এডিটার'স মেইলবক্স: ট্রাম্প, বাইডেন আর ভারতীয় ভ্যাক্সিন নিয়ে প্রশ্ন
এডিটার'স মেইলবক্স: ট্রাম্প, বাইডেন আর ভারতীয় ভ্যাক্সিন নিয়ে প্রশ্ন
ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিয়েছেন, তার জায়গায় বসেছেন নভেম্বরে নির্বাচনে জয়ী জো বাইডেন। বলতে গেলে, পুরো সপ্তাহ বিশ্বের চোখ ছিল আমেরিকার দিকে, যেখানে সাম্প্রতিক কালের সব চেয়ে বিতর্কিত প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষে নতুন রাষ্ট্রপতি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।
সে বিষয়ে চিঠি দিয়ে আজ শুরু করছি, লিখেছেন বরিশালের কাউনিয়া থেকে মোহাম্মদ সাইদুর রহমান:
''বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে ১৯শে জানুয়ারি প্রকাশিত "জো বাইডেনের শপথের দিন সৈনিকদের নিয়ে ভয়, দেখা হচ্ছে অতীত" শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়লাম। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, নতুন প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেনের শপথ উপলক্ষে ওয়াশিংটনের বিশাল একটি এলাকাকে কার্যত নিশ্ছিদ্র এক দুর্গে পরিণত করা হয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প যে বিভাজনের বিষ বাষ্প রেখে গেছেন, তার খেসারত শুধু আমেরিকাকে নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশকেও বহু বছর দিতে হবে। ট্রাম্প সমর্থক ও উগ্র-দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র বিক্ষোভের পরিকল্পনা তারই ইঙ্গিত বহন করে। এরা শুধু আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্যই নয়, অন্যান্য দেশের গণতন্ত্রের জন্যও চরম বিপদজনক ও হুমকিস্বরূপ। প্রশ্ন হচ্ছে, জো বাইডেন কি এ বিভাজন ও উগ্র-দক্ষিণপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র তৎপরতা বন্ধ করতে পারবেন?''
জো বাইডেন বলেছেন তিনি আমেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করবেন। কোন সন্দেহ নেই, সে অনুযায়ী অনেক বক্তৃতাবাজি হবে। কিন্তু কাজটি মোটেই সহজ হবে না। মনে রাখতে হবে, মি. ট্রাম্প অত্যন্ত বিতর্কিত এবং বিভাজন সৃষ্টিকারী নেতা হওয়া সত্ত্বেও, প্রায় সাড়ে সাত কোটি আমেরিকান তাকে ভোট দিয়েছে। আমেরিকার প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী মি. ট্রাম্পকেই পুনরায় ক্ষমতায় দেখতে চেয়েছে।
তাদের অনেকে, কোন প্রমাণ ছাড়াই বিশ্বাস করেন যে মি. ট্রাম্পকে কারসাজি করে হারানো হয়েছে। কাজেই তাদের কাছে ঐক্যর বাণীর কোন মূল্য থাকবে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন। অনেক কিছু নির্ভর করবে নির্বাচনে জয়ী ডেমোক্র্যাট পার্টির আচরণের ওপর - তারা তাদের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবে, নাকি তাদের ক্ষমতার অংশীদার করবে, তার ওপর।
এ'বিষয়ে আরো লিখেছেন খুলনার কপিলমুনি থেকে মোহাম্মদ শিমুল বিল্লাল বাপ্পি:
''বিশ্বে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় যে সকল দেশ বলিষ্ঠ ভূমিকা নিয়ে কাজ করে, আমার জানা মতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের অন্যতম। কিন্তু দুনিয়া বিস্ময়ের চোখে তাকিয়ে আছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শুরু হওয়া থেকে এখন পর্যন্ত হামলা, বিক্ষোভ চলমান। এর কারণ কী? ক্ষমতা হস্তান্তর করার আগে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগেরও বা কারণ কী? মার্কিন গণতন্ত্রর জন্য বিষয়টি একটি মন্দ ইতিহাস হয়ে থাকবে কি?''
