এডিটার'স মেইলবক্স: ভারতীয় ভ্যাক্সিন নিয়ে বিতর্ক, পুলিশ নিয়ে প্রশ্ন
এডিটার'স মেইলবক্স: ভারতীয় ভ্যাক্সিন নিয়ে বিতর্ক, পুলিশ নিয়ে প্রশ্ন
বাংলাদেশে মন্ত্রীদের বক্তব্য আর সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দেখে মনে হয় সেখানে ভ্যাক্সিন নিয়ে চলছে টান টান উত্তেজনা। ভারত থেকে এ্যাস্ট্রা যেনেকা আর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাক্সিন কবে বাংলাদেশে আসবে, তা নিয়ে উদ্বেগ শুরু হয়েছে।
তবে ভ্যাক্সিন যখনই আসুক, অনেকের মনে ভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তা রয়েছে। যেমন লিখেছেন রংপুরের পীরগঞ্জ থেকে মুশফিকুর রহমান ওলিউল্লাহ:
''পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিভিন্ন খাত আজ দুর্নীতির শিকার । করোনা ভাইরাসের এই ভ্যাক্সিন নিয়ে বাংলাদেশে কোন ধরনের দুর্নীতি বা কেলেঙ্কারি যে হবে না ,তার নিশ্চয়তা দেয়া মুশকিল। এছাড়া বেশির ভাগ ভ্যাক্সিন যাবে ভিআইপিদের দখলে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সে যাই হোক,সাধারণ মানুষ বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলের মানুষ এই ভ্যাক্সিন স্বেচ্ছায় নিতে কতটা আগ্রহী হবে, সেটাও এখন ভেবে দেখার বিষয়।''
শুধু বাংলাদেশ নয় মি. ওলিউল্লাহ, অনেক দেশেই ভ্যাক্সিনের বিতরণ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে এবং ব্রিটেনের মত দেশেও অনেকে ভ্যাক্সিন নিতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন না। তবে অতীতে আমরা দেখেছি, বাংলাদেশে খুব কমই ভ্যাক্সিন বিরোধিতা দেখা যায়। বছরের পর বছর বাংলাদেশের সরকার শিশুদের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে টিকা দিয়ে আসছে এবং টিকা দান কর্মসূচিতে সমাজের সকল স্তরের মানুষের সমর্থন রয়েছে।
এ বিষয়ে আরো লিখেছেন খুলনার দাকোপ থেকে মুকুল সরদার:
''ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউট থেকে বাংলাদেশে করোনা ভ্যাক্সিন আনার জন্য যে চুক্তি হয়েছে, সেই চুক্তিটি নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। চুক্তিটি কি আসলেই জি টু জি চুক্তি, নাকি বাণিজ্যিক চুক্তি? জানুয়ারির ৫ তারিখে প্রচারিত অমিতাভ ভট্টশালীর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভারত থেকে বাংলাদেশে করোনার ভ্যাক্সিন রপ্তানির ক্ষেত্রে আর তেমন কোনো জটিলতা নেই। কিন্তু তারপরও এ প্রশ্নটি থেকে যায়, ভারত থেকে করোনা ভ্যাক্সিন আমদানি নিয়ে এই বিতর্ক কেন তৈরি হলো, এর দায়টি আসলে কার? শেষমেশ ভারত থেকে করোনার ভ্যাক্সিন বাংলাদেশে আসবে তো?''
