For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

গান গাইলে কি আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়?

মানসিক স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে, ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে সেইসঙ্গে স্মৃতিভ্রষ্ট রোগের সাথে মোকাবেলা করতে মানুষের জীবনে গান গাওয়া বড় ধরণের ভূমিকা রাখে বলছেন গবেষকরা।

  • By Bbc Bengali

স্পাইস গার্লসের কনসার্ট
Getty Images
স্পাইস গার্লসের কনসার্ট

গান গাওয়া একদিকে যেমন আমাদের মনকে প্রফুল্ল রাখে, তেমনি গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি আমাদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নে বড় ধরণের ভূমিকা রাখে।

বিশেষ করে এতে ফুসফুসের অবস্থার উন্নতি হয় সেইসঙ্গে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রষ্ট রোগ মোকাবেলা করতেও সাহায্য করে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ অব লন্ডনের অধ্যাপক ডেইজি ফ্যানকোর্ট বলেন, "গান গাইলে কোর্টিসলের মতো স্ট্রেস হরমোন বা মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী হরমোনের পরিমাণ কমে যায়।"

"এছাড়া এটি এন্ডরফিন হরমোনের নি:সরণেও সাহায্য করে। যে হরমোনের মাত্রার ওপর আমাদের মেজাজ ভাল থাকা-না থাকা নির্ভর করে।"

একাধিক প্রভাব

অধ্যাপক ফ্যানকোর্টের মতে, গান গাওয়ার নানাবিধ স্বাস্থ্য সুবিধা রয়েছে।

এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আমাদের মানসিক অভিব্যক্তি, যেটা কিনা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

এটি সামাজিক মিথস্ক্রিয়া বা মানুষের সঙ্গে ভাব আদান প্রদানে সাহায্য করে। ফলে মানুষের মধ্যে থাকা বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি হ্রাস পায়।

"যারা নিয়মিত কনসার্টে যান - সেটা হোক ক্লাসিক সঙ্গীত বা রক মিউজিকের -তাদের প্রত্যেকের প্রায় একই হারে স্ট্রেস হরমোন কমেছে বলে জানা গেছে", বলেন মিজ. ফ্যানকার্ট।

গবেষকরা আরও যোগ করেছেন যে, "গুরুতর এবং স্থায়ী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় যারা দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন, তাদের এমন সমস্যা থেকে বের করে আনতে গান গাওয়া বড় ধরণের উপকারে এসেছে।।"

আরও পড়তে পারেন:

কোন গান বা সুর মাথায় গেঁথে যায় কেন?

'রমজানের ঐ রোজার শেষে’ গান জনপ্রিয় কিভাবে হল?

সৌদি আরবে নিকি মিনাজের কনসার্ট নিয়ে বিস্ময়

শিশু
Getty Images
শিশু

ধ্যান

জার্মানিতে বসবাসকারী গায়ক অ্যানবেল গান গাওয়া মাত্রই এর প্রভাব তার দেহ ও মনে প্রতিফলিত হয় বলে জানান।

প্রতি বৃহস্পতিবার তিনি তিন ঘণ্টা গান গাওয়া অনুশীলন করেন।

"যখন আমি গান করি, তখন আমার মনে হয় আমি ধ্যান করছি। আমি নিজেকে সঙ্গীতের ভেতর ডুবিয়ে দেই। আর এ কারণে আমি ভেতর থেকে সত্যিই ভাল বোধ করি।"

স্মৃতিভ্রষ্ট রোগ বা ডিমেনশিয়া

সঙ্গীত, বিশেষ করে গান গাওয়া, ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রষ্ট রোগে আক্রান্ত রোগীদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে অনেকটা ওষুধের মতো কাজ করে।

এজন্য গানকে থেরাপি হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

"যখন আমরা গান করি, তখন আমাদের মস্তিষ্কের পিকর্টিক্যাল অংশে রক্তের প্রবাহ বাড়ে। মস্তিষ্কের এই অংশটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণেই মানুষের ডিমেনশিয়া হয়ে থাকে", জানান ড. সাইমন ওফার।

"যখন ডিমেনশিয়া রোগীরা গান গেয়ে ওঠেন বা গান শোনেন, তখন তারা অনেকটা ঘুম থেকে জেগে ওঠার অনুভূতি এবং বিভিন্ন কাজে নিজেদের আরও গভীরভাবে জড়িয়ে নেন।"

গান থেরাপি।
Getty Images
গান থেরাপি।

মেজাজের উন্নয়ন

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক দাতব্য সংস্থা 'মাইন্ড সং' নিয়মিতভাবে তাদের গায়কদেরকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠান যেন তারা সেখানে বসবাসকারী সবাইকে গান গাইতে উৎসাহিত করতে পারেন।