তা তো অবশ্যই থাকবে মি. বিল্লাল। যে দেশ নিজেকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চা এবং আইনের শাসনের জন্য বিশ্ব সেরা বলে গর্ব করে, সে দেশে এ'রকম ঘটনা দীর্ঘ মেয়াদে নেতিবাচক প্রভাব রাখাই স্বাভাবিক হবে। কিন্তু একই সাথে এই ঘটনা প্রমাণ করেছে আমেরিকার সংবিধান এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া কত শক্তিশালী।
তবে আমেরিকায় যেহেতু সবাই অস্ত্র রাখতে পারেন এবং অনেক রাজ্যে তারা প্রকাশ্যে অস্ত্র বহন করতে পারেন, তাই এ'ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় অনেকেই নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হবেন। সেজন্য রাজধানীতে ২৫,০০০ আধা-সামরিক সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছিল, শুধু পুলিশ দিয়ে কাজ হবে না বলে।
তবে ৬ই জানুয়ারির ঘটনার প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান কড়া পদক্ষেপ নেয়। মি. ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ পদক্ষেপগুলো স্বাগত জানালেও, অনেকেই এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। যেমন বলছেন বাগেরহাটের ফকিরহাট থেকে তন্ময় কুমার পাল:
''গত ৬ই জানুয়ারি ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল হিলে হামলায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে ফেসবুক, টুইটার,ও ইনস্টাগ্রাম থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং উগান্ডায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে পারে এমন কিছু এ্যাকাউন্ট ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বন্ধ করে দিয়েছে। এছাড়া পৃথিবীর বৃহত্তম ওয়েবসাইট হোস্টিং প্রোভাইডার এডব্লিউএস সম্প্রতি পার্লার নামক এ্যাপ হোস্ট করা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠান গুলোর অভিযোগ, এই সব একাউন্ট বা ওয়েবসাইট থেকে সংহিস কথাবার্তা প্রচার করা হচ্ছিল। তবে এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতে মুক্ত ইন্টারনেট এবং মানুষের বাক স্বাধীনতাকে হরণ করবেনা তো?''
আপনি ঠিকই বলেছেন মি. পাল, এই মুহূর্তে অনেকেই টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদির সিদ্ধান্ত সমর্থন করলেও, অনেকেই আশংকা করছেন মাত্র ৫-৬টি কোম্পানি অত্যন্ত ক্ষমতাধর হয়ে উঠেছে, যার ফলে তারা গোটা বিশ্বে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তারের সুযোগ পেয়ে যেতে পারে। এ নিয়ে আগামী দিনগুলোতে যে আরো বিতর্ক হবে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে আইনগত পদক্ষেপও নেয়া হতে পারে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিষয়ে যখন আছি, তখন পরের এই চিঠি উপযুক্ত মনে হচ্ছে, লিখেছেন লালমনিরহাটের গুড়িয়াদহ থেকে আহসান হাবিব রাজু:
''বিবিসি বাংলা ওয়েব-সাইটে খবর পড়তে গেলে বেশির ভাগ প্রধান খবর থাকে জো বাইডেন এবং ট্রাম্পকে নিয়ে। আমি এই বিষয়টি বেশ কয়েক মাস থেকে লক্ষ্য করছি । বিবিসি বাংলা কি শুধু আমেরিকার প্রেসিডেন্টের খবরগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেয়?''
