For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ক্রিকেট: বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের খাদ্যাভ্যাস কী, কী খাওয়া উচিৎ তাদের?

একজন ক্রিকেটার যে অনুশীলন করেন সেটা আসলে তার শরীর থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে ক্ষয় করে এবং সেটাই পূরণ করতে প্রয়োজন সঠিক খাবার।

  • By Bbc Bengali

ভিরাট কোহলিকে মনে করা হয় তিনি ভারতের ক্রিকেটে ফিট থাকার সংস্কৃতির বাহক
Getty Images
ভিরাট কোহলিকে মনে করা হয় তিনি ভারতের ক্রিকেটে ফিট থাকার সংস্কৃতির বাহক

বাংলাদেশের সিনিয়র-জুনিয়র সব পর্যায়ের ক্রিকেটারদের নিয়েই একটা সাধারণ কথা শোনা যায় যে, তারা ভাত খেতে খুব পছন্দ করেন।

বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের একসময়কার মেন্টর ও বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সম্প্রতি খাওয়াদাওয়াকে গুরুত্বপূর্ণ বলেই ভাবছেন। কিন্তু এর আগে অনেক ক্রিকেটারই ব্যাপারটাকে এতো গুরুত্ব দিতেন না।

এখানে তিনি ভাত, বিরিয়ানি বা ফ্রাইড রাইস ধরনের খাবারের উদাহরণ টেনে বলেন, অনেক ক্রিকেটারই অনুশীলন বা ম্যাচের ফাঁকেও এই ধরনের খাবার পছন্দ করতেন।

কিছুদিন আগে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটার ও বিশ্লেষক সৈয়দ আবিদ হুসেইন সামির একটি ভিডিওতে উঠে এসেছে, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের কোনও কোনও স্তরে বিরিয়ানি দেয়া হয় মধ্যাহ্নভোজ হিসেবে।

মি. হুসেইন পেশাদার পর্যায়েই ক্রিকেট খেলে থাকেন এবং তিনি স্পোর্টস গুরুকুল নামের একটি ফেসবুক পাতায় ক্রিকেটের খুঁটিনাটি বিষয় শেয়ার করে থাকেন।

তার মতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাথে বিরিয়ানি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রিকেটেই অনেক সময়ই ভাত, বিরিয়ানি কিংবা ফ্রাইড রাইস ধরনের খাবার দেয়া হয়।

শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ট্রেনার রুবায়াত হক বাংলাদেশের অনেক শীর্ষ ক্রিকেটারের ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছেন তিনি নিজেও ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেছেন।

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভাত একটা বাস্তবতা যা এড়ানো মুশকিল।

"এটা কালচারের ব্যাপার। সাংস্কৃতিকভাবেই আমরা ভাত পছন্দ করি এটা হুট করে বন্ধ করে দিলে বা বাদ দিয়ে দিলে শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়তে পারে। তাই একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, যেখানে পুষ্টিবিদের সাথে আলোচনা করে ক্রিকেটারদের খাওয়ার পরিমাণটা নির্ধারণ করে দেয়া হয়।"

মি. হক বিবিসিকে বলেন, এটা একেক ক্রিকেটারের ক্ষেত্রে একেক রকম।

"প্রাথমিকভাবে কিছু কিছু ক্রিকেটার খুবই স্বাভাবিক খাবার খায়, যারা একটু হেলদি তারা সেভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে।"

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট চলাকালীন বিভিন্ন হোটেলে ছিলেন ক্রিকেটাররা। এই সময়টায় রুবায়াত হক কাছে থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রিকেটারদের খাওয়ার মেনু দেখেছেন।

সাকিব আল হাসান
Getty Images
সাকিব আল হাসান

বিবিসি বাংলার সাথে একটি সাক্ষাৎকারে ক্রিকেটারদের খাওয়ার তালিকা নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন তিনি।

"অনেক লোড যখন থাকে সকালে কর্নফ্লেক্স থাকে, দুই তিনটা ডিম, ব্রেড টোস্ট আবার অনেকে রুটি ভাজি খেয়ে থাকেন।"

"বিপিএলে যখন আমরা ছিলাম তখন অনেকক্ষণ ধরে কিডনি বিন, কর্ন ফ্লেক্স, আমেরিকান বা মেক্সিকান খাবার যারা পছন্দ করেন তারা সেটা খান।"

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অধীনে বা কোনও দলের সাথে যখন ক্রিকেটাররা থাকে তখন একটা নিয়মের মধ্যেই থাকে এই খাওয়ার রুটিন।

কিন্তু এটা তৃণমূল পর্যায়ের ক্রিকেটারদের জন্য অনেক ব্যয়সাধ্য ও দুরূহ একটা ভাবনা।

ঠিক কী কারণে ভাত খেলাধুলার জন্য ক্ষতিকর

ভাত বা এ ধরনের খাবারকে ক্রিকেট খেলোয়াড়দের উপযুক্ত বলে মনে করেন না বিকেএসপির ক্রিকেট কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

তিনি বলছেন, ভাত অনেক সময়ই শরীরকে তুলনামূলক ধীর করে দেয়।

"ভাত খাওয়ার পর শরীর ছেড়ে দেয় অনেক সময়, এক্ষেত্রে কার্বোহাইড্রেটের জন্য পাস্তা বা রুটি ধরনের খাবার খাওয়া যেতে পারে।"

