৮৩ বছর পরে চিঠি এল ঘরে, অ্যাদ্দিনে মা-মেয়ে গিয়েছে মরে!
১৯৩১ সালের গ্রীষ্মে মাকে চিঠি লিখেছিলেন মেরিয়ান ম্যাকমিশেল। মেইন রাজ্যের হিউলটন শহর থেকে। মা থাকতেন ম্যাসাচুসেটস রাজ্যের পিটসফিল্ড শহরে। দূরে চাকরি করতে এসে কতটা মায়ের অভাব বোধ করছেন, মায়ের হাতের তৈরি স্যান্ডউইচ কতদিন খাননি, এ সবই ছিল আবেগঘন চিঠির বিষয়বস্তু। লেখার পর তিনি চিঠিটি পোস্টও করেন। খুব বেশি হলে সে যুগে মাসখানেক লাগত চিঠিটি যেতে। কিন্তু তা এসে পৌঁছয় গতকাল অর্থাৎ ৩ জুলাই, ৮৩ বছর পর!
গতকাল সকালে পিটসফিল্ড ডাকঘরের কর্মী মাইকেল রোয়েল চিঠি বাছাই করতে গিয়ে নজর করেন একটি হলুদ রঙের বিবর্ণ হয়ে যাওয়া খাম। তিনি বলেন, "দুই সেন্টের স্ট্যাম্প মারা ছিল চিঠিতে। দেখেই বুঝি, পুরনো। কিন্তু তারিখটা খেয়াল করতে বিস্মিত হই। ১৯৩১ সালে লেখা চিঠি। মনে হয়, কাগজপত্রের স্তূপে কোথাও ঢুকে গিয়েছিল। তবে কাগজটা হলদে হয়ে গেলেও টানা হাতের লেখা স্পষ্ট পড়া যায়।"
এর পরের ঘটনাও আরও মজাদার! ডাকঘরের কর্মীরা খুবই 'লজ্জিত' হয়ে চিঠিটি নিয়ে যান নির্দিষ্ট ঠিকানায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মা-মেয়ে দু'জনই এই দুনিয়া ছেড়ে চলে গিয়েছেন অনেক দিন আগে। ম্যাকমিশেল পরিবারের কেউ আর পিটসফিল্ডে থাকেন না। তা হলে? পড়শিরা জানান, আজ থেকে ৪০ বছর আগে ওই পরিবারের বাকিরা বসত উঠিয়ে চলে গিয়েছেন স্কোহেগান শহরে। সঙ্গে সঙ্গে স্কোহেগান ডাকঘরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দেখা যায়, ম্যাকমিশেল পরিবারের এক উত্তরসূরী থাকেন সেখানে। নাম অ্যান ম্যাকমিশেল। তাঁর বয়স এখন ৭০ বছর! তিনি চিঠিটি নিয়ে বিলকুল ভেবলে যান। আর পুনঃপুন ক্ষমা চাওয়া হয় ডাক বিভাগের তরফে।
প্রশ্ন উঠেছে, ডাককর্মীদের বিরুদ্ধে কি গাফিলতির অভিযোগ এনে মামলা করবেন অ্যান ম্যাকমিশেল? কিন্তু কাকে সাজা দেবে আদালত? যে ডাককর্মীদের গাফিলতিতে সেই সময় চিঠিটি পৌঁছয়নি, তাঁরাও তো অক্কা পেয়েছেন এতদিনে। তবে এই চিঠির জেরে স্কোহেগান শহরে অ্যান ম্যাকমিশেল সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছেন হঠাৎ।