For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

করোনা ভাইরাস: ঢাকার হটস্পটের ম্যাপ তৈরিতে 'ধীরগতি'

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশে এলাকাভিত্তিক লকডাউনের ঘোষণা দেয়ার কয়েক সপ্তাহ পরও ঢাকার হটস্পটের পূর্ণাঙ্গ ম্যাপ তৈরি করা যায়নি। কেন এই 'ধীরগতি'?

  • By Bbc Bengali

বাংলাদেশে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার লকডাউন করার দুই সপ্তাহ পর পুরোনো ঢাকার দু'টি ওয়ার্ডকে রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সিটি করপোরেশকে চিঠি দেয়ার খবর পাওয়া গেছে।

তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে সারাদেশে রেড জোন চিহ্নিত করে এলাকাভিত্তিক লকডাউন ঘোষণা করার কয়েক সপ্তাহ পরও ঢাকা নগরীকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ম্যাপ তৈরির কাজ শেষ করা যায়নি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে এমন খবর পাওয়া গেছে।

এমন ধীরগতি বা ঢিলেঢালা পরিস্থিতিকে দুভাগ্যজনক বলে বর্ননা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছেন, ঢাকায় কভিড১৯ রোগীর সংখ্যা দেশের অন্য এলাকার তুলনায় বেশি হলেও রেড জোন চিহ্নিত করার কাজ বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।

ঢাকার পূর্ব রাজাবাজার এলাকাকে দুই সপ্তাহ আগে যখন রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত করে পরীক্ষামূলকভাবে লকডাউন করা হয়, সে সময়ই নগরীর ওয়ারী এলাকার দু'টি ওয়ার্ডকে লকডাউন করার পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছিল।

এখন এতদিন পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ওয়ারীর ঐ দু'টি ওয়ার্ডকে রেড জোন চিহ্নিত করে লকডাউনের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ঢাকার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে চিঠি দিয়েছে।দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এজন্য বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠক করবে।

রাজধানীর রেড জোনগুলো চিহ্নিত করে পূর্ণাঙ্গ একটা ম্যাপ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে, এ কথা কর্মকর্তারা বলে আসছেন দুই সপ্তাহ ধরে।

এখন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, ঢাকার হটস্পটগুলো চিহ্নিত করার কাজটি বেশ কঠিন এবং সেজন্য কিছুটা সময় লাগছে।

"ঢাকার ব্যাপারটি খুবই ডিফিকাল্ট। কারণ এখানে একই জায়গায় শিল্প কারখানা, বড় বড় অফিস এবং মানুষের বসবাস রয়েছে। সেজন্য অত্যন্ত সাবধানে আমাদেরকে জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে হচ্ছে। ঢাকার কিছু এলাকায় রেড জোন চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আমরা এর কিছু কিছু কার্যকর করবো।"

যদিও গত কয়েকদিনে দেশের ১৯টি জেলার ৪৫টি এলাকাকে রেড জোন চিহ্নিত করে কিছু এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।

কিন্তু দেশে এখন পর্যন্ত প্রায় সোয়া লাখ কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং এই শনাক্তদের বেশিরভাগই রাজধানী ঢাকায়।

এরপরও ঢাকাতেই সংক্রমণের বিস্তার ঠেকানোর জন্য এলাকাভিত্তিক লকডাউনের ক্ষেত্রে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের সংক্রামক রোগ কর্মসূচির সহযোগী পরিচালক ডা: মাহফুজা রিফাত বলছেন ঢাকার হটস্পটগুলো চিহ্নিত করার কাজে বিলম্বের বিষয়টি তার কাছে বোধগম্য নয়।

"আমরা পাইলটিংয়ের কথা শুনেছি রাজাবাজারকে নিয়ে। এখনতো পাইলটিংয়ের সময় নয়। আমরা যুদ্ধে নেমে কিসের পাইলটিং করবো। এখনতো নেমে যেতে হবে কাজে। সেখানে গতিটা মনে হয় খুব ধীর।"

"আর অনেক বছর আগে যখন কলেরা আবিষ্কৃত হয়েছিল, তখন কি বিভিন্ন অ্যাপস বা বৈজ্ঞোনিক সব সুবিধা ছিল? তখন তাহলে কিভাবে কাজ করেছে? আর এখন এতো ডিজিটাল সুবিধা থাকার পরও কেন ঢাকার হটস্পট চিহ্নিত করতে এত সময় লাগছে-তা বোধগম্য নয়।"

