করোনা ভাইরাস: বাংলাদেশে লকডাউন 'অকার্যকর' হয়ে পড়ছে
করোনা ভাইরাস: বাংলাদেশে লকডাউন 'অকার্যকর' হয়ে পড়ছে
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকার যে 'লকডাউন' ঘোষণা করেছে সেটি দ্বিতীয় দিনের মাথায় এসে কার্যত ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে।
লকডাউনের সময় দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় মঙ্গলবার সকালে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় অনেক দোকানপাট খোলা রয়েছে। গণ-পরিবহন ছাড়া স্থানীয়ভাবে প্রায় সব ধরণের পরিবহনই চলাচল করছে।
বনানী, মহাখালী এবং মগবাজারসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় কার্যত যানজট চোখে পড়েছে।
সরকারি বিধিনিষেধ অমান্য করার বিষয়টি চোখে পড়েছে রাজধানী ঢাকায়। মিরপুর এবং শ্যামলী এলাকায় ঘুরে দেখা গেল বেশ কিছু দোকানপাট খোলা রয়েছে যেগুলো অত্যাবশ্যকীয় নয়।
মিষ্টির দোকান, গাড়ির গ্যারেজ, লন্ড্রি সার্ভিসসহ বিভিন্ন ধরণের দোকানপাট খোলা দেখা যায়। তবে ঢাকা শহরের বড় মার্কেটগুলো বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়তে পারেন:
- লকডাউনকে ঘিরে ফরিদপুরে সংঘর্ষ, পুলিশের গুলিতে একজন নিহত
- হেফাজতে ইসলামের নতুন নেতৃত্বের সাথেই কি সরকারের আসল বিবাদ?
- আমেরিকার একটি বাড়ি থেকে ৬ বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার, যা জানা যাচ্ছে
মিরপুর এক নম্বরের একটি মিষ্টির দোকানের এক কর্মচারী জানান, দোকানে বসে কাউকে খেতে দেয়া হচ্ছে না। সবাই মিষ্টি ক্রয় করে সাথে সাথে চলে যাচ্ছে।
"আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দোকান পরিচালনা করছি," বলছিলেন সে কর্মচারী।
ঢাকার রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যাও ছিল বেশি। পাবলিক বাস ছাড়া অন্য সব পরিবহন চলাচল করছে রাস্তায়।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামেও লকডাউনের চিত্র বেশ ঢিলেঢালা। অত্যাবশ্যকীয় নয় এমন দোকানপাটও খোলা রয়েছে।
গণ-পরিবহন ছাড়া সব ধরণের যানবাহন চলাচল করছে রাস্তায়।
চট্টগ্রামের বাসিন্দা রাকিবউদ্দিন জানান, দোকানপাট খোলা থাকলেও ক্রেতার কম। কারণ লকডাউন ঘোষণা করার পরে বহু মানুষ শহর ছেড়ে তাদের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছেন।
লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে রাজশাহী শহরে বেশিরভাগ দোকানপাট খোলা রয়েছে বলে জানান সাংবাদিক আনোয়ার আলী।
তিনি জানান, লকডাউনের প্রথম দিন দোকান খোলা দাবিতে শহরের সাহেব বাজার মোড়ে ব্যবসায়ীরা সড়ক অবরোধ করেছিল।
শহরের আরডিএ মার্কেটের বেশিরভাগ দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা কম।
"তবে ক্রেতা একেবারে নেই এ কথা বলা যাবে না। ব্যবসায়ীরা যেভাবে দোকানপাট খুলেছে সেটিও এক ধরণের প্রতিবাদের মতোই," জানান আনোয়ার আলী।
সিলেট থেকে সাংবাদিক আহমেদ নূর জানিয়েছেন, শহরের পরিস্থিতি দেখে লকডাউন বোঝা যাছে না। তিনি জানান, দোকানপাট খোলা রাখার দাবিতে সিলেট শহরে ব্যবসায়ীরা মঙ্গলবার বিক্ষোভ করেছে।
মি. নূর বলেন, শহরের প্রধান শপিং-মলগুলো বন্ধ থাকলে অন্যান্য দোকানপাট খোলা হয়েছে।
তিনি বলেন, "নিত্যপ্রয়োজনীয় নয় এমন দোকান খোলা আছে। আজ শহরে যানবাহন বেড়েছে। গত বছর এরচেয়ে ভালো ছিল। সন্ধ্যের পরে দোকানপাটও বন্ধ হচ্ছে না।"
এদিকে সোমবার লকডাউনের সময় সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে দোকান খোলা রাখলে জরিমানা করতে ভ্রাম্যমান আদালত। তখন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদের মুখে ভ্রাম্যমান আদালত জরিমানা করেনি।
দোকান খোলা রাখার দাবিতে ঢাকা-পঞ্চগড় মহাসড়ক অবরোধ করে ব্যবসায়ীরা।