দ্বিগুণ সুরক্ষা সহ ২৮দিনেই মানবদেহে অ্যান্টিবডি তৈরি! আশার আলো দেখাচ্ছে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন
দ্বিগুন সুরক্ষা নিয়ে সাফল্যের পথে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন
অতিমারী পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই বিশ্বের দেড় কোটি মানুষ আক্রান্ত প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও।গোটা বিশ্ব কার্যত চাতকের মত চেয়ে রয়েছে ভ্যাকসিনের আশায়। এমতাবস্থায় মারণ ব্যাধিকে রুখতে ভ্যাকসিন নিয়ে গতকালই সুখবর মিলেছে অক্সফোর্ডের তরফে। এবার অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন সম্পর্কে 'দ্য ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালের প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে,এই ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে সম্পূর্ণ নিরাপদ।শুধু নিরাপদই নয় এই টিকা মানবদেহে দ্বিগুণ সুরক্ষা সহ ২৮ দিনেই অ্যান্টিবডি তৈরীতেও সক্ষম বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন থেকে
গোড়ায় এই গবেষণার নাম ছিল, ‘চ্যাডস্ক ১'। এখন- ‘এজেডডি ১২২২'। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভ্যাকসিন এখন রয়েছে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের চূড়ান্ত পর্যায়ে। প্রায় হাজার জনের উপরে চালানো তাঁদের প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার রিপোর্ট পেশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন গ্রুপের প্রধান অ্যান্ড্রু পোলার্ড জানান, এখনও পর্যন্ত প্রতি পদক্ষেপেই সাফল্য মিলেছে।
অ্যান্টিবডি ও টি-সেল কী?
ভ্যাকসিন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে প্রথমে জেনে নেওয়া প্রয়োজন টি-সেল এবং অ্যান্টিবডির গুরুত্ব। অ্যান্টিবডি হচ্ছে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার তৈরি করা ছোট আকারের প্রোটিন, যা ভাইরাসের সঙ্গে মিশে গিয়ে সেটাকে ধ্বংস করতে সচেষ্ট হয় এবং টি-সেল, রক্তের সাদা একটি অংশ আক্রান্ত কোষগুলোকে খুঁজে বের করতে আর ধ্বংস করতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সাহায্য করে। গবেষকদের মতে টিকা দেয়ার ১৪ দিন পরে টি-সেলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায় আর অ্যান্টিবডির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায় ২৮দিনের মধ্যে।
দুই ডোজেই অ্যান্টিবডি তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন
গবেষকরা জানান, ভ্যাকসিন প্রেরণের পূর্বে স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে অ্যান্টিবডি নিরপেক্ষ অবস্থায় ছিল। ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজ দেওয়ার পরেই তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরী হতে শুরু করে, যা নিশ্চিত করে এটি কার্যকরভাবে সারস-কোভি -২ সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে। এছাড়াও প্রথম দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার পর দেখা গেছে যে, ভ্যাকসিনটি কোনও অপ্রত্যাশিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনি।
তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় নজর গবেষকদের
দুইধাপে চূড়ান্ত সাফল্যের পর ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল। এখন পর্যন্ত পাওয়া ফলাফল যদিও যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক, কিন্তু এর মূল উদ্দেশ্য হল সব মানুষকে এই ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য নিরাপদ কিনা, সেটা নিশ্চিত করা। এই ধাপে,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চলবে বলে জানা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় দুই হাজার আর ব্রাজিলে পাঁচ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হবে।
কতটা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে এই ভ্যাকসিনে?
গবেষকরা জানিয়েছেন, ৯০ শতাংশ মানুষের শরীরে এক ডোজেই অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে এই ভ্যাকসিন। বাকি ১০ শতাংশকে দুটি ডোজ দেওয়া হয়েছিল। তাদের শরীরেও পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে। ভ্যাকসিন প্রয়োগে সামান্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষক পোলার্ড। তবে এতে চিন্তার কিছু নেই। ভ্যাকসিন দেওয়ার একদম পর পরই ৭০% স্বেচ্ছাসেবকের হালকা জ্বর ও মাথাব্যথা হয়। তবে সেটা কিছুদিনের মধ্যেই সেরে যায় বলেও জানিয়েছেন তিনি।
করোনা সঙ্কটেও সরকার ফেলতে বেশি মনোযোগী মোদী সরকার, কেন্দ্রকে নিশানা রাহুলের