সরকারের বিভিন্ন কমিটিতে বিশেষজ্ঞ যারা আছেন, তাদের পক্ষ থেকেই ঢাকায় ৪০০ বা ৫০০সহ সারাদেশে দুই হাজারের মতো রেড জোন চিহ্নিত করে একসাথে লকডাউন করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।

সরকার সেখানে এপর্যন্ত মাত্র ৪৫টি এলাকাকে রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত করেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক একজন পরিচালক ড: বে-নজীর আহমেদ বলেছেন, "যখন জোন পদ্ধতিতে লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হলো, তখন আগেই এর প্রস্তুতি থাকার কথা-এটা ধরেই নেয়া হয়। কিন্তু সেই প্রস্তুতি নেই। পরিকল্পনা করার পর তা বাস্তবায়নে এমনটা বার বার ঘটছে। এখনও রেড জোন চিহ্নিত করা যাচ্ছে না, এটা দু:খজনক।"

তিনি আরও বলেছেন, "সংক্রমণের বিস্তার ঠেকানোর সময় যেমন শেষ হয়ে যাচ্ছে, সেই সাথে বিকল্প পথও কিন্তু কমে আসছে।"

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্রগুলো বলছে, ঢাকায় হটস্পট চিহ্নিত করতে গিয়ে শনাক্ত রোগীর পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা বা তথ্য না থাকার বিষয়টিও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরকারের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান, অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, "গভর্মেন্ট যেটা চাচ্ছে যে, মানুষকে আর কতদিন ঘরে বন্দি করে রাখা যায়। বিশেষ করে এই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে কবে শেষ হবে বা কবে আমরা মুক্তি পাব-এটা কেউ বলতে পারছে না। অনেকে এখনও দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে যে আমরা কি এখন পিক লেভেলে আছি নাকি আরও উঠবে-সেটা এখনও বলা যাচ্ছে না।"

"ফলে সরকার যেটা চাচ্ছে, আসলে মানুষের জীবনকেতো বাঁচাতে হয়। আবার জীবন বাঁচাতে জীবিকার প্রশ্নও আছে।"

অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আরও বলেছেন, "লকডাউন কাগজে কলমে, এটা দিয়েওতো লাভ নাই। এটা যদি দিতেই হয়, তবে কঠোরভাবে করতে হবে। মানুষকে বাধ্য করতে হবে।"

তিনি মনে করেন, এখন যে ব্যবস্থাই নেয়া হোক না কেন, মানুষকেও তার সাথে সম্পৃক্ত করতে হবে।

সরকারের নীতি নির্ধারকদেরও অনেকে কথায় এটা স্পষ্ট যে, মানুষের জীবিকার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড অব্যাহত রাখতে চাইছে। সেজন্য মানুষ যেন নিজেরা স্বাস্থ্য বিধি মেনে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, সেটাকে ফোকাস করে সচেতনতামূলক কর্মসূচির ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী যেমন বলেছেন যে, "মানুষকে সচেতন করার বিষয়কে আমরা এখন বেশি জোর দিচ্ছি। এবং ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে যাতে মানুষ সচেতন হয়।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে বলেছেন,আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই জীবন এবং জীবিকাকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে। অতএব এই বিষয়টির ওপরই আমাদের এখন নজর বেশি।"

সেজন্য জোন চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে ধারগতি বলে বলে বিশেষজ্ঞদের অনেকে ধারণা করেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, ছোট ছোট এলাকাকে রেড জোন হিসাবে চিহ্নিত করে লকডাউন করা হবে। কিন্তু মানুষের জীবিকা যাতে লকডাউনের শিকার না হয়, সেটা তারা বিবেচনায় রাখছেন।

Banner image reading more about coronavirus
BBC
Banner image reading more about coronavirus

কোয়ারেন্টিন ও আইসোলেশনের যে ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে

নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে

নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের?

করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন

টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি?

বিশ্ব মহামারি শেষ হতে কতদিন লাগবে?

কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায়

করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন

Banner
BBC
Banner

English summary
Coronavirus: 'slow' in mapping Dhaka hotspot
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X