এই ধরনের খাবার অনেক ক্রিকেটাররা নিজেদের বাড়িতে সবসময় খেতে পারেন না।

শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও সাকিব আল হাসানরা নিজস্ব রুটিন মেনে চলতে পারেন।

ভারতের সাবেক অধিনায়ক ভিরাট কোহলি ফিট থাকার জন্য তিনি একটা সুনির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করেন, যা তাকে খেলার মাঠে তো বটেই মাঠের বাইরেও একটি সুস্থ জীবন পেতে সাহায্য করে থাকে।

ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরের সময়য়ের ছবি
Getty Images
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরের সময়য়ের ছবি

তিনি ২০২০ সালে ভারতের ফুটবল দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর সাথে ইউটিউবে একটি আলোচনায় বলেছিলেন, "আমার জন্য ফিটনেস এবং নিয়মতান্ত্রিক খাওয়াদাওয়াই সবটুকু।"

এজন্য ভিরাট কোহলি একটা সুনির্দিষ্ট খাবারের তালিকা তৈরি করেছিলেন, যেখানে মূলত নানা ধরনের শাকসবজি, প্রোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পানীয় এবং কফি থাকে।

প্রোটিনের জন্য থাকে ডাল, গ্রিল করা স্যামন মাছ এবং মুরগির মাংস।

এই খাবারের তালিকা কোহলি খোলাসা করেছিলেন ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়ন্স শোতে।

খাবার যে কোনও মানুষের জন্যই প্রতিদিনের অপরিহার্য এক উপাদান।

মানুষের ক্ষুধা লাগে এবং সে খাবারের ওপর নির্ভর করেই জীবনে পথচলার শক্তি পেয়ে থাকে।

ক্রিকেটারদের জন্য এটা আরও জরুরি কারণ ক্রিকেট খেলাটা শুধুই শক্তিমত্তার না - এখানে শক্তির সাথে ধৈর্য্য, বুদ্ধিমত্তা এবং প্রয়োগ এই তিনটাই জরুরি হয়ে পড়ে।

"শরীর একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, এর ধারণক্ষমতা যতো ভালো হবে তত সহনশীলতা তৈরি হবে তত ভালো শক্তির জায়গা আসবে"- বলেন নাজমুল আবেদীন ফাহিম।

মি. ফাহিম নিজের বিশ্লেষণে বলেন, একজন ক্রিকেটার যে অনুশীলন করেন সেটা আসলে তার শরীর থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণে শক্তি ক্ষয় করে এবং সেটাই পূরণ করতে প্রয়োজন সঠিক খাবার।

"যখনই আমরা শারীরিক কোনও কাজ করি তাতে শরীরে ক্ষয় হয়, সেটা পুষিয়ে নেয়ার জন্য আমরা খাওয়া দাওয়া করি। শরীরের যেভাবে ক্ষয় হয় ঠিক সেভাবেই সেটা পূরণ করার কাজটা জরুরি।"

প্রশিক্ষণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ একই সাথে খাওয়াটাকেও গুরুত্বপূর্ণ ভাবছেন তিনি।

মি. ফাহিম বলেন, এমন খাবার খাওয়া উচিৎ যেটা সারাদিন ধরে শরীরকে এনার্জি দিবে।

এই ব্যাপারগুলো বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের একটা সময় পর্যন্ত খুব একটা ভাবায়নি।

বাংলাদেশের ক্রিকেটে খাবার নিয়ে আলাদা করে ভাবনা বা কথা বলাও শোনা যেত না একটা লম্বা সময় পর্যন্ত।

নাজমুল আবেদীন ফাহিমের মতে, বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটারই অভ্যস্ততা থেকে বের হতে পারেন না অনেক সময়।

কিন্তু ধীরে ধীরে ক্রিকেট খেলার উপযোগী খাবারের দিকে ঝুঁকেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে - বলছে বিসিবি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, "বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ঠিক দশ বছর আগে খাবার নিয়ে যে অবস্থায় ছিল এখন তার থেকে অনেক উন্নতি হয়েছে।"

মি. চৌধুরী বলেন, "ক্রিকেটাররা এখন আগের থেকে অনেক সচেতন এবং আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই খুশি এই বিষয়ে, ক্রিকেটাররা এখন নিজে থেকেই অনেক সময় এসব নিয়ে আগ্রহ দেখায়, যেটা এক সময় বিরল ছিল।"

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের একটা রুটিন করে দেয়া হয়েছে, এই রুটিনের খাবার সবার জন্য এক নয়, এটা একেক জনের শারীরিক পরিস্থিতি ও ধারণক্ষমতার ওপর ঠিক করে দেয়া হয়।

এছাড়া ক্রিকেটারদের পছন্দ অপছন্দেরও গুরুত্ব দেয়া হয়, ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে খাওয়া দাওয়া অনেক সময় ভালোর জায়গায় নেতিবাচক ফল নিয়ে আসতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটার রাহাতুল ফেরদৌস জাভেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, তিনি মূলত দুই ইনিংসের মাঝে এবং অনুশীলনের সময়টাতে বেশি গুরুত্ব দেন খাবারের দিকে।

কারণ এই সময়টায় খাবারের চাহিদার সঙ্গে খেলার মাঠে শারীরিক নমনীয়তার সম্পর্ক আছে।

ক্রিকেটার জাভেদ মূলত, রুটি, কলা, সবজি- এই ধরনের খাবারই বেশি পছন্দ করেন।

English summary
Cricket: What are the eating habits of Bangladeshi players, what should they eat?
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X