প্রাণী থেকে মানবদেহে রোগের সংক্রমণ, দায়ী মানুষই, দাবি নতুন সমীক্ষার
প্রাণী থেকে মানবদেহে রোগের সংক্রমণ, দায়ি মানুষই, দাবি নতুন সমীক্ষার
বুধবার একটি বড় সমীক্ষা দেখিয়েছে যে, 'মানবজাতির ক্রিয়াকলাপ পশুদের আবাসকে ধ্বংস করে দেয় এবং রোগ–বহনকারী বন্য প্রাণীকে আমাদের আরও নিকটবর্তী করতে বাধ্য করায় বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কোভিড–১৯ আরও সাধারণ হয়ে উঠবে।’
হ্রাস পেয়েছে জীববৈচিত্র্য
এই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, অবৈধ শিকার, যান্ত্রিক কৃষিকাজ এবং ক্রমবর্ধমান নগরায়নের জীবনযাত্রার ফলে সাম্প্রতিক দশকগুলিতে বন্য প্রাণীদের ধ্বংসাত্মক জনসংখ্যা এবং গৃহপালিত পশুর প্রাচুর্য বৃদ্ধি পেয়ে ব্যাপকহারে জীববৈচিত্র্য হ্রাস পেয়েছে। প্রায় ৭০ শতাংশ মানবদেহের রোগের জীবাণু জুনোটিক, এর অর্থ কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোভিড-১৯-এর মতো ভাইরাস পশু থেকে মানুষের মধ্যেও ছড়াতে পারে। মার্কিনি গবেষক লক্ষ্য করে দেখেছেন যে ১৪০টিরও বেশি ভাইরাস যেটি পশু থেকে মানুষেকর মধ্যে ছড়ায় এবং তাদের বিপন্ন প্রজাতির আইইউসিএন এর লাল তালিকার সঙ্গে ক্রস-রেফারেন্স করা হয়েছে। গবেষকরা জানিয়েছেন যে বাড়ির মধ্যে থাকে এমন প্রাণী যেমন প্রাইমেটস, বাদুড় ও ইঁদুর সবচেয়ে বেশি প্রায় ৭৫ শতাংশ জুনোটিক ভাইরাস বহন করে।
ধ্বংস হচ্ছে প্রাণীর প্রাকৃতিক বাসস্থান
কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গে গবেষকরা এও জানিয়েছেন যে মানবজাতির ক্রিয়াকলাপ এবং জনসংখ্যার বাড়ার কারণে প্রাণীদের মধ্যে এই ভাইরাসের ঝুঁকি হারাতে বসেছে। এই গবেষণার মূল লেখক ক্রিস্টিয়ানো জনসন বলেন, ‘কীভাবে বন্যজীবনের শোষণ এবং বিশেষত প্রাকৃতিক বাসস্থান ধ্বংস করে আমাদের উদীয়মান সংক্রামক রোগের ঝুঁকিতে ফেলেছে তা তুলে ধরেছি আমরা।' গত বছর রাষ্ট্রপুঞ্জের জীববৈচিত্র্য সম্পর্কিত প্যানেল হুঁশিয়ারি দিয়েছিল যে মানব ক্রিয়াকলাপের ফলে দশ মিলিয়ন প্রজাতি বিলুপ্তির মুখোমুখি হয়েছিল।
মানুষ–প্রাণী সংস্পর্শ বাড়ছে
ল্যান্ডমার্ক মূল্যায়নে দেখা গেছে যে পৃথিবীতে ৭৫ শতাংশ জমি এবং ৪০ শতাংশ মহাসাগর মানবজাতির দ্বারা ইতিমধ্যে মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। অরণ্য ধ্বংস করে বিশেষ করে বন্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর উপর ক্রমবর্ধমান চাপ চাপিয়ে দিচ্ছে, যা নগরায়নের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে লড়াই করে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরাই বাধ্য করছি আমাদের সংস্পর্শে প্রাণীদের আসতে এবং অন্য এক কোভিড-১৯-এর ঝুঁকি বাড়ছে।'