করোনার থাবা এড়াতে পারল না প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ কিরিবাটি, সেখানে কত জন আক্রান্ত
করোনার থাবা এড়াতে পারল না প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ কিরিবাটি, সেখানে কত জন আক্রান্ত
যখন বিশ্বজুড়ে করোনা তার মারণ থাবা বসিয়েছিল। কোভিডের জেরে মৃত্যুগ্রাসী হয়ে উঠেছিল বিশ্ব। প্রিয়জনকে হারাতে শুরু করেছিল মানুষ। তখন কিন্তু কোভিডের ললুপ দৃষ্টি এড়িয়েছিল প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ কিরিবাটি। গত ২ বছর ধরে বিশ্বের নাজেহাল অবস্থাতেও কিরিবাটির বাসিন্দা নিশ্চিত ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা করা যায়নি। সেখানে করোনা সংক্রমণে খবর পাওয়া গেছে। এই দ্বীপটির আক্ষরিক নাম রিপালিক অব কিরিবাটি। কোভিড শুরুর সময় থেকেই এই দ্বীপ নিজেদের সীমানা বন্ধ রেখেছিল।
আগত যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা করা হয়
চার্চ অফ জেসাস ক্রাইস্ট অফ ল্যাটার-ডে সেন্টসকে ৫৪ জন নাগরিককে অবশেষে বিমানে করে কিরিবাটি দেশে আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জাহাজে অনেক মিশনারি ছিলেন যারা সীমান্ত বন্ধ হয়ে হাওয়ার জন্য কিরিবাটি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আর যাদের করোনা ভ্যাকসিনের প্রয়োজন ছিল তাঁদের টিকা দেওয়া হয়েছে।
সরকার কী ঘোষণা করলেন
সরকার জানিয়েছেন, অর্ধেক যাত্রীদের রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে। যা কিরিবাটি সম্প্রদায়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। আগত যাত্রীদের মধ্যে ৩৬ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। এখন যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮১ জন।
ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ কী বললেন
নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ হেলেন পেটুসিস-হ্যারিস জানান, যখন বিশ্ব কোভিডের দাপট দেখছিল, তখন কিন্তু কিরিবাটি অঞ্চলের মানুষ এর থেকে দূরে ছিল। সীমান্ত বন্ধ রাখার জন্য তিনি সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
কিরিবাটির কত মানুষ ডবল ডোজ প্রাপ্ত
কিরিবাটির ১ লক্ষ ১৩ হাজার বাসিন্দাদের মধ্যে ডবল ডোজ টিকা প্রাপ্ত হয়েছেন ৩৩ শতাংশ মানুষ। ৫৯ শতাংশ মানুষ করোনার একটি ডোজ পেয়েছেন। এখানে শুধুমাত্র মৌলিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হয় অনান্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির মতো।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপের চিকিৎসক কী বললেন
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপের চিকিৎসক ডাঃ এপি তালেমাইতোগা জানান, কিরিবাটিতে আগে অসুস্থ মানুষদের চিকিৎসার জন্য ফিজি বা নিউজিল্যান্ডে পাঠানো হতো। কিন্তু এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। বিশ্বে যখন আমি করোনার প্রাদুর্ভাবের কথা শুনেছি তখন আমি ‘হে ঈশ্বর' বলেছিলাম।
রাষ্ট্রপতি কী বার্তা দিলেন
রাষ্ট্রপতি তানেতি মামাউ সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন, কিরিবাটিতে এখন অনেক কোয়ারেন্টাইন সেন্টার খোলা হয়েছে। কার্ফু ও লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি সকলের ভ্যাকসিনের টিকা নেওয়ার আহ্বান জানান। এখানে ২০ হাজার তৃতীয় বৃহত্তম খ্রিস্টান সম্প্রদায় রয়েছে। এখানে ৫৩ হাজার মিশনারি রয়েছে। যারা বিশ্বের পূর্ণ সেবার কাজে নিযুক্ত।
২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে করোনা টিকা দেওয়া চলছিল। তখন এদেশের চার্চের কর্মকর্তারা সমস্ত মিশনারিকে ভ্যাকসিন দিতে ব্যস্ত ছিলেন। কারণ, তাঁদের মতে, যারা দেশের বাইরে সেবা করছেন , তাঁদের আগে টিকা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
চার্চের মুখপাত্রের মত কী
চার্চের মুখপাত্র স্যাম পেনরড জানান, মিশনারিরা কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ তাঁদের সাহায্য করছেন। অনেক মিশনারি দেশের বাইরে ছিলেন কিন্তু তাঁরা ৪৪ মাস ধরে সেবা করে চলেছেন।
গত বছর অক্টোবর মাসে এক মিশনারির পজেটিভ খবর পাওয়া গিয়েছিল। যারা বর্তমানে দেশের বাইরে ছিলেন এখন দেশে ফিরছেন তাঁদের টিকা দেওয়া হয়েছে। যারা কোভিড আক্রান্ত, তাঁদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। টোঙ্গায় এই চলতি মাসের শুরুতে বিধ্বংসী আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত দেখা গিয়েছিল।
কিরিবাটি সরকার কী বিধিনিষেধ জারি করলেন
কিরিবাটিতে বৃহস্পতিবারের করোনা রিপোর্টে দেখা গেছে, এখন ২৭ জন করোনা আক্রান্ত। যাদের মধ্যে ৫ জন নার্স। সকলে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
কিরিবাটি সরকার বৃহস্পতিবার করোনা সংক্রান্ত কিছু বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছেন। বলা হয়েছে, ৪ জন করে একটি নৌকা বা কোন নদীর তীরে একসঙ্গে মাছ ধরতে পারবেন ।