For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: মুক্ত চিন্তার জায়গা কমে যাচ্ছে?

বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা অধ্যাদেশের মূল বিষয় ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় হবে স্বায়ত্তশাসিত এবং সেখানে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ থাকবে। কিন্তু অনেকে মনে করেন, শত বছরের মাথায় এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ দু

  • By Bbc Bengali

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল
Getty Images
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল

ইতিহাসবিদদের মতে, ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তখন এর একটি রাজনৈতিক দিক ছিল । 'বঙ্গভঙ্গ' বাতিল করার রাজকীয় ক্ষতিপূরণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় বলে তারা মনে করেন।

১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে পূর্ব বাংলা ও আসামকে নিয়ে একটি আলাদা প্রদেশ গঠন করা হয়। কিন্তু হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রবল বিরোধিতার মুখে ১৯১১ সালে 'বঙ্গভঙ্গ' রদ বা বাতিল করা হয়।

ব্রিটিশ এবং পাকিস্তানেও ঔপনিবেশিক আমলে পূর্ব বাংলার সমাজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। সেই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল।

সেই অধ্যাদেশের মূল বিষয় ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় হবে স্বায়ত্তশাসিত এবং সেখানে স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সুযোগ থাকবে।

কিন্তু অনেকে মনে করেন, শত বছরের মাথায় এসে বিশ্ববিদ্যালয়ে এ দুটো বিষয় হারিয়ে যাচ্ছে।

আরো পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধিতা করেছিলেন যারা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশে অবনতি কেন

ক্লাসে ফিরতে চান ঢাবি শিক্ষক রুশাদ ফরিদী

ঢাবিতে সরকারপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে কেন এই কোন্দল

কলা ভবনের সামনে অপরাজেয় বাংলাদেশ
BBC
কলা ভবনের সামনে অপরাজেয় বাংলাদেশ

কতটা আছে স্বায়ত্তশাসন?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে দুটো কমিশন গঠন করা হয়েছিল। একটি হচ্ছে নাথান কমিশন এবং অপরটি হচ্ছে স্যাডলার কমিশন।

নাথান কমিশন সুপারিশ করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠবে। অন্যদিকে স্যাডলার কমিশন এর বিরোধিতা করে বলেছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, যেখানে মুক্ত চিন্তা থাকবে।

মি: স্যাডলার ছিলেন ব্রিটেনের লিডস ইউনিভার্সিটির উপাচার্য। ১৯৭৩ সালে যে বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ জারি করা হয়, সেখানে মি. স্যাডলারের সেই দর্শনের ধারাবাহিকতা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মনে করেন, স্বায়ত্তশাসনের সাথে মুক্ত চিন্তা এবং জ্ঞানের স্বাধীন বিকাশ জরুরী।

"বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত হওয়া দরকার। আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ স্বাধীন হওয়া দরকার," বিবিসি বাংলাকে বলেন মি: চৌধুরী।

তবে গত প্রায় দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের চরিত্র অনেকটাই বিঘ্নিত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

অধ্যাপক চৌধুরী বলেন, স্বায়ত্তশাসন কাজ করেনি দুই কারণে। প্রথমটি হচ্ছে, বিভিন্ন সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর প্রভাব রাখতে চেয়েছে। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ বিভিন্ন সরকারের সাথে যোগাযোগ রেখেছে। এসব কারণে স্বায়ত্তশাসন বিঘ্নিত হয়েছে বলে মনে করেন অধ্যাপক চৌধুরী।

বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর:

পূর্ব রাজাবাজারের লকডাউনে কি আসলে কোন কাজ হয়েছে?

করোনাভাইরাসে ষাটোর্ধ বয়সের মানুষের মৃত্যুর হার বেশি

ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান লতিফুর রহমান মারা গেছেন

দোকান খোলা রাখায় যেভাবে ভারতে বাবা-ছেলেকে পিটিয়ে মারল পুলিশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার
BBC
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার

শিক্ষকদের রাজনৈতিক মত কেন?

১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশে পরিষ্কার বলা আছে, শিক্ষকরা রাজনৈতিক মত প্রকাশ করতে পারবেন এবং তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আইনসংগত প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত থাকলে কোন অসুবিধা হবেনা।

বিভিন্ন সময় দেখা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সরাসরি যুক্ত হয়েছে।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পূর্বে আইয়ুব খানের শাসনামলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের রাজনৈতিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না।

অধ্যাপক চৌধুরী বলেন, ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী শিক্ষকদের যে সুযোগ দেয়া হয়েছে সেটি সঠিক ছিল।

"আমরা চেয়েছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবেই নয়, আমরা চেয়েছিলাম গণতন্ত্রের চর্চার একটি আদর্শ স্থান হিসেবে গড়ে তুলতে। সেজন্যই সর্বস্তরে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল," বলেন অধ্যাপক চৌধুরী।

"বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত থাকবেন না - এটাই বা আমরা কেমন করে আশা করবো?

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা তো অগ্রসর চিন্তার মানুষ। তাদের তো রাজনৈতিক মত আছে। এই অধিকারটা শিক্ষকদের থাকা দরকার।"

অধ্যাপক চৌধুরী মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা রাজনৈতিক দলের সমর্থক হলেও সেই সমর্থন যেন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংক্রমিত না হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস
BBC
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস

মুক্ত চিন্তার জায়গা আছে?

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অনেকে মনে করেন, গত চার দশকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব হবার কারণেই শিক্ষকদের অনেকে আরও বেশি মাত্রায় দলীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। ফলে মুক্ত চিন্তার জায়গাও সংকুচিত হয়েছে।

স্বায়ত্তশাসন, শিক্ষক রাজনীতি এবং মুক্ত চিন্তা - এ তিনটি বিষয় একটি অপরটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে মনে করেন শিক্ষকরা।

তাদের যুক্তি হচ্ছে, বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার জন্য একটি স্বাধীন পরিবেশ দরকার।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন মনে করেন, শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পরে একদিকে সামরিক শাসন ও ডানপন্থী রাজনীতির উত্থান এবং এর বিপরীতে বাম গণতান্ত্রিক শক্তি শিক্ষকদের মধ্যে দানা বাঁধলো। সেই আদর্শিক রাজনীতি পরবর্তীতে ক্রমেই দলীয় রাজনীতিতে রূপান্তরিত হয়েছে বলে কাবেরী গায়েন উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, "এই দলীয় রাজনীতির ফলে যেটা দাঁড়ালো সেটা হচ্ছে, যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসছে সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে পরিবর্তন হচ্ছে। কেমন করে যেন সেই স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় বিলুপ্ত হয়ে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হলো। ফলে আমাদের মুক্তি বুদ্ধি চর্চার জায়গাটি ভয়াবহভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। "

"যখন কোন একটা নেশনের একেবারে হাইয়েস্ট একাডেমিক প্রতিষ্ঠানে থেকেও যখন আপনাকে কথা বলার জন্য দুইবার চিন্তা করতে হয়, তখন সেখানে মুক্ত জ্ঞানের উৎপাদন কিভাবে করবেন?"

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অনেকে বলেন, শতবছরের মাথায় এসে মত প্রকাশ করার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে এক ধরণের ভয় এবং দ্বিধা কাজ করে।

English summary
Dhaka University: Is the space for free thought declining?
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X