গাজায় মৃতের সংখ্যা ১৭০০ ছাড়াল, জবাবি হামলা চলবেই, বলল ইজরায়েল
আরও পড়ুন: সংঘর্ষ চলাকালীনই ইজরায়েলকে ২২.৫০ কোটি ডলার সহায়তা আমেরিকার
২৭ দিন ধরে চলছে ইজরায়েল-হামাস সংঘর্ষ। দু'পক্ষ মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা ১৭০০ ছাড়িয়েছে। ইজরায়েলের তরফে মারা গিয়েছে ৬৩ জন। বাকিটা প্যালেস্তাইনের তরফে! বলা ভালো, ২০০৬ সালের পর এ বারই ইজরায়েলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এর মূল কারণ, হামাসের সুড়ঙ্গযুদ্ধ। ইজরায়েলের গোপনে সেঁধিয়ে যাওয়ায় উদ্দেশ্যে সীমান্ত বরাবর অন্তত ৬০টি সুড়ঙ্গ খুঁড়েছে হামাস জঙ্গিরা। এর ভিতরে তারা লুকিয়ে থাকছে, গোলাবারুদ ঠেসে রাখছে। ইজরায়েলি সেনারা সুড়ঙ্গের সন্ধান পেয়ে তল্লাশিতে নামলেই গেরিলা কায়দায় শুরু হচ্ছে আক্রমণ।
সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ, আমেরিকা ও ব্রিটেনকে বললেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু
গত শুক্রবার এমনই একটি সুড়ঙ্গের সন্ধান দিয়েছিল গোয়েন্দারা। খবর পেয়ে ইজরায়েলি সেনার একটি দল রাফা শহরের উপকণ্ঠে তল্লাশি চালাতে যায়। তিনজন সেনা অফিসার মেজর বিনাই সারেল, সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হাডার গোল্ডিন ও স্টাফ সার্জেন্ট লিয়েল গিডোনি সুড়ঙ্গের ভিতর ঢোকেন। বাইরে দাঁড়িয়ে পাহার দিচ্ছিল সহকর্মীরা। তখনই প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ হয় ভিতরে। তার সঙ্গে গুলিবৃষ্টি। খণ্ডযুদ্ধের পর পিঠটান দেয় হামাস জঙ্গিরা। মেজর বিনাই সারেল ও স্টাফ সার্জেন্ট লিয়েল গিডোনির শব উদ্ধার হলেও হাডার গোল্ডিনকে পাওয়া যায়নি। সন্দেহ করা হচ্ছিল, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। কিন্তু শনিবার হাডার গোল্ডিনের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয় সুড়ঙ্গের ভিতর থেকেই। তাঁর চোখ ফুঁড়ে গুলি বেরিয়ে গিয়েছিল। হামাস জঙ্গিদের ছোড়া বোমায় উড়ে যায় খুলির একাংশ। গলা, তলপেট ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল গুলিতে। তাই হাডার গোল্ডিন ও বাকি দুই সেনার মৃত্যুর বদলা নিতে আক্রমণ আরও জোরদার করার কথা ঘোষণা করেন ফৌজি কর্তারা। রবিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই ঘুমন্ত গাজার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইজরায়েলের বোমারু বিমান। সকাল পর্যন্ত চলে দিগ্বিদিক কাঁপিয়ে হামলা।
ইজরায়েল সরকারের শীর্ষকর্তাদের উদ্ধৃত করে ইহুদি সংবাদপত্র 'হারেৎজ' জানাচ্ছে, হামাসের সঙ্গে আর আলোচনায় বসা হবে না। কোনও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ততক্ষণ সায় দেওয়া হবে না, যতক্ষণ না হামাসের শক্তিকে শেষ করা সম্ভব হবে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, "আমাদের নাগরিকদের বাঁচাতে যখন যেখানে দরকার আমরা ফৌজ মোতায়েন করব। শেষ সুড়ঙ্গটা খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।" পাশে থাকার জন্য তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনকে ধন্যবাদ জানান। আকাশপথে হামলা, রকেট আক্রমণের পাশাপাশি ট্যাঙ্ক হামলা বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, হামাসের গুপ্ত হামলা ও তার জবাবে ইজরায়েলের এমন কঠোর মনোভাব, দু'টোই বিপজ্জনক। আগামী কয়েকদিনে যুদ্ধ থামবে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে গাজায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চলবে, সন্দেহ নেই।