রঙ করা নিয়ে বিতর্ক - মালয়েশিয়ার বিখ্য়াত হিন্দু মন্দির হারাতে পারে তার হেরিটেজ তকমা
মালয়েশিয়ার বাটু কেভ কমপ্লেক্সে অবস্থিত বিখ্যাত হিন্দু মন্দিরে রঙ করা নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। ভক্তরা একে ভালভাবে নিলেও সেদেশের সরকারের বক্তব্য এতে ঐতিহাসিক এলাকাটি তার ঐতিহ্য হারিয়েছে।
মালয়েশিয়ার এক হিন্দু মন্দিরে রঙ করা নিয়ে বিতর্ক বেধেছে। সম্প্রতি ঝকঝকে রামধনু রঙে এই মন্দিরের সিঁড়িগুলি রঙ করা হয়েছে। যা মনে ধরেছে মন্দির দর্শনে আসা অসংখ্য দর্শনার্থীর। সারা বিশ্বের মানুষের চোখ টেনেছে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া এর ছবিগুলিও। কিন্তু এতে যারপরনাই ক্ষুব্ধ মালয়েশিয়ার হেরিটেজ ডিপার্টমেন্ট।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের অদূরেই রয়েছে চুনা পাথরের গুহা বাটু কেভ কমপ্লেক্স। আর এই গুহাতেই অবস্থিত হিন্দু দেবতা মুরুগান-এর মন্দির। মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী সংখ্যালঘু ভারতীয় হিন্দুদের কাছে তো বটেই সেদেশে ভ্রমণে যাওয়া পর্যটকদের কাছেও মন্দিরটি অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিশেষত দক্ষিণ ভারতীয় হিন্দুরা সারা বছর ধরেই প্রচুর সংখ্যায় এই মন্দিরে ভিড় জমান।
প্রতি ১২ বছর অন্তর এখানে 'কুম্ভাবিসেগম' অনুষ্ঠান হয়। চলতি বছরে শুক্রবার সকাল থেকেই সেই উৎসব শুরু হয়েছে। কিন্তু তার আগেই বিতর্ক বেধেছে মন্দির কর্তৃপক্ষের একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে। এবারের উৎসবের আগে, মন্দিরের ২৭২ টি সিঁড়ির ধাপ ও মন্দিরের অন্যান্য জায়গায় উজ্জ্বল রঙ করা হয়েছে।
এই উজ্জ্বল রঙের সিঁড়ির ধাপগুলির ছবি নেটিজেনদের চোখ এড়ায়নি। একে বলা হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে রঙচঙে সিঁড়িওয়ালা মন্দির। আগত দর্শনার্থীরাও এই রঙ করার সিদ্ধান্তে মুগ্ধ। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছে মালয়েশিয়া সরকারের হেরিটেজ বিভাগ। জানা গিয়েছে রঙ করার আগে তাদের কোনও অনুমতি নেয়নি মন্দির কর্তৃপক্ষ।
সেই দেশের ডেপুটি কালচারাল মিনিস্টার মন্দির কর্তৃপক্ষের ওই সিদ্ধান্তকে 'হতাশাজনক' বলে জানিয়েছেন, 'এতে বাটু কেভ কমপ্লেক্সের সঙ্গতি, অখণ্ডতা ও মৌলিকতা হারিয়েছে'। এর ফলে এই স্থানটি তার হেরিটেজ স্ট্যাটাস অবধি হারাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী। মন্দির কর্তৃপক্ষকে একটি সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে মন্দিরের ধাপে কোনও রঙ ছিল না। ম্যাড়মেড়ে চুনাপাথরের ধাপগুলো এরকম রঙিন হয়ে ওঠায় দর্শনার্থীদের বেশিরভাগই অবশ্য আনন্দই প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে 'কুম্ভাবিসেগম' উপলক্ষ্যে আগত অসংখ্য মানুষের মধ্যে যে সাজো সাজো রব, তার সঙ্গে মন্দিরের উজ্জ্বল রঙা সিঁড়িগুলি সঙ্গতিপূর্ণ বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।