এল নিনো ফিরে আসছে তিন বছর পর, আবহাওয়ায় কী প্রভাব পড়তে চলেছে
এল নিনো ফিরে আসছে তিন বছর পর, আবহাওয়ায় কী প্রভাব পড়তে চলেছে
এল নিনো ফিরে আসছে তিন বছর পর। ২০২০ সালের পর ২০২৩ সাল। আবার এল নিনোর প্রবেশ ঘটতে চলেছে। এর ফলে সারা বিশ্বেই তাপমাত্রার উপর বড় প্রভাব পড়বে। এল নিনো আসার অর্থ গড় তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পাওয়া।
২০২২ সাল ছিল পঞ্চম উষ্ণতম
এল নিনো ফিরে আসার বার্তায় নাসা জানিয়েছে, ঊনবিংশ শতকের শেষ থেকে ২০২২ সালে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ বা আইএমডি অনুসারে ২০২২ সাল ছিল ১২২ বছরের মধ্যে পঞ্চম উষ্ণতম বছর।
কবে প্রথম প্রকাশ্যে আসে এল নিনো
এল নিনোর আক্ষরিক অর্থ হল লিটল বয়। স্প্যানিশ ভাষায় ক্রাইস্ট চাইল্ড। আর এই এল নিনোর ঘটনা প্রথম প্রকাশ্যে আসে ১৬০০ সালে। প্রশান্ত মহাসাগরে দক্ষিণ আমেরিকার মৎস্যজাবীরা প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে লক্ষ্য করেছিলেন এক অদ্ভুত ঘটনা।
তিন থেকে সাত বছরে জলবায়ু প্যাটার্ন বদল
প্রতি তিন থেকে সাত বছরে জলবায়ু প্যাটার্ন বদলে যায় প্রশান্ত মহাসাগরের। প্রতি তিন থেকে সাত বছরের মধ্যে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসে ফিরে আসে এক বিশেষ ধরনের আবহাওয়া। বায়ু, সমুদ্রের স্রোত, মহাসাগরীয় এবং বায়ুমণ্ডলীয় তাপমাত্রা এবং জীবমণ্ডলের মধ্যে ভারসাম্য ভেঙে যায় আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে।
কী ঘটে এল নিনোর সময়?
স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, কী ঘটে এল নিনোর সময়? এল নিনোর এলে বায়ু উষ্ণ হয়ে ওঠে। সেই উষ্ণ বায়ু সমুদ্রপৃষ্ঠের জলকে উষ্ণ করে তোলে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরে এল নিনোর প্রভাব থাকে সবথেকে বেশি। ঠান্ডা জল সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে উঠে আসে না এবং উপকূলীয় জল অস্বাভাবিকভাবে উষ্ণ হয়ে ওঠে। তার প্রভাবে তৈরি হয় নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
এল নিনোর প্রভাব কী?
এল নিনোর ফলে মহাসাগরীয় এলাকা প্রভাব ফেলে সবথেকে বেশি। মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার ক্ষে্ত্রে যেমন প্রভাব ফেলে, ফসল ফলনের উপরও বিধ্বংসী প্রভাব ফেলে। এই এল নিনোর ফলে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি হয়। এল নিনোর কারণে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ এশিযার কিছু অংশে মারাত্মক খরা হতে পারে। এই এল নিনো প্রশান্ত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড় ও টাইফুনের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দেয় বলে জানিয়েছেন আবহবিদরা।
জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
এল নিনো সম্পর্কিত এক গবেষণায় পূর্বে দেখা গিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন এল নিনো। তার ফলে সাব-সাহারান আফ্রিকাতে এমনই গভীর প্রভাব ফেলেছিল যে, তা মানুষের বিবর্তন ঘটিয়েছিল। পর্যায়ক্রমে ভেজা এবং শুকনো আবহাওয়া মানুষকে বিবর্তনের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক গবেষণায় অবদান রাখা লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক মার্ক মাসলিন বলেছিলেন এই গবেষণাগুলি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে প্রাচীন তত্ত্বগুলিকে চ্যালেঞ্জ জানায়।