For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

করোনা ভাইরাস: বাংলাদেশে আবার বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্ষতি ঠেকাতে করণীয় কী

  • By Bbc Bengali

স্কুল শিক্ষার্থী।
Getty Images
স্কুল শিক্ষার্থী।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের বেড়ে যাওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্লাস পরীক্ষা সামনের দুই সপ্তাহ বন্ধ রাখার ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে শিক্ষক অভিভাবকদের মধ্যে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত দুই বছরের অভিজ্ঞতা থেকে কোন শিক্ষা না নেয়ায় পুনরায় এই শিক্ষার্থীদের পাঠ-পঠন ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে।

এমন অবস্থায় বিকল্প ব্যবস্থাগুলোকে শক্তিশালী করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

সিলেটের হবিগঞ্জ উপজেলার চুনারুয়া ঘাটের বাসিন্দা সোহেনা বেগমের দুই সন্তান স্কুল শিক্ষার্থী।

করোনাভাইরাস মহামারির ফলে স্কুলগুলো প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর পুনরায় যখন সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হল তখন তিনি আশা করেছিলেন যে বিগত সময়গুলোর শিক্ষা ক্ষতি পুষিয়ে নেবেন।

কিন্তু নতুন শিক্ষাবর্ষের দুই সপ্তাহ যেতে না যেতে আবারও বন্ধের ঘোষণায় তিনি অনেক হতাশ হয়ে পড়েন।

সোহেনা বেগম বলেন,"এই কয়দিন ক্লাস করাইয়া মুটামুটি বাইচ্চারারে অ্যাকটিভ করসিলাম, এখন যে আবার বন্ধটা দিসে বাইচ্চারা আবার বাড়িত বইসা থাকবো, পড়া নাই, লেখা নাই। ইস্কুল খুলা থাকলে তো তারা ৮ ঘণ্টাই থাকতো।"

আরও পড়তে পারেন:

স্কুল শিক্ষার্থী।
Getty Images
স্কুল শিক্ষার্থী।

তবে বিকল্প হিসেবে সরকার যে অনলাইনে ক্লাস, সংসদ টিভির শিখন ক্লাসের কথা বলে আসছে, এটি শুধুমাত্র শহরের সচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে তিনি মনে করেন।

"গ্রামের মানুষদের কাছে কোন ফোনই নাই। স্মার্টফোন একজনের থাকলেও সেটা বাচ্চাদের পড়াইতে দেওয়ার অবস্থা না। এখন অ্যাড্রয়েড মোবাইল ছাড়া বাচ্চারা কিভাবে ক্লাসটা ধরবো? স্কুল খোলা রাখলে এতো সমস্যা হইতো না।"

তবে ফাতেমা নওশিন বলছেন ভিন্ন কথা। তার মতে স্কুলে পরিপূর্ণভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানাটা কঠিন।

এমন অবস্থায় সংক্রমণ যেহেতু বাড়ছে তিনি তার শিশুকে স্কুলে না পাঠানোর পক্ষেই কথা বলেছেন।

"স্কুলে গেলেই বোঝা যায় যে আমরা না হয় মাস্ক পরছি, কিন্তু সবাই সচেতন না। বাচ্চারাও বেশিক্ষণ মাস্ক পরতে চায় না। মাস্ক পরিয়ে পাঠাই, পরে খুলে ফেলে। এই অবস্থায় বাচ্চা নিয়ে বাসায় থাকাই নিরাপদ। স্বাস্থ্য সবার আগে।"

বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর:

পরীক্ষা।
Getty Images
পরীক্ষা।

দু'হাজার বিশ সালের মার্চে বাংলাদেশে প্রথম করোনা মহামারি দেখা দেয়ার পর ১৮ই মার্চ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে ছুটি বাড়তে থাকে।

এভাবে টানা দেড় বছর বন্ধ থাকায় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীরা ছাঁটাই, বেতন কম পাওয়া না হলে চাকরি যাওয়ার ভয়ে সময় পার করেছেন।

অল্প কয়েক মাসের মধ্যে আবার স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্তে বেসরকারি স্কুল শিক্ষিকা দেব অর্জমা অরা আশঙ্কায় আছেন এই ছুটি দীর্ঘায়িত হলে তাদের পরিণতি কী হবে।

