ট্রাম্প এবারে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা ঠেকালেন; নির্বাচনের আগে এই নাটক বিস্তর সুবিধা দেবে তাঁকে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ কিছু মিল রয়েছে। মোদীর মতো ট্রাম্পও ভালোবাসেন ফটো-অপ রাজনীতি করতে। যা 'ইনস্ট্যান্ট কফি'র মতোই কার্যকরী। এই যে তিনি আচমকা মনে করলেন উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন-এর সঙ্গে হাত মেলাবেন আর তারপরেই তাঁকে দেখা গেল একেবারে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে কিমের সঙ্গে করমর্দন করেই ফেলতে, তা কিন্তু রাজনীতিতে বেশ 'আউট অফ দ্য বক্স থিঙ্কিং'। কারণ ট্রাম্প জানেন খোদ উত্তর কোরিয়ার ভূমিতে দাঁড়িয়ে প্রথম মার্কিন রাষ্ট্রপতি হিসেবে কিমের সঙ্গে হাত মেলানোর মধ্যে রয়েছে স্থিতাবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার একটি বিপুল বুকের পাটার পরিচয়। আর সামনের বছরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে এমন পদক্ষেপ নিয়ে ট্রাম্প আর যায় করুন, নির্বাচনী রাজনীতিতে ভুল কিছু করছেন না।

এই নিয়ে তিনবার মোলাকাত হল ট্রাম্প ও কিমের
রবিবার কিমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গত এক বছরে ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে তৃতীয়বার মিলিত হলেন। প্রথমবার ছিল সিঙ্গাপুরে গতবছর ১২ জুন আর দ্বিতীয় সম্মেলনটি হয়েছিল এই বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে, ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়তে। যদিও ওই দু'টি আলোচনার কোনওটিকেই সফল বলা চলে না। সিঙ্গাপুরে যাও বা একটি সইসাবুদ হয়েছিল, হ্যানয় সম্মেলন তো মাঝপথেই ভেস্তে যায়।
কিমের দেশ মুখে অনেক কিছু বললেও কাজে কিছুই করেনি
উত্তর কোরিয়ার শাসক কিমের রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক নানা বাধ্যবাধকতার ফলে রাতারাতি ওই দেশটির আচরণে বদল আসা মুশকিল। মুখে নিজেদের পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ করার কথা বললেও পিয়ংইয়াং এখনও তা বাস্তবে প্রয়োগ করেনি। ওয়াশিংটনের পক্ষেও বার বার বলা সত্ত্বেও কিম প্রশাসন এই নিয়ে বড় পদক্ষেপ নেয়নি এখনও। ট্রাম্প নিজেও জানেন যে এখন পর্যন্ত যা কিছু কথাবার্তা, আলোচনা হয়েছে, তা ক্যামেরার মুখেই হাসি ফুটিয়েছে, আসল ক্ষেত্রে কিছুই হয়নি।
কিন্তু ২০২০-র নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের এটি ভাবমূর্তি বানানোর খেলা
কিন্তু রাজনীতি হচ্ছে ভাবমূর্তির খেলা। সামনের বছর নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখার চিত্রটি তাঁর নিজের সমর্থকদের মনে সোনায় গাঁথা থাকবে। বলা হবে যে বার বার তিনি কিমের সঙ্গে শান্তির চেষ্টা করে চলেছেন, তাঁকে শান্তিতে নোবেল দেওয়ার দাবিও ফের জোরালো হবে। ট্রাম্পের বিরোধীরা বলছেন যে তিনি অকারণে একজন একনায়কের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছেন কিন্তু একরোখা রাষ্ট্রপতির তাতে কিছুই এসে যায় না। ট্রাম্প রয়েছেন ট্রাম্পেই। তিনি কোনও মতাদর্শ, রাজনৈতিক প্রটোকলের ধার ধারেন না। আর এখানেই তাঁর কূটনীতির সবচেয়ে বড় জয়।