব্রিটেন ছাড়াও ইউরোপের একাধিক জায়গাতে শুষ্ক আবহাওয়া উচ্চ তাপমাত্রা দেখা দিয়েছে। এরফলে ফ্রান্স, পর্তুগাল, স্পেনের একাধিক জায়গায় দাবানল দেখা দিয়েছে। ফ্রান্সের রাজনীতিবিদ মেলানি ভোগাল টুইট করে বলেন, 'মনে হচ্ছে নরকে বাস করছি। আমরা যদি এখনো জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করতে সক্রিয়া ভূমিকা না নেই, তাহলে এভাবেই আমাদের মারা যেতে হবে।'
২৮ শতাংশ বাড়ল জিএসটি কালেকশন! জুলাইতেই সরকারের ঘরে ১৪, ৮৯, ৯৯৫ কোটি