চুক্তি যখন হয়েছে, তখন ভ্যাক্সিন তো আসারই কথা মি. সরদার। তবে চুক্তিটি দুই সরকারের মধ্যে, নাকি দুটি কোম্পানির মধ্যে, এই বিতর্কটা আমার কাছে অহেতুক মনে হয়। চুক্তিতে ভারত সরকারের কোন সাক্ষর নেই, অর্থাৎ এটা জি টু জি না, মানে দুই সরকারের মধ্যে নয়। চুক্তিটি হয়েছে তিন পক্ষের মধ্যে - সিরাম ইন্সটিটিউট, বেক্সিমকো ফারমা আর বাংলাদেশ সরকার।
এখন প্রশ্ন হল, সিরাম ইন্সটিটিউট, ভারত সরকারের চাহিদা মিটিয়ে কত শীঘ্রই বাংলাদেশে রফতানি করতে পারবে, এবং চুক্তি অনুযায়ী ছয় মাস ধরে প্রতি মাসে পঞ্চাশ লক্ষ ডোজ টিকা পাঠাতে পারবে কি না। আগামী মাসগুলোতে আরেকটি প্রশ্ন চলে আসবে, এবং সেটা হল শুধু একটি টিকার ওপর নির্ভর করা বুদ্ধিমানের কাজ কি না। সব দেশ একাধিক সূত্র থেকে টিকা সংগ্রহ করার জন্য তৎপর এবং হয়তো বাংলাদেশ সরকারও অন্যান্য টিকা উৎপাদনকারী দেশের সাথে আলোচনা শুরু করবে।
ভারত থেকে টিকা আমদানি প্রসঙ্গে আরো লিখেছেন বরিশাল সদর থেকে মোহাম্মদ সাইদুর রহমান:
''বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে এ'মাসের চার তারিখে প্রকাশিত "ভারত বায়োটেকের টিকার 'তড়িঘড়ি অনুমোদন' নিয়ে তীব্র উদ্বেগ, সমালোচনা" শীর্ষক প্রতিবেদনটি পড়লাম। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ভারতের একটি কোম্পানির তৈরি 'কোভ্যাক্সিন' নামের করোনাভাইরাসের টিকা ব্যবহারে ট্রায়াল সম্পূর্ণ হবার আগেই যেভাবে সরকারি অনুমোদন দেয়া হয়েছে - তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
''স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে এর অনুমোদন দেবার প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়ো করা হয়েছে। অথচ এ টিকা আমদানি করার জন্য বাংলাদেশ সরকার খুব তড়িঘড়ি করছে। আমাদের দেশের অনেক নাগরিক এমনিতেই ভারত সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে থাকে। তাহলে এত উদ্বেগ, আতঙ্ক ও সমালোচনার পর এ টিকা আমাদের দেশে কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে? এটা কতটাই বা কার্যকর হবে?''
কোভ্যাক্সিন নামের টিকা নিয়ে উদ্বেগ মোটামুটি সবাই জানে, মি. রহমান। তবে আমরা যতদূর জানি, বাংলাদেশ সরকার এখনো কোভ্যাক্সিন আমদানি করার ব্যাপারে কোন উদ্যোগ নেয়নি। তারা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং এ্যাস্ট্রা-যেনেকা কোম্পানি উদ্ভাবিত টিকা ভারত থেকে আমদানি করবে, কারণ সেই টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়াল ভারতে হয়েছে এবং ভারতীয় কোম্পানি সিরাম ইন্সটিটিউট সেই টিকা উৎপাদন করবে। তবে কোভ্যাক্সিন আমদানি নিয়ে কোন পদক্ষেপ যদি বাংলাদেশ সরকার সহসা নেয়, তাহলে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাবে না।
টিকা নিয়ে ছোট একটি প্রশ্ন করেছেন পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ থেকে দীপক চক্রবর্তী:
''আমরা অনেক দিন থেকে শুনে আসছি,করোনাভাইরাস টিকা আসবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো যে, টিকা আগে শহরে মানুষকে দেওয়া হবে, নাকি গ্রামের মানুষকে দেওয়া হবে? নাকি যারা করোনা রুগী তাদেরকে দেওয়া হবে?''