আমেরিকা সম্পর্কে আপনার মতামত যাই হোক না কেন মি. হাবিব, যুক্তরাষ্ট্র যে বিশ্বের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দেশ তা নিয়ে কারো সন্দেহ আছে বলে আমার মনে হয় না। সে কারণে আমেরিকার রাজনৈতিক খবর সব সময় গুরুত্বের সাথে দেখা হয়। আর গত বছর ছিল নির্বাচনী বছর, যে কারণে কয়েক মাস ধরেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং জো বাইডেন খবরে প্রাধান্য পেয়েছে।
আমাদের পরিবেশনা নিয়ে আরেকটি চিঠি, লিখেছেন ঢাকার ধানমন্ডি থেকে শামীম উদ্দিন শ্যামল:
"হোয়াটসঅ্যাপ: নতুন পরিবর্তন কতটা উদ্বেগের কারণ" শিরোনামে ইউটিউবে ছোট একটি ভিডিও ছেড়েছে বিবিসি নিউজ বাংলা। ভিডিওটিতে মূলত হোয়াটসঅ্যাপের কিছু কড়াকড়ি নিয়ম এবং এ থেকে টেলিগ্রাম ও সিগন্যালের দিকে ব্যবহারকারীদের ঝুঁকে পড়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
''এ ভিডিওটি দেখার পর কমেন্টে অতিমাত্রায় ফেসবুক এবং ইউটিউবে বিবিসি নিউজ বাংলাকে গালিগালাজ করা হয়েছে এ অভিযোগে যে, তুরস্কের বিপ নিয়ে আলোচনা করা হয়নি এবং এড়িয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে গালিবাজরা বিবিসিকে মুসলিম বিদ্বেষী বলতে চেয়েছে। তার একদিন পরই বিবিসি নিউজ বাংলা বিপ নিয়ে আরো একটি ছোট ভিডিও বানালো ইউটিউবে। এটার কারণ কি গালিবাজদের থামানো, নাকি এটা সংবাদ পরিবেশনের ধারাবাহিকতার অংশ?''
গালিগালাজ অনেক কারণেই হয় মি. শামীম উদ্দিন, কিন্তু তার কারণে আমাদের সংবাদ পরিবেশনের দৃষ্টিভঙ্গি বদলায় না। তবে বিপ-এর ব্যাপারটা ভিন্ন। ওয়াটস এ্যাপ নিয়ে ভিডিও দেখে অনেকে যখন বিপ-এর কথা বলেন, তখন আমরা খোঁজ নিয়ে একটা অবাক করে দেবার মত তথ্য পেলাম। কিছু দিন আগেইও বাংলাদেশে খুবই কম লোকই বিপ-এর কথা জানতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই এই এ্যাপ বাংলাদেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে এসেছে। সেজন্যই বিষয়টিকে খবর হিসেবে গণ্য করে আমরা প্রতিবেদন করি। আপনি যেমন বলেছেন, সংবাদ-এর ধারাবাহিকতা হিসেবেই বিপ নিয়ে প্রতিবেদন করা হয়।
এবারে ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই। গত সপ্তাহে নারীরা কাজি হিসেবে কাজ করতে পারবে না বলে হাইকোর্টের রায় নিয়ে একটি চিঠি পড়া হয়েছিল। সে বিষয়ে আরো মন্তব্য করে লিখেছেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া থেকে মারিয়া কিবতিয়া ইসলাম:
''মেয়েদের মাসিক বা ঋতুস্রাবের কারণে তাদের কাজি পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে না বলে প্রথমে সরকার এবং পরে হাই কোর্ট রায় দিয়েছে জেনে আমি এবং আমার মতো অনেকেই শুধু অবাক নয়, বরং হতভম্ব! আমাদের সংবিধানে অত্যন্ত স্পষ্ট এবং পরিষ্কার ভাষায় নির্দেশনা রয়েছে যে, সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান। প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ লাভের ক্ষেত্রে সব নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকবে।
''সেই অর্থে কোনো মহিলাকে, সে মহিলা বলে, কাজি পদে চাকরি না দেওয়াটা বা পরবর্তীতে হাই কোর্ট একই কারণে তার রিট খারিজ করা সংবিধানের সঙ্গে মারাত্মকভাবে সাংঘর্ষিক বলেই আমার বিস্ময়! যাই হোক, রায়টি সংবিধানের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে সাংঘর্ষিক হওয়ায় এটা আশা করা যায় যে, আপিল বিভাগে এ রায় বাতিল হয়ে যাবে।''
রায়টি সুপ্রিম কোর্টে বাতিল হতেই পারে মিস ইসলাম, তবে তার আগে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হতে হবে। আমি আইনজীবী না, তাই পুরো প্রক্রিয়া আমার জানা নেই, কিন্তু যিনি হাইকোর্টে বিষয়টি নিয়ে এসেছিলেন, সেই আয়েশা সিদ্দিকা হয়তো আপিল করতে পারেন। দেখা যাক কী হয়।
