করোনা ভাইরাস 'বৃহত্তর মহামারী'! বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ঘোষণার আসলে কীসের ইঙ্গিত দিচ্ছে
করোনা ভাইরাসে গোটা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা নেহাত কিছু কম নয়। লাফিয়ে বাড়ছে এই সংক্রমণ। এপর্যন্ত গোটা বিশ্বে ১,২৬ ,৩৮০ জন আক্রান্ত করোনায়। মৃতের সংখ্যা ৪৬৩৪ জন। এদিকে , ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। এই মুহূর্তে দেশে ৬৮ জন আক্রান্ত। অন্যদিকে,একাধিক মানুষকে ঘিরে সন্দেহ দানা বাঁধছে। এমন পরিস্থিতিতে করোনা আক্রমণ বিশ্বে 'প্যান্ডেমিক' তৈরি করছে বলে দাবি হু-এর। একনজরে দেখে নেওয়া যাক 'প্যান্ডেমিক' শব্দের মাধ্যমে হু কোন বার্তা দিতে চেয়েছে। এর ভয়াবহতাই বা কি!
করোনা নিয়ে হু-এর বার্তা
৩০ জানুয়ারি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা হু জারি করেছিল করোনা ভাইরাস নিয়ে একটি সতর্কতা। গোটা বিশ্বকে তারা সতর্ক করে দেয় এমন ভাইরাস বাহিত রোগ নিয়ে। উঠে আসে ভাইরাস কোভিড ১৯-এর পরিচিতি। এবার বিশ্বের ১১৭ টি দেশে এই রোগ নিজের থাবা বিস্তার করেছে। এরপর হু জানিয়ে দিয়েছে এটি শুধুমাত্র আর 'এন্ডেমিক' বা মহামারীতে আটকে নেই, এটি এই মুহূর্তে 'প্যান্ডেমিক' এর চেহারা নিয়েছে করোনা ভাইরাস।
'প্যান্ডেমিক' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
'প্যান্ডেমিক' অর্থাৎ বৃহত্তর মহামারী। যখন কোনও মহামারী একটি ছোট জায়গায় আটকে না থেকে তা বহু জায়গায় ছড়াতে শুরু করে তখন তাকে বলে 'প্যান্ডেমিক' বা বৃহত্তর মহামারী। উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস এই মুহূর্তে বিশ্বের ১১৭ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। আর যে সংক্রমিত রোগ একটি জায়গায় আটকে না থেকে বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ আকারে ছড়ায় তাকেই বলে 'বৃহত্তর' মহামারী। উল্লেখ্য, মহামারীর তুলনায় বৃহত্তর মহামারীর বিস্তার বেশিদিন সময় পর্যন্ত থাকে। তা কয়েক বছর পর্যন্তও চলতে পারে। আর করোনা কে 'প্যান্ডেমিক' ঘোষণার পর থেকে সেই আশঙ্কা বাড়ছে।
মহামারী বা 'এপিডেমিক' কাকে বলে?
যখন একটি রোগ কোনও ছোট জায়গার মধ্যে ছড়িয়ে বহুজনের মৃত্যুর কারণ হয়ে যায়, তখন তাকে বলে মহামারী বা 'এপিডেমিক'। তবে হুয়ের দাবি, করোনা ভাইরাস মহামারীকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। যার জেরে ভারত এদিন সমস্ত আন্তর্জাতিক সীমান্ত 'সিল' করে দিয়েছে।
শেষ বার কবে 'প্যান্ডেমিক' হয়েছিল?
এই প্রথমবারই বিশ্বে বৃহত্তর মহামারী হয়নি, এর আগেও এই গ্রহ মারণ রোগের মৃত্যু মিছিল দেখেছে। ২০০৫ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে এইডস-এ বিশ্ব জুড়ে মৃতের সংখ্যা ৩৬ মিলিয়ন। তার আগে ১৯৬৮ সালে জ্বরের জেরে বিশ্বে ১ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়। তারও আগে ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সালের মধ্যে ২ মিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল এশিয়াব ফ্লু-তে।
ভারতে করোনা পরিস্থিতি কোনদিকে?
ক্রমেই আতঙ্কের গ্রাসে ভারতে। করোনা ভাইরাস এপর্যন্ত ভারতে ৬৮ জনের দেহে ছড়িয়েছে। কেরলে ১৪ জনের দেহে মিলেছে এই ভাইরাসের নমুনা। অন্যদিকে, করোনা সন্দেহে অন্ধ্র, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লিতে একাধিক জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ক্রমাগত বাড়ছে আশঙ্কা।
করোনার উপসম কী কী ?
জ্বর হলেই যে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ হবে, তা নয়! তবে জ্বরের সঙ্গে যদি মাথার যন্ত্রণা, কাশি, কফ, নাকে অস্বস্তি, গলা ব্যথা, বমি,শ্বাসকষ্ট থাকে, তা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। করোনা ঘিরে এমনই দাবি উঠছে।
করোনা থেকে দূরে থাকার উপায়
হাত চোখ বা মুখে আচমকা লাগানোর থেকে বিরত থাকতে হবে। মুখ সবসময় ঠাকা রাখা উচিত। হাত ২০ সেকেন্ড ধরে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। যে জিনিস বারবার ব্যবহার করেন , এমন জিনিস একটু ধুয়ে , মুছে নিতে হবে।