মুহূর্তের মধ্যে গোটা শহর ধ্বংসস্তূপের চেহারা নিল! ভেঙে পড়া হাসপাতালেই চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন ডাক্তাররা
শনিবার সন্ধ্যাতে হঠাত তীব্র ঝাকুনি! কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে একের পর এক বাড়ি। মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংসস্তুপের চেহারা নেয় আস্ত একটা শহর। গত ২৪ ঘন্টা আগে প্রবল কম্পন অনুভূত হয় হাইতির পোর্ট ও প্রিন্স এলাকাতে।
শনিবার সন্ধ্যাতে হঠাত তীব্র ঝাকুনি! কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ছে একের পর এক বাড়ি। মুহূর্তের মধ্যে ধ্বংসস্তুপের চেহারা নেয় আস্ত একটা শহর। গত ২৪ ঘন্টা আগে প্রবল কম্পন অনুভূত হয় হাইতির পোর্ট ও প্রিন্স এলাকাতে।
অন্তত জনবহুল এই এলাকাতে কম্পনের ফলে স্বাভাবিক ভাবে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ৭-এরও বেশী।
শুধু তাই নয়, গোটা দেশকে এত বড় ঝাকুনি দেয় যে আশেপাশের দেশগুলিতেও এই ভূমিকম্পের প্রভাব বোঝা যায়।
ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে
জানা গিয়েছে, প্রবল এই ভূমিকম্পে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সে দেশে। একাধিক সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত প্রবল ভূমিকম্পে ৩০৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ১৮০০ এরও বেশি মানুষ প্রবল এই ঝাঁকুনিতে আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
তবে মৃতের সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। কারণ শহরের চারপাশ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে একের পর এক বহুতল। সেই ধ্বংসস্তূপ এখনও সরানো সম্ভব হয়নি।
এই অবস্থায় সেখানে বহু মানুষ চাপা পড়ে থাকতে পারে বলে অনুমান। তবে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে। তবে ঘটনার পর হাইতির প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল অঁরি ইতিমধ্যে সে দেশে আগামী একমাসব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
আহতদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে
তিনি জানিয়েছেণ, স্থানীয় হাসপাতালগুলি আহতদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। একের পর এক দেহ আসতেই থাকছে। অনেকে বাঁচানো যাচ্ছে অনেকে যাচ্ছে না। তবুও চিকিৎসকরা তাঁদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আরিয়েল অঁরি।
শুধু তাই নয়, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে জীবিত অবস্থায় মানুষকে উদ্ধার করাই তাঁদের মূল টার্গেট বলে জানিয়েছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়াতে ইতিমধ্যে হাইতির ওই শহরের ধ্বংসস্তুপের একের পর এক ভিডিও-ছবি সামনে আসছে।
যেখানে দেখা যাচ্ছে যে চার্জ সহ একাধিক বিল্ডিং ভয়ঙ্কর ভাবে ভেঙে পড়ে রয়েছে। শহরের বড় রাস্তা ভেঙে পড়েছে। চারপাশ জূড়ে আর্তনাদ। নিরাপদের আশ্রয়ে মানুষকে এপাশ থেকে ওপাশ ছুটে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। এক ভয়াবহ পরিস্থিতি হাইতিতে।
১৬০ কিমি দূরে এই কম্পনের উৎসস্থল।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর সেদেশের একাধিক হাসপাতালও ভেঙে পড়েছে। কিন্তু সেই অবস্থাতেই মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডাক্তারররা।
বলা প্রয়োজন পোর্ট ও প্রিন্স থেকে ১৬০ কিমি দূরে এই কম্পনের উৎসস্থল। ভূগর্ভের ১০ কিলোমিটার গভীরে। এই কম্পনের পর সুনামির হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ১০ মিটার পর্যন্ত সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা আবহাওয়াবিদদের। আর সেই কারণে নতুন করে মানুষকে নিরাপদে থাকার কতা বলা হয়েছে।
৫০ শতাংশ মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছিলেন
উল্লেখ্য এর আগে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছিল পোর্ট ও প্রিন্স শহর। সব মিলিয়ে দুলক্ষ্যের মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। আহত হয়েছিল ৩ লক্ষ মানুষ। হাইতির অন্তত ৫০ শতাংশ মানুষ ঘর ছাড়া হিয়েছিলেন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল বিশ্বের ছোট এই শহরটি। নতুন করে সেজে উঠেছিল। মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছিল মানুষজন। এই অবস্থায় ফের এক ধাক্কায়। ভয়াবহ এক কম্পনে সব শেষ। নতুন করে শহরজুড়ে মৃত্যু মিছিল।