করোনাভাইরাস নিয়ে দুশ্চিন্তা এবং বিতর্কের মাঝে এখন শুরু হয়েছে ভ্যাক্সিন নিয়ে আলোচনা। বিশেষ করে ভারত থেকে কুড়ি লক্ষ ডোজ ভ্যাক্সিন বিনা মূল্যে, উপহার হিসেবে আসার খবরে বাংলাদেশে বিতর্কের মাত্রা মনে হয়ে একটু বেড়েই গেছে, বিশেষ করে একই সাথে যখন কিছু মানুষের মধ্যে ভ্যাক্সিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার খবরও ছড়াচ্ছে।
এ'বিষয়ে লিখেছেন ঝিনাইদহ থেকে কাজী সাঈদ:
''প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১৬ই জানুয়ারি করোনাভাইরাসের টিকা দেবার কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত, টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় ছয়শ জনের মতো অসুস্থ হয়ে পড়া সহ একজন মারাও গেছেন। টিকা নেওয়া শুরু হয়েছে এমন অন্য দেশ থেকেও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কিছু খবর আসছে। এই যখন অন্য দেশগুলোর পরিস্থিতি, তখন টিকা নেওয়ার ঝামেলা ও ভয়, টিকা পরবর্তী অবস্থা ইত্যাদি বিবেচনা করে বাংলাদেশে টিকার চাহিদা কেমন হতে পারে?''
একই রকম প্রশ্ন তুলেছেন খুলনার দাকোপ থেকে মুকুল সরদার:
''ভারতে টিকা নেবার পর অনেক মানুষের অসুস্থতার খবরে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও আমরা জানিনা ঠিক কোন কোম্পানির টিকার কারণে এতো মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তারপরও এটি খুব প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন, টিকা গ্রহণের পর ভারতে এতো মানুষের অসুস্থতা করোনা ভাইরাসের টিকা গ্রহণে সাধারণ মানুষদের নিরুৎসাহিত করবে কি না?''
টিকা নেবার পর অসুস্থ হবার খবর যখনই ছড়াবে তখন অনেকে ভয় পেয়ে টিকা নিতে চাইবে না, সেটাই স্বাভাবিক মি. সাঈদ, মি. ইসলাম এবং মি. সরদার। আর এ'কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ভ্যাক্সিনগুলো একটু তাড়াহুড়া করেই ব্যবহারের জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। ভারতের নিজস্ব টিকা কোভ্যাক্সিন তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষ হবার আগেই জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমতি পেয়েছে, যেটা অনেক বিশেষজ্ঞকে অবাক করেছে।
তবে, ব্রিটেন, ইউরোপ, আমেরিকা, রাশিয়া, চীনসহ অনেক দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ টিকা নিয়েছে, এবং তাদের মাঝে কোন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। তার মানে, যে পাঁচটি টিকা বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেগুলো নিরাপদ বলেই প্রমাণিত হচ্ছে। যারা ভয় পাচ্ছেন, তারা হয়তবা অকারণেই ভয় পাচ্ছেন। অনেক সময় ভুয়া খবর, অতিরঞ্জিত খবর বা স্রেফ গুজবের কারণে অনেকে ভয় পান।
এবারে আমাদের অনুষ্ঠান নিয়ে একটি প্রশ্ন, পাঠিয়েছেন খুলনার বয়রা থেকে মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম:
''পুরনো বাক্স বাজানো সাবেক শ্রোতারা এখন বিবিসির বারান্দায়ও ভিড়তে পারে না। তাকে স্মার্ট ইউজার হতে হয়। গ্রাউন্ডেড ঠিকানায় চিঠি না পাঠিয়ে আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখতে হয়। মন্তব্য করতে, প্রশ্ন করতে শ্রোতাদেরও প্রতিবেদকের মতো ঝানু হতে হয়। এভাবে প্রযুক্তির সাথে এগিয়ে থাকা বিবিসি নিউজ বাংলা ফেসবুক লাইভে কিছুদিন চলছিল, থেমে গেল কেন? শুধু অনলাইনে দিয়ে সকালের প্রভাতী বা প্রত্যুষার পরীক্ষামূলক সম্প্রচার করা যায় কী?''