এর পরের ফলাফল আশ্চর্য হওয়ার মতোই।

"একটি দলের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে গান গাওয়ার কারণে ঐ বয়স্ক ব্যক্তিদের পরের দিন পর্যন্ত মেজাজ ভাল থাকতো",বলে জানান ঐ বৃদ্ধাশ্রমের এক তত্ত্বাবধায়ক।

মাইন্ড সং-এর পরিচালক ম্যাগি গ্র্যাডি বলেন,"দলীয়ভাবে গান গাইলে মানুষ তাদের মানসিক অসুস্থতা থেকে অনেকটাই বেরিয়ে আসতে পারে, তারা নিজেদের মূল্যায়ন করতে শেখে এবং এতে তাদের নিজেদের প্রতি আস্থা বৃদ্ধি পায়।"

লিবার্টি কোইর বন্দিদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর এবং সমাজে পুনরায় সংহত করতে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ কারাগারে একটি প্রোগ্রাম পরিচালনা করে।

এম জে পারানজিনোর পরিচালক লিবার্টি কোয়ের ব্রিটেনের জেলখানায় থাকা বন্দীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি কর্মসূচি পরিচালনা করেন, যেন তারা ছাড়া পাওয়ার পর সমাজে আগের মতো সহজেই মিশে যেতে পারে বা নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে।

"বন্দীরা শুরুতে শুরুতে এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে চায়নি। কিন্তু গান গাওয়া শুরু করার পরে তারা আগের চাইতে অনেক বেশি চোখে চোখ রাখার সাহস অর্জন করতে পেরেছিল" ,বলেন লিবার্টি কোয়ের।

এছাড়া দলীয় সংগীত একাকীত্ব ও সংকোচ কাটাতে, আড়ষ্টতা দূর করে আত্মবিশ্বাসী করতে, এমনকি ব্যক্তির সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে বলে তিনি মনে করেন।

বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন:

পদত্যাগ করলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত

বিশ্বকাপের ফরম্যাট বদলানো উচিৎ, বলছেন কোহলি

পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগার গুজব কেন?

খাদ্যে ক্যান্সারের অণুজীব খুঁজে দেবে মোবাইল অ্যাপ

মাসাই গান
Getty Images
মাসাই গান

ফুসফুসের উন্নয়ন

মাইন্ড সং নামের ওই দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি ফুসফুসে আক্রান্ত রোগীদের সংগীতের পাঠ দিয়ে থাকেন।

তাদের মধ্যে হাঁপানি রোগী থেকে শুরু করে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী পর্যন্ত রয়েছেন।

পাঁচ বা ছয়টি গানের সেশনে যোগ দেওয়ার পর সেখানকার বেশ কয়েকজন অংশগ্রহণকারীদের শ্বাসপ্রশ্বাসে বড় ধরণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে

ফুসফুস
Getty Images
ফুসফুস

হরমোন

গান গাওয়ার কারণে শরীরে এন্ডোরফিন নামের হরমোন নি:সরিত হয়, যার সঙ্গে আমাদের মানসিক তৃপ্তি জড়িত।

গান গাওয়ার সময় আমাদের গভীর শ্বাস নিতে হয়, যা শরীরের চারপাশে রক্ত প্রবাহ বাড়াতে এবং এন্ডোরাফিনের প্রভাব বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

আমরা যখন অনেক হাসাহাসি করি বা চকোলেট খাই, তখন আমাদের শরীরে এন্ডোরাফিনের ঝড় বয়ে যায়।

এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, ৪০ মিনিট ধরে দলীয় গান গাওয়ার পরে মানুষের শরীরে কর্টিসোল বা স্ট্রেস হরমোন স্বাভাবিক সময়ের চাইতে বেশি হারে নি:সরিত হয়েছে।

আমাদের কর্টিসলের মাত্রা সাধারণত দিনের শেষে বন্ধ হয়ে যায়, তবে গান গাইলে এর নি:সরণের গতি আরও বাড়ে।

আফগানিস্তানের গায়ক দল।
Getty Images
আফগানিস্তানের গায়ক দল।

এছাড়া গান গাইলে অক্সিটোসিন হরমোন উৎপাদন হয়। যাকে কখনও কখনও 'প্রেমের হরমোন' বলা হয়।

আমরা যখন প্রিয় কাউকে আলিঙ্গন করি তখন অক্সিটোসিন হরমোন নি:সরণ হয়।

এই হরমোন বিশ্বাস এবং বন্ধনের মতো মানবিক অনুভূতিগুলোকে বাড়াতে সাহায্য করে।

গান গাইলে মস্তিষ্কে নিউরোট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করা ডোপামিন হরমোনও নি:সরিত হয়।

এটি মন মেজাজ ভাল রাখতে বা ভাল অনুভূতি জাগাতে সাহায্য করে।

English summary
Does our health improve with singing a song
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X