করোনা মোকাবিলায় মৃত্যুর হার জার্মানি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে! কয়েকটি তথ্য
করোনা মোকাবিলায় মৃত্যুর হার জার্মানি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে! কয়েকটি তথ্য
করোনা মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নতুন নতুন পন্থা খুঁজছে। একই সঙ্গে চলছে গবেষণাও। বিভিন্ন দেশের প্রশাসনিক তৎপরতাও কিছু কম নয়। এরই মধ্যে চিন , আমেরিকার পর বিশ্ব সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ইওরোপ। যেখানে স্পেন , ইতালি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না, সেখানে কীভাবে জার্মানি মৃত্যুর হার কমিয়ে ফেলেছে? এই নিয়েই একাধিক তথ্য উঠে আসছে।
কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ
জার্মানি সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে কনট্যাক্ট ট্রেসিং এর ক্ষেত্রে। সেদেশ প্রাইভেসি সমেত একটি কনট্যাক্ট ট্রেসিং অ্যাপ তৈরি করেছে। যা সেদেশে করোনা মোকাবিলায় ব্যাপক সাহায্য করছে। কনট্যাক্ট ট্রেসিং নিয়ে এছাড়াও একাধিক বিধিবদ্ধ প্রশাসনিক নির্দেশ সেদেশের বাসিন্দারা মেনে চলছেন।
কেন ইতালির মতো পরিস্থিতি হওয়ার থেকে বেঁচে গিয়েছে জার্মানি!
ইতালিতে জনসংখ্যার বিচারে বেশির ভাগের গড় বয়, ৬৩। সেখানে জার্মানিতে গড় ৪৭ বছর। সেই দিক থেকে জার্মানিতে বয়স্কদের সংখ্যা কম। তার জেরে জার্মানিতে করোনা আক্রান্ত বয়স্কদের সংখ্যাও তুলনামূলকভাবে অন্যান্য দেশের থেকে কম। ফলে, করোনায় জার্মানিতে মৃতের সংখ্যা অনেকটাই কম।
সতর্ক ছিল জার্মানি
করোনার প্রকোপ ইওরোপ জুড়ে ছড়াতেই সতর্ক ছিল জার্মানি। ফ্রান্স, ইউকে, স্পেনে যে সংখ্যক কোভিড ১৯ টেস্টিং হয়েছে , সেই সংখ্যাগুলি যোগ করলে যা দাঁড়ায় ,সেই সংখ্যক কোভিড ১৯ টেস্টিং করেছে জার্মানি। মোট ১৬৭,০০০ জনকে টেস্ট করেছে ইওরোপের এই দেশ। সেদেশে বাড়িতে গিয়ে থার্মাল টেস্টিং ও কোভিড টেস্টিং এর বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ফলে জার্মানির চরম সতর্কতাই জার্মানদের বিপন্মুক্ত করেছে।
সরকারি কড়া পদক্ষেপ
করোনা মোকাবিলায় জার্মান সরকার একাধিক কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। জার্মান সরকার জানিয়ে দেয় করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ ভাঙলে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখলে মাথাপিছু ৪১০০ টাকা জরিমানা করা হবে। এদিন জার্মানি সরকারের তরফে চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেল নির্দেশ দেন মুদি কেনাকাটা, চিকিৎসা, বা জরুরি পরিষেবা ভিত্তিক কোনো কারণ না থাকলে বাড়ি থেকে বেরোলেই হবে জরিমানা।
সোশ্যাল ডিসন্টেসিং নিয়ে বড় পদক্ষেপ
জার্মান সরকার নিজের আরোপিত নিয়ম নিয়ে বেশ কঠোর। সেদেশে বাসিন্দাদের জানানো হয়েছে, একই সাথে দুজনের বেশি জমায়েত করা যাবেনা, এবং করলেও দুজনের মধ্যে দূরত্ব থাকতে হবে ১.৫ মিটারের বেশি। স্থানীয় সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা আবার জানান, নিয়ম লঙ্ঘন করলে শাস্তি হিসেবে জরিমানা হতে পারে ৫০০ ডলারেরও বেশি। জার্মানির বৃহত্তম রাজ্য বাওয়ারিয়া, করোনার জেরে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে,যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৮,০০০। সেখানে, ১.৫ মিটার সামাজিক দূরত্ব দাঁড়িয়ে লঙ্ঘন করলেই জরিমানা করা হচ্ছে ১৫০ ইউরো।
ইন্টেনসিভ কেয়ার বেড নিয়ে বড় পদক্ষেপ
যে মুহূর্ত থেকে জার্মানিতে করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়তে শুরু করে, সেই মুহূর্ত থেকে জার্মান সরকার হাসপাতালের বেডের সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেয়। ফলে সেদেশে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের বেড সংখ্যায় অনেকটাই বাড়তে থাকে।