আমরা যতদূর জানতে পেরেছি মি. চক্রবর্তী, বাংলাদেশ সরকার শহর এবং গ্রামে এক যোগে টিকা কর্মসূচি চালানোর পরিকল্পনা করছে। অগ্রাধিকার তালিকা হচ্ছে পেশার ভিত্তিতে। তবে সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, যারা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে আছেন বা যাদের মাধ্যমে সংক্রমণ হতে পারে বা যাদের অন্যান্য জটিল রোগ আছে, তাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
এবারে ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই। চিঠি-পত্রের আসর কি অতি মাত্রায় সাময়িক প্রসঙ্গের অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে? তাই মনে করছেন মোহাম্মদ রাসেল শিকদার, যিনি লিখেছেন মাদারীপুরের কেন্দুয়া থেকে:
''আগে প্রীতিভাজনেসুতে লক্ষ করতাম বিবিসি সংশ্লিষ্ট কোন প্রশ্ন ছাড়া অন্য কোন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হতো না। কিন্তু সম্প্রতি প্রীতিভাজনেসুর আসরের প্রথম দিকে বেশ খানিকটা সময় জুড়ে বিবিসির সাথে সম্পর্কিত নয় এমন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হচ্ছে। খেয়াল করলে দেখা যায় ঐ সব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সম্পাদক পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। তাই আমার অনুরোধ থাকবে আগের মতো প্রীতিভাজনেসু অনুষ্ঠান শুধু বিবিসি এবং অনুষ্ঠান সম্পর্কিত প্রশ্ন দিয়ে সাজানো হোক। এতে বিবিসি সম্পর্কে শ্রোতাদের জানার পরিধি বাড়বে।''
আপনার কথা আমি অর্ধেক মানলাম আর অর্ধেক মানলাম না, মি. শিকদার। আপনি ঠিকই বলেছেন, প্রীতিভাজনেসুতে সাময়িক প্রসঙ্গ নিয়ে অনেক চিঠি থাকে, কিন্তু সেটা ইদানিং না, অনেক বছর ধরে সেরকমই হয়ে আসছে। কিন্তু সেসব চিঠি বিবিসি সম্পর্কিত না, সেকথা মানা যায় না, কারণ বিবিসি মানেই সংবাদ এবং সাময়িক প্রসঙ্গ। চিঠিপত্রের আসরে শ্রোতা-পাঠক বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্য করবেন, আরেকটু জানতে চাইবেন, সেটাই স্বাভাবিক।
আর বিবিসির অনুষ্ঠান নিয়ে প্রশ্ন - যেমন আপনার এই চিঠি - কখনোই ফেলে দেয়া হয় না। বরং, তাদের জন্য জায়গা করতে অন্য চিঠি ছাড়তে হয়। তবে অপ্রিয় হলেও সত্য, প্রীতিভাজনেসুতে যদি শুধুমাত্র বিবিসি নিয়ে প্রশ্ন আর মন্তব্য রাখি, তাহলে এই অনুষ্ঠান তিন-চার মিনিটের বেশি করার প্রয়োজন থাকবে না, এমনকি কোন কোন সপ্তাহে অনুষ্ঠান না করলেও চলবে। আপনি নিশ্চয়ই সেটা চাইছেন না?
আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত একটি প্রতিবেদনকে অসত্য বলে লিখেছেন পঞ্চগড়ের বোদা থেকে রতন রঞ্জন রায়:
''সপ্তাহ খানেক আগে আপনাদের এক প্রতিবেদনে জানতে পারলাম কোলকাতার টিভি চ্যানেল জি বাংলায় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের অধিকার নিয়ে তৈরি বিশেষ ধারাবাহিক অনুষ্ঠান "ফিরকি" আর প্রচারিত হবেনা। প্রতিবেদনে প্রচারিত না হওয়ার বিভিন্ন কারণ ব্যাখ্যা করা হলো। শুনে খুব খারাপই লাগলো বিশেষ করে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য।
''আপনাদের প্রতিবেদন শুনে পরবর্তীতে সময় মত চোখ রাখলাম জি বাংলার পর্দায় যথারীতি ফিরকি প্রচারিত হলো। ভাবলাম ২/১ দিনে হয়তোবা প্রচার বন্ধ হবে। কিন্তু না, এর এক সপ্তাহ পরও ফিরকি প্রচারিত হচ্ছে। আমার প্রশ্ন হলো, আপনারা কী শুনে এ রকম একটি তথ্য বিভ্রাট প্রতিবেদন তৈরি করলেন এবং তা প্রচারও করলেন?''