"একটা প্রাইভেট স্কুল পুরোটাই চলে শিক্ষার্থীদের বেতনের ওপর। কিন্তু টানা বন্ধ থাকায় অনেক স্টুডেন্ট ঝরে পড়েছে। বেশিরভাগ বেতন দেয় নাই। এটার প্রভাব তো আমাদের ওপর এসে পড়তে পারে। এমনও হতে পারে আমরা স্কুলটাই চালাতে পারবো না। বন্ধ করে দিতে হবে," বলেন মিস অরা।

আবার যেসব শিক্ষক প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন তারাও স্কুল খোলার পর পুনরায় পড়ানো শুরু করেছিলেন। নতুন সিদ্ধান্তের কারণে সেই কাজ শঙ্কায় আছেন তারাও।

মিস অরা বলেন, "আমরা যারা প্রাইভেট পড়াই, আমাদের একটা ইনকাম সেই প্রাইভেট পড়ানো থেকেও আসে। দেড় বছর তো কোন টিউশনি করতে পারি নাই। পরে স্কুল খোলার পর কয়েকজন স্টুডেন্টকে পড়ানো শুরু করি। এখন বন্ধের সময়টা বাড়লে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।"

টিকা।
Getty Images
টিকা।

এদিকে কোন নোটিশ ছাড়াই চলমান ক্লাস পরীক্ষা হঠাৎ স্থগিতের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করেছে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাতটি সরকারি কলেজের ডিগ্রির শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষাখাতে এই সার্বিক ক্ষতির কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত দুই বছরের ক্ষতি থেকে শিক্ষা না নেয়া, অবাধে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন এবং অমিক্রন ঠেকাতে আগে থেকেই কঠোর না হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

সংক্রমণ বাড়ার মধ্যেও বাণিজ্য মেলা খোলা রাখা, নির্বাচনের আয়োজন করা, বিপিএল এর আসর শুরু করা, এইসব কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে প্রশ্ন রেখেছেন শিক্ষা গবেষক রাশেদা কে. চৌধুরী।

তার মতে, স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে প্রতিটি পর্যায়ে গাফেলতি হওয়ার মাসুল গুনছে শিক্ষার্থীরা।

এক্ষেত্রে ঢালাওভাবে দেশের সব স্কুল বন্ধ না রেখে সংক্রমণের হিসাবে বাংলাদেশকে রেড, ইয়েলো, গ্রিন জোনে ভাগ করে, এরপর নিরাপদ অঞ্চলগুলোয় স্কুল পরিচালনা করা যেতে পারে।

এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিকল্প ব্যবস্থাগুলোকে শক্তিশালী করলে শিখনের ক্ষতি অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।

এখানে বিকল্প ব্যবস্থা বলতে তিনি বুঝিয়েছেন, দারিদ্রপীড়িত পরিবারের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে ক্লাস করার সরঞ্জাম সরবরাহ করা সেইসাথে ইন্টারনেট সেবা সুলভ ও সহজলভ্য করা।

মিজ চৌধুরী বলেন, "স্কুল তো শুধু পড়ালেখার জায়গা না, এখানে মেধা মনন বিকাশের জায়গা। কিন্তু দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় তাদের মন সামাজিক পরিস্থিতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে তাদের পড়ালেখায় যুক্ত করতে হবে।"

"সরকার যেসব মেগা প্রজেক্টে বিনিয়োগ করছে, তেমনি জনসম্পদেও বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। দেশের সব শিক্ষার্থীকে বই দেয়া গেলে, গরিব পরিবারের শিক্ষার্থীদের ট্যাব, ইন্টারনেটের খরচ দেয়া যেতে পারে।" বলেন তিনি।

স্কুল শিক্ষার্থী।
Getty Images
স্কুল শিক্ষার্থী।

জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের প্রকাশিত এক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, গত মার্চ মাস পর্যন্ত টানা এক বছর পৃথিবীজুড়ে প্রায় ১৭ কোটি শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

এর মধ্যে প্রায় ১০ কোটি শিশুই ছিল ১৪টি দেশের, যেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ক্লাসে পাঠাতে স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

English summary
Coronavirus: Again schools are closed in Bangladesh
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X