ফেসবুকে রেডিও অনুষ্ঠান লাইভ সম্প্রচার অনেক আগেই বন্ধ হয়ে গেছে মি. ইসলাম। রেডিও অনুষ্ঠান ভিডিওর মাধ্যমে করতে গেলে যেভাবে করা উচিত সেটা আমরা করতে পারছিলাম না, এবং শ্রোতা-দর্শকদের মাঝেও তা আশানুরূপ সাড়া ফেলে নি। তবে সকালের অনুষ্ঠান আর শুরু করা যাবে না বলেই আমার মনে হয়। লোকবল এখন ডিজিটালের দিকেই নিয়োজিত করা হচ্ছে।
ফিরে যাচ্ছি চলতি ঘটনা নিয়ে চিঠি দিয়ে। বাংলাদেশে সম্প্রতি ধর্মীয় জলসা, ওয়াজ ইত্যাদি অনুষ্ঠানে উগ্র এবং অসত্য বক্তব্য যাতে না দেয় হয়, সে বিষয়ে সরকার বেশ কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে মনে হয়। সে বিষয়ে লিখেছেন দিনাজপুরের পার্বতীপুর থেকে মেনহাজুল ইসলাম তারেক:
''কেবল শুধু জলসা বা ওয়াজ মাহফিলেই নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবে জ্বালাময়ী বক্তব্যসহ বক্তা ও অনুষ্ঠানের ব্যাপক ছবি ভাইরাল হয়ে চলেছে দিনের পর দিন। এতে দেশে উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গীবাদ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। চলতি পথে বাস-মিনিবাসেও ওয়াজ মাহফিল প্রচার করা হয়, তাতে আপত্তিকর বক্তব্য কৌশলে প্রচার করা হয়।
''এ বিষয়ে তাই আরও নজরদারি জরুরি বলেই মনে করছি। মুসলিমরা ধর্মভীরু বটে, কিন্তু কখনই ধর্মান্ধ নয়। এখানে ধর্মের দোহাই দিয়ে যতগুলো অপকর্ম হয়েছে সবগুলোর নেপথ্যে রয়েছে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ধর্ম ব্যবসায়ীরা। ওয়াজ মাহফিলে কোন বক্তা উস্কানি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিলে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়া উচিত।''
এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয় বলেই মনে হয় মি. ইসলাম। সম্ভবত সেজন্য সরকার খুব সতর্কতার সাথেই তাদের ম্যানেজ করতে চায়। তবে সেখানে যদি জাতিগত বা ধর্মীয় বিদ্বেষ সৃষ্টি করা হয় বা কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা উস্কে দেয়া হয়, তাহলে আইন-শৃঙ্খলা এবং জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থেই প্রশাসনিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
এবারে কিছু চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করা যাক:
দীপক চক্রবর্তী, দেবীগঞ্জ, পঞ্চগড়
মশিউর রহমান মিনু,গোদাগাড়ী রাজশাহী।
আব্দুল্লাহ আর-রায়হান, ঢাকা।
আবদুল হান্নান, কুলাউড়া, সিলেট।
নাজমুল হাসান, চট্টগ্রাম।
মোহাম্মদ মোবারক হোসাইন, মাতুয়াইল, যাত্রাবাড়ী।
সম্পদ কুমার পোদ্দার বলরাম,শেরপুর, বগুড়া।
আরিফুল ইসলাম, পাইকগাছা, খুলনা।