আপনি যে প্রতিবেদনের কথা বলছেন মি. রায়, সেটা ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখে প্রকাশ করা হয়েছিল। সেখানে দেখবেন, জি বাংলার উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং ফিরকি নাটকের প্রযোজক এবং অভিনেতাদের সাথে কথা বলেই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। সিরিয়াল বন্ধ হবার তথ্য জি বাংলার কর্মকর্তাদের মুখ থেকে শোনা।
তবে আপনি হয়তো খেয়াল করেছেন, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে জি বাংলা এই সিরিয়াল বন্ধ করে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবং এটা বন্ধ হতে যাচ্ছে। সেখানে বলা হয়নি যে ফিরকি ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। পার্থক্যটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ, জি বাংলা বলেছে ফিরকি-র কাহিনী শেষ হয়েছে তাই সিরিয়াল শেষ করা হচ্ছে। আপনি হয়তো দেখতে পেয়েছেন কারণ এখনো ধারণকৃত সব পর্ব প্রচারিত হয়নি।
বাংলাদেশে পুলিশের হেফাজতে মানুষের মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ দীর্ঘ দিনের, এবং সম্প্রতি আবারো বিষয়টি জনসমক্ষে এসেছে। সেরকম সাম্প্রতিক একটি ঘটনা নিয়ে লিখেছেন সাভার সরকারি কলেজ থেকে মনিরুল হক রনি:
''পুলিশের নির্যাতনে সিলেটের রায়হান হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আবারো বরিশালে রেজাউল করিম নামে এক যুবক হত্যার ঘটনা পুলিশের অপেশাদারিত্ব ও আইনের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল না থাকার ইঙ্গিত বহন করে। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ আনলেও, পুলিশ বরাবরই এগুলোকে অসুস্থতাজনিত কিংবা অপমৃত্যু বলে দায় এড়াতে চায়।
''কিন্তু এসব মৃত্যুর পিছনে যে পুলিশের নির্যাতন বহুলাংশে দায়ী, তা রায়হান হত্যার তদন্তের মাধ্যমে কিছুটা উদঘাটিত হয়েছে। সরকারের উচিৎ নিরপেক্ষতার সাথে এ ধরনের প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যসহ ঘটনার সাথে জড়িত প্রত্যেকের শাস্তি নিশ্চিত করা।''
সব হত্যাকাণ্ডরই নিরপেক্ষ তদন্ত এবং আইন অনুযায়ী বিচার হওয়া উচিত মি. হক। কিন্তু অনেক দেশেই দেখা যায়, পুলিশকে অনেক ছাড় দেয়া হয়। সেখানে যুক্তি দেখানো হয় যে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে পুলিশ ঝুঁকি নিয়ে কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে, যার ফলে সমাজে অপরাধ বেড়ে যাবে। অনেকেই অবশ্য এই যুক্তিকে অত্যন্ত খোঁড়া হিসেবেই দেখেন, এবং বলেন যে ছাড় দেয়া মানেই হল পুলিশকে আইনের ঊর্ধ্বে বসানো, যেটা আরো বেশি বিপজ্জনক।
একই বিষয়ে লিখেছেন ঢাকার ধানমন্ডি থেকে শামীম উদ্দিন শ্যামল:
''পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগ নতুন নয়; এটি একটি পুরাতন ও দীর্ঘদিনের অভিযোগ। এসব ঘটনার আগে যখন পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর মামলার রায়ে পুলিশকে শাস্তি দেয়া হয়, তখন কিছুটা আশার আলো আমরা দেখেছিলাম। কিন্তু এসব ঘটনা এবং সিনহা হত্যার ঘটনা আমাদের আতঙ্কিত করে তোলে। পুলিশ দেখে আতঙ্কিত হওয়া কিংবা পুলিশ বা থানাকে নিরাপদ স্থান না ভাবার একমাত্র কারণ এই ঘটনাগুলো। সে কারণে ব্যক্তিগতভাবে মানুষ পুলিশকে এড়িয়ে চলে। সরকার/পুলিশ যতই এ বাহিনীকে জনবান্ধব করে তোলার চেষ্টা করুক না কেন, তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হবে এ সব কারণে।''
আসলেই, যে লোক কোন অপরাধ করে নি, সে কেন পুলিশ দেখে আতঙ্কিত হবে? পুলিশের থানায় মানুষ যাবে নিরাপত্তার দাবি নিয়ে, নির্যাতনের শিকার হতে না। আপনি ঠিকই বলেছেন মি. শামীম উদ্দিন, গত বছর ৯ই সেপ্টেম্বর যখন হেফাজতে হত্যার জন্য পুলিশ অফিসারের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়, তখন অনেকে ভেবেছিলেন হয়তো এখন এই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এখন মনে হচ্ছে ২০১৩ সালের 'নির্যাতন এবং পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন' নিয়মিত প্রয়োগের মাধ্যমে হয়তো এই সব ঘটনা কমিয়ে আনা যাবে।
নতুন খ্রিস্টাব্দকে স্বাগত জানানোর জন্য ডিসেম্বর মাসের ৩১ তারিখ রাতে যে আনন্দ-উৎসব হয়, সেটা বাংলাদেশে থার্টি ফার্স্ট নাইট হিসেবে পরিচিত। এবারের উদযাপনকে ভাল চোখে দেখছেন না ঝিনাইদহের কাজী সাঈদ:
''রাজধানী ঢাকায় থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঘরের বাইরে উন্মুক্ত স্থানে কোন আয়োজনে কারো অংশ নেয়ার সুযোগ ছিলো না কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে। প্রশ্ন হল, বাড়ির ছাদ বা বড় বড় পাঁচ তারকা হোটেল গুলো কি নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে ছিল? যদি তাই না হয়, তাহলে এত ফানুস, এত আয়োজন সম্ভব হল কী করে? যারা ২০২০ সাল থেকে বেরিয়ে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচতে চাইছেন, তাদের কি এতটুকু বোধশক্তি নেই যে করোনার নতুন স্ট্রেইন নিয়ে ব্রিটেনের মত রাষ্ট্র আবার বিপর্যয়ের মধ্যে? শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে বন্ধ রয়েছে করোনার ভয়াবহতা এড়াতে, সেখানে এমন বর্ষ বিলাস কতটা যুক্তিগ্রাহ্য?''
আপনি ঠিকই বলেছেন মি. সাঈদ, করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ ব্রিটেনের মত অনেক দেশকে তছনছ করে দিচ্ছে। এবার পশ্চিমা বিশ্বে নিউ ইয়ার উদযাপন প্রায় হয়নি বললেই চলে। বড় বড় শহরে সীমিত আকারে আতশবাজি পোড়ানো হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কোন দর্শক সমাগম করতে দেয়া হয়নি। এমনকি মানুষের বাসার ভেতরে যাতে কোন পার্টি না হয়, সেজন্য একাধিক পরিবারের মেলামেশাও নিষিদ্ধ ছিল।
তবে বাংলাদেশে তো করোনাভাইরাসের আগেও থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে নানা রকম নিষেধাজ্ঞা দেয়া থাকতো। সেটা করোনাভাইরাসের সাথে কোন সম্পর্ক ছিল না। আমি যত দূর জানি, নিউ ইয়ার উপলক্ষে কোথাও কোন বড় জন সমাগম হয়নি। তবে বিভিন্ন পাড়ায় মহল্লায় বিল্ডিং এর ছাদ থেকে আতশবাজি পোড়ানো হয়েছে, ফানুস উড়ানো হয়েছে। কিন্তু সেগুলো যেহেতু আবাসিক ভবনের ছাদ থেকে হয়েছে, তাই এমন হতে পারে যে সেখানে শুধুমাত্র ঐ বিল্ডিং এর বাসিন্দারাই ছিলেন, যারা প্রতি দিনই একে অপরের সাথে মেলা-মেশা করেন।
আবার ফিরে যাচ্ছি আমাদের অনুষ্ঠানের বিষয়ে, লিখেছেন রাজশাহীর গোদাগাড়ী থেকে মশিউর রহমান মিনু:
''বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকার পর রাত ১০.৩০ এর অধিবেশনটা আবার চালু হয়েছিল কিন্তু সকালের অধিবেশন বন্ধ করে। বিবিসি এতো বড় একটা সংবাদ মাধ্যম তবুও সকালে একটা অধিবেশন রাখতে পারে না। আমার মত যারা আছে সকালে খবর শুনতে অভ্যস্ত তাদের কথা বিবেচনা করে হলেও সকাল সাড়ে সাতটার অধিবেশন আবার চালু করা হোক। নাকি বরাবরের মতো বিবিসি বলবে শ্রোতা কম শুনে সকালে বা আমাদের লোকবল এর অভাব? আসলে সকালে উঠে বিবিসি বাংলার খবর না শুনা যে কতটা অপূর্ণতা তা একমাত্র সকালে যারা উঠেন তারা জানেন।''
না- মি. রহমান, লোকবলের কথা আমি বলবো না। আমাদের লোকবল আমরা ভিন্ন দিকে নিয়োজিত করছি। সকালের রেডিও থেকে ডিজিটাল মাধ্যমগুলোর দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিবিসি সর্বত্র একটি বড় মাপের দিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখন যেখানেই সম্ভব ডিজিটাল মাধ্যমকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তবে বাংলাদেশে আমরা এখনো আমাদের রেডিও এবং টেলিভিশন কার্যক্রম অব্যাহত রাখছি।
এবার কিছু চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করা যাক:
এম. আব্দুর রাজ্জাক, আদম দীঘি, বগুড়া।
গোলাম মুকতাদির বাপ্পি, ঢাকা।
আহসান হাবিব রাজু, সুকানদিঘি, লালমনিরহাট।
মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, গেণ্ডারিয়া, ঢাকা।
দিপায়ন মন্ডল, সাতক্ষিরা।
মোহাম্মদ শিমুল বিল্লাল বাপ্পী, কপিলমুনি